পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সৈন্যসহ ফিরে গেল ৩৩০

* শান্ত ঘুমধুম-তুমব্রু ও উখিয়া সীমান্ত * শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিন সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গোলাগুলি * আজ পুলিশি হেফাজতে নেয়া হবে অস্ত্রধারী রোহিঙ্গাদের

প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এ এইচ সেলিম উল্লাহ, কক্সবাজার

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতের জেরে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সেনাসহ ৩৩০ জন স্বদেশের পথে যাত্রা দিয়েছেন। কক্সবাজারের ইনানীতে আসা মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বিজিপির কর্নেল মিও থুরা নউংয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলটি এই ৩৩০ জনকে গ্রহণ করে মিয়ানমারের নৌ বাহিনীর জাহাজযোগে যাত্রা দেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম-তুমব্রু ও উখিয়া সীমান্ত শান্ত থাকলেও টেকনাফের

শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিন সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে অস্ত্রসহ বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারি ২৩ রোহিঙ্গার মধ্যে ২২ জনকে আজ শুক্রবার তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) মো. রাসেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

যেভাবে হয়েছে হস্তান্তর প্রক্রিয়া : বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সেনা সহ ৩৩০ জনকে মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়েছে বিজিবির অধিনে।

বিজিবির সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত ২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তের ওপারে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সংঘর্ষ শুরু হয়। এর জের ধরে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন বিজিপিসহ ৩৩০ জন। যার মধ্যে ৩০২ জন বিজিপি সদস্য, চারজন বিজিপি পরিবারের সদস্য, দুইজন সেনাসদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য ও চারজন বেসামরিক নাগরিক ছিলেন। তাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশের তরফে মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা তাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়। তিনি বলেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে বিজিবির রামু সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মেহেদী হোসাইন কবীরের নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও পুলিশের প্রতিনিধির সমন্বয়ে ৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রত্যাবাসন কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় করে গতকাল হস্তান্তর প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়েছে। এজন্য গতকাল ভোরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত ও টেকনাফ থেকে বিজিবির কড়া পাহারায় কক্সবাজারের ইনানী নৌ-বাহিনীর জেটিঘাটে এই ৩৩০ জনকে আনা হয়। যেখানে সকাল ৮টা থেকে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমারবিষয়ক পরিচালক মো. রাকিবুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব মো. রাশেদ হোসেন চৌধুরী, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়ে, বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান, পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সকাল সাড়ে ৯ টার কিছুক্ষণ পরে কোস্টগার্ডের জাহাজ থেকে ইনানী জেটিতে আসেন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বিজিপির কর্ণেল মিও থুরা নউংয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি। যেখানে পৌঁছার পর উভয় রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের মধ্যে লিখিত কাগজে স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে শুরু হয় হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা। বেলা ১১টার দিকে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী আনুষ্ঠানিকভাবে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়ের সামনেই ৩৩০ সদস্যকে বিজিপির কর্নেল মিও থুরা নউংয়ের হাতে হস্তান্তর করেন। এরপর একে একে ১৬৫ জনকে জেটি দিয়ে তোলা হয় সেন্টমার্টিন নৌ রুটে চলাচলকারি পর্যটকবাহী জাহাজ কর্ণফুলিতে। দুপুর ১২টার দিকে জাহাজটি ১৬৫ জনকে নিয়ে বাংলাদেশের সমুদ্র সীমান্ত্রে অপেক্ষারত মিয়ানমারের নৌ বাহিনীর জাহাজে পৌঁছে দেয়। পরে ফিরে ৪টার দিকে দ্বিতীয় দফায় আরো ১৬৫ জনকে নিয়ে পৌঁছানো হয় মিয়ানমারের জাহাজে। তার মিয়ানমারের জাহাজটি যাত্রা দেয় মিয়ানমারের রাজধানীর দিকে।

এ সময় বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জান্তা সরকারের বিভিন্ন বাহিনী ও সে দেশের সশস্ত্র বিদ্রোহীগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। যার প্রভাব বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের এপারে এসে পড়ে। এতে পালিয়ে আশ্রয় নেয়া ৩৩০ জনকে বিজিবির পক্ষে সর্বোচ্চ সহায়তা ও সহযোগিদা প্রদান করা হয়েছে। আহতদের দেয়া হয়েছে চিকিৎসা। উভয় দেশের আন্তরিকতায় এবং নানা মহলের সহযোগিতায় এদের মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হল। এর জন্য তিনি সাংবাদিক সহ সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধৈর্য ধারণ করে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বজায় রেখে বিজিবিকে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করার নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। রোহিঙ্গাসহ কোনো প্রকার অনুপ্রবেশ করতে দেয়া হবে না। বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়ে বাংলাদেশ সরকার ও বিজিবির প্রতি কতৃজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, এই প্রক্রিয়াটির মধ্যদিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আন্তরিক সম্পর্ক আরো উন্নত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহীগোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সংঘর্ষ চলছে। ৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত তিনটা থেকে দুই পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টারশেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছে। পরদিন নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলী গ্রামের একটি রান্নাঘরের ওপর মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলের আঘাতে দুজন নিহত হন। নিহত দুজনের মধ্যে একজন বাংলাদেশি নারী, অন্যজন রোহিঙ্গা পুরুষ।

অস্ত্রসহ বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারি ২৩ রোহিঙ্গার মধ্যে ২২ জনকে আজ শুক্রবার তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হবে। গতকাল সন্ধ্যায় কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) মো. রাসেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে গত সোমবার কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গ্যা শুনানী শেষে ২২ জনের তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। গ্রেপ্তারের পর কারাগারে থাকা মো. সাদেক নামের এক রোহিঙ্গা অসুস্থ হওয়ায় তার রিমান্ডের অনুমতি প্রদান করেননি বিচারক।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উখিয়ার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নাছির উদ্দিন মজুমদার জানিয়েছেন, বিজিবির ৩৪ ব্যাটালিয়নের পালংখালী বিওপির নায়েব সুবেদার মো. শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে দায়ের করা অস্ত্র মামলায় ২৩ জনকে গত শনিবার বিকাল ৩টার দিকে আদালতে আনা হয়েছিল। এ সময় আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হলেও রিমান্ড শুনানি হয়েছে গত সোমবার দুপুরে।

তিনি জানান, মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশকালে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার এই ২৩ জন সকলেই রোহিঙ্গা, যারা উখিয়ার বালুখালী ও কুতুপালংয়ের বিভিন্ন ক্যাম্পের বাসিন্দা। স্বাভাবিক কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছেড়ে এসব রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের যাওয়ার কথা না। কিন্তু কী কারণে মিয়ানমারে গেল আর তাদের হাতে অস্ত্র কেন- এমন প্রশ্নের উত্তর পাওয়া জরুরি। রিমান্ডে এসব প্রশ্নের উত্তর বের করার চেষ্টা করা হবে।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সংঘাতের মধ্যে পালিয়ে আসা বিজিপি সদস্যের পাশাপাশি অস্ত্রধারী এসব রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছিল। পরে ৯ ফেব্রুয়ারি বিজিবি বাদি হয়ে অস্ত্র আইনে মামলা করে এদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

বিজিবির ৩৪ ব্যাটালিয়নের পালংখালী বিওপির নায়েব সুবেদার মো. শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে দায়ের করা অস্ত্র মামলার এজাহারে ২৩ জনের নাম, ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে। এজাহারে উল্লেখিত তথ্য মতে গ্রেপ্তার ২৩ জন হলেন- উখিয়ার বালুখালী ৮ নম্বর ক্যাম্পের মৃত কবির আহমদের ছেলে মো. হোসেন আহমদ (৩০), একই ক্যাম্পের মো. ইউনুসের ছেলে মো. রফিক (২৩), আ. রাজ্জাকের ছেলে আয়াতুল্লাহ (৩০), ৯ নম্বর ক্যাম্পের মো. রফিকের ছেলে মো. জুনাইদ (১৯), একই ক্যাম্পের নুর কালামের ছেলে মো. হারুন (২৩), সমসের আলমের ছেলে মো. কায়সার (১৯), রশিদ আহমেদের ছেলে মো. সাবের (১৯), ১০ নম্বর ক্যাম্পের আবদুল্লাহর ছেলে ওসামা (১৯), একই ক্যাম্পের জাফর আলমের ছেলে ওমর ফারুক (১৯), মো. তোহার ছেলে মো. সাদেক (১৯), মকবুল আহমদের ছেলে হারুন অর রশিদ (২৪), হামিদ হোসেনের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত (১৯), দিল মোহাম্মদের ছেলে মো. ইসমাইল (১৯), মো. হোসেনের ছেলে মো. রহিম (১৯), ১১ নম্বর ক্যাম্পের আতা উল্লাহর ছেলে নজু মোল্লা (৩৮), ১৫ নম্বর ক্যাম্পের মো. সৈয়দের ছেলে সৈয়দ উল্লাহ (১৯), একই ক্যাম্পের দিল মোহাম্মদের ছেলে হাফেজ আহমেদ (১৯), ২০ নম্বর ক্যাম্পের মো. রশিদের ছেলে মো. জোবায়ের (১৯), কুতুপালং এলাকার ৬ নম্বর ক্যাম্পের ইউসুফের ছেলে আব্দুল্লাহ (২০), একই এলাকার ৩ নম্বর ক্যাম্পের আবুল হাসেমের ছেলে এনামুল হাসান (২২), ২ ক্যাম্পের ইমাম হোসেনের ছেলে মো. রফিক (২৪), একই ক্যাম্পের মৃত আবুল কালামের ছেলে সৈয়দুল ইসলাম (২৪), ৭ নম্বর ক্যাম্পের মৃত মো. জলিলের ছেলে মো. আরমান (২১)।

এ ঘটনায় উদ্ধার হয়েছে ১২টি অস্ত্র। যেখানে রয়েছে, এসএমজি পাঁচটি, জি-৩ রাইফেল একটি, পিস্তল দুটি, রিভলভার চারটি। গুলির মধ্যে রয়েছে এসএমজি গুলি ১৯৮ রাউন্ড, এমজি গুলি ৯৮ রাউন্ড, রাইফেলের গুলি ২৭৬ রাউন্ড, জি-৩ রাইফেলের গুলি ১০৩ রাউন্ড, পিস্তলের গুলি ১৯৩ রাউন্ড, পিস্তলের ব্ল্যাংক কার্তুজ ২৫ রাউন্ড, রাইফেলের গ্রেনেড ফিউজ ৫ রাউন্ড, এসএমজি ম্যাগাজিন ছয়টি, এলএমজি ম্যাগাজিন চারটি, জি-৩ ম্যাগাজিন একটি, পিস্তল ম্যাগাজিন দুটি।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে এবার মর্টারশেল ও গুলির বিকট শব্দ শোনা গেছে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিনে। গতকাল ভোর ৬টা থেকে শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির শব্দ শোনেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বেলা ১১টা পর্যন্ত গুলির শব্দ পাওয়া গেছে।

শাহপরীর দ্বীপ এলাকার বাসিন্দা সালাউদ্দীন বলেন, গতকাল সীমান্তে থেমে থেমে গোলাগুলি হয়েছে। অন্যদিনের তুলনায় বেশি ছিল। এতে সীমান্তের জেলেরা মর্টারশেল ও গুলি আতঙ্কে ভুগছেন।

এ বিষয়ে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের ইউপি সদস্য আবদুস বলেন, সীমান্তে সকাল থেকে খুব বেশি গুলির শব্দ পাচ্ছি। অনেক সময় বৃষ্টির মতো গুলির শব্দ হচ্ছে। সীমান্তের ওপারে আগুনের ধোঁয়াও দেখা যাচ্ছে।

এদিকে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের বাসিন্দারা ভোর থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মর্টার শেল ও গুলির শব্দ শুনেছেন। সেন্টমার্টিন দ্বীপে আবাসিক হোটেলের পরিচালক ইসহাক বলেন, সকাল থেকে ভারী মর্টার শেল ও গুলিবর্ষণ হচ্ছে। এতে দ্বীপে ভবনগুলো কাঁপছে। এমন শব্দ আগে কখনো পাইনি।

শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা গৃহিণী রহিমা খাতুন বলেন, ফজরের নামাজের পর থেকে গোলাগুলির শব্দ শুনেছি। প্রথমে বজ্রপাতের শব্দের মতো মনে হয়েছিল। পরে দেখি গোলাগুলি হচ্ছে। ভয় পেয়ে আমরা ঘরে ঢুকে গিয়েছিলাম।

দ্বীপের কৃষক মোহাম্মদ আমিন বলেন, ভোরে আমি নাফ নদের পাশে খেতে কাজ করতে যাই। ওই সময় মিয়ানমার থেকে গুলির শব্দ শুনি। ঘণ্টাখানেক সময়ে অন্তত ১০০’র বেশি গুলির শব্দ শুনেছি। এর আগে আমাদের সীমান্ত থেকে এভাবে গুলির শব্দ শোনা যায়নি।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা আব্দুল আমিন বলেন, এই প্রথমবার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘর্ষে গোলাগুলি শুনলাম। অনেক ভারী শব্দ। দ্বীপের সাধারণ মানুষ আতঙ্কে রয়েছে।

এ বিষয়ে টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তে মিয়ানমারের গোলাগুলির খবর পেয়েছি। সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে। কোনো অনুপ্রবেশকারীকে ঢুকতে দেয়া হবে না।