জয়পুরহাটে হত্যা মামলায় মা-ছেলেসহ পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  জয়পুরহাট প্রতিনিধি

জেলার পাঁচবিবি উপজেলার দরগাপাড়া এলাকায় স্কুলছাত্র আবু হোসাইন হত্যা মামলার রায়ে মা-ছেলেসহ পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড ও একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে জয়পুরহাটের অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।

জয়পুরহাট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নৃপেন্দ্র নাথ মণ্ডল পিপি জানান, এসএসসি পরীক্ষার্থী স্কুলছাত্র আবু হোসাইন (১৪) হত্যা মামলায় ১৪ বছর পর রায় ঘোষণা করা হলো। এ সময় আদলতে পাঁচ আসামির মধ্যে একজন আসামির অনুপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জেলার পাঁচবিবি উপজেলার দরগাপাড়া গ্রামের আবু রায়হানের ছেলে রাফিউল (৩২), আবু রায়হানের স্ত্রী আমিনা বেগম (৪৯), কোকতারা গ্রামের নায়েব আলীর ছেলে মোজাফফর হোসেন (৪৯) রুস্তম আলী ওরফে টুরার ছেলে গোলাম রব্বানী (৩৪) ও স্ত্রী সাহিদা বেগম (৪৮)। সাজা প্রাপ্তদের মধ্যে আমিনা বেগম পলাতক রয়েছেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১০ সালের ২৫ মার্চ সকাল ৯টায় পাঁচবিবি উপজেলার দরগাপাড়া গ্রামে আবু তাহের তার পুকুর পাড়ে খড় তুলছিলেন, এ সময় রব্বানী, আরিফুল, রাফেউল, রোস্তম আলী, মোস্তফা, ছাইদার রহমান, আমিনা বেগম ও সাহিদা বেগম একদলবদ্ধ হয়ে হাতে লাঠি ও লোহার শাবল দিয়ে পূর্বশত্রুতার জের ধরে মারপিট করে জখম করে। এ সময় আবু তাহেরের ছেলে আবু হোসাইন এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্য বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখতে পায় তার পিতাকে মারপিট করছে। আবু হোসাইন দৌড়ে পিতাকে রক্ষার্থে এগিয়ে আসলে তাকেও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে পাঁচববিবি পরে জয়পুরহাট ও বগুড়া থেকে ঢাকা ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে ২০১০ সালের ৩ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবু হোসাইনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় নিহতের পিতা আবু তাহের বাদী হয়ে ২০১০ সালের ৩ এপ্রিল পাঁচবিবি থানায় নয়জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মুমিনুল হক ২০১০ সালর ৩০ জুলাই আদালতে সাতজনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলা চলাকালীন দুই আসামির মৃত্যু হয়। দীর্ঘ শুনানিতে আদালত এ মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গতকাল সোমবার দুপুরে আদালতের বিচারক পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও প্রত্যেককের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড প্রদান করেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৬৮(১) ধারা মোতাবেক মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিদের প্রত্যেকের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত গলায় ফাঁসি দিয়ে ঝুলিয়ে রেখে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন আদালত। সরকার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল পিপি, গোকুল চন্দ্র মন্ডল, শামীমুল ইমাম এপিপি ও খাজা শামসুল ইসলাম বুলবুল এবং আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান, অ্যাডভোকেট আহসান হাবিব চপল ও অ্যাডভোকেট দিলীপ কুমার ঘোষ।