কুমিল্লা সিটি নির্বাচন

শেষ মুহূর্তে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি নিয়ে ভোটারের দ্বারে প্রার্থীরা

প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নজরুল ইসলাম দুলাল, কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন আগামীকাল। শেষ মুহূর্তে এসে এ নির্বাচনকে ঘিরে প্রচার-প্রচারণায় প্রার্থীদের মুখে মুখে নগর উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনভর তারা গণসংযোগের পাশাপাশি উঠান বৈঠক করে ভোটারদের কাছে টানার প্রাণান্ত চেষ্টা করেন। জনগণের, নগরীর উন্নয়নের নানা আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে প্রার্থীরা ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে প্রচারপত্র বিলিসহ নিজ নিজ প্রতীকে ভোট চান। স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে এলাকার সমস্যাগুলো শুনে সেসব সমাধানেরও জোরালো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মেয়র প্রার্থীদের সমর্থনে তাদের কর্মীরাও পৃথকভাবে পাড়া-মহল্লা চষে বেড়ান। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে সব প্রার্থীই বিপুল ভোটে জয়ের আশা করছেন।

গতকাল নগর আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ডা. তাহসিন বাহার সূচনা নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকায় গণসংযোগ ও দুইটি স্থানে উঠান বৈঠক করেন। এসব কর্মসূচিতে তিনি ভোটারদের নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দেন। নগরীর উন্নয়ন নিয়ে তার রয়েছে কিছু আলাদা পরিকল্পনা। তিনি এ নগরকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে সাজাতে চান। নির্বাচিত হলে তিনি রাস্তাঘাট, ড্রেনেজের উন্নয়ন থেকে শুরু করে যানজট, জলাবদ্ধতা নিরসন, সুপেয় পানির সংকট দূর, গ্রীণ-ক্লিন সিটি গড়ে তোলাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে এই নগরের উন্নয়নে কোনো ছাড় দেব না। বাস প্রতীকের এই প্রার্থী ডা. তাহসিন দুর্নীতিমুক্ত, বাসযোগ্য, আধুনিক ও স্মার্ট নগর গড়ার প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি আগামীকাল সকালে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে বাস প্রতীকে ভোট দিয়ে উন্নয়ন বাসের যাত্রী হওয়ার আহ্বান জানান ভোটারদের। এ সময় তার সাথে নানা শ্রেণিপেশার বিপুলসংখ্যক নারী-পুরুষের সমাগম ঘটে। এতে মহানগর আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।

টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী সাবেক মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সব উন্নয়নকাজ সমাপ্ত করার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। প্রার্থী মনিরুল হক বলেন, আমি এখানে রাজনীতি করি। এখানেই রাজনীতি করে বড় হয়েছি। এই নগরীর জনগণের সঙ্গেই আমার চলাফেরা। তাই আমি কে নগরবাসী সকলেই জানেন, আমাকে চেনেন। দুইবার মেয়র নির্বাচিত হয়ে নগরের উন্নয়নে অনেক কাজ করেছি, এবার নির্বাচিত হলে এই নগরের উন্নয়নে কোনো ছাড় দেব না।

ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার আধুনিকতার ছোঁয়ায় কুমিল্লাকে নতুন রূপ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি নগরের উন্নয়ন নিয়ে তার কিছু আলাদা পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি এ নগরকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে সাজাতে চান। জনগণের উন্নয়নের জন্য মাঠে নেমেছেন। নির্বাচিত হলে এই শহরকে বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে সব ধরনের উদ্যোগ নেবেন বলে ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, আমরা রাজনীতি করি মানুষের কল্যাণের জন্য, মেয়র হতে চাই মানুষের সেবা করার জন্য। একটা দায়িত্ব পেলে এবং জনগণ যদি আমাকে নির্বাচিত করে তাহলে ব্যাপক আকারে মানুষের জন্য কাজ করতে পারব। তিনি বলেন, কুমিল্লা নগরবাসীকে দুর্নীতি, নির্যাতন ও শোষণের হাত থেকে রক্ষা করতেই আমার নির্বাচন করা। গণসংযোগে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ও সাড়া আমাকে আরও অনুপ্রাণিত করছে। তিনি নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করেন।

হাতি প্রতীকের প্রার্থী নূর উর-রহমান মাহমুদ তানিম বেকার যুবক-তরুণদের কর্মসংস্থান ও জীবনমান উন্নয়নে নানা প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরছেন। তিনি নির্বাচিত হলে সিটি করপোরেশনকে দুর্নীতিমুক্ত করবেন, নগর ভবনকে দলীয় কার্যালয় বানাবেন না, জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসন করবেন, করের টাকা সততাণ্ডনিষ্ঠার সঙ্গে উন্নয়নকাজে ব্যয় করবেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সব পর্যায়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন বলে ভোটারদের প্রতিশ্রুত দেন। তিনি নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করেন। এ সময় তিনি বেকার তরুণদের কর্মসংস্থান ও জীবনমান উন্নয়নে নানা পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে নগরবাসীর সব সমস্যা সমাধানেরও প্রতিশ্রুতি দেন।