মহিলা ও শিশু প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি বলেছেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ পাঁচজন জয়িতাকে সম্মাননা দেওয়া হবে। গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে নারী দিবস নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক ও মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান ও তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে নারী সমাজের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, নারী অধিকার রক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ও সমতা সৃষ্টির জন্য দিবসটির গুরুত্ব অপরিসীম। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনা ও নেতৃত্বে দেশে নারীর ক্ষমতায়নের শুরু হয়। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে নারীর উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন ও সমণ্ডঅধিকার প্রতিষ্ঠায় সময়োপযোগী বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা ও আত্মকর্মসংস্থান সকল ক্ষেত্রে নারীরা আজ সফল হয়েছে। নারীরা দেশের উন্নয়ন ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। যে কারণে সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় ১৪৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৫৯তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে। এবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘নারীর সমণ্ডঅধিকার, সমসুযোগ এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ’ শুক্রবার (আজ) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সকাল ১০টায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।
সিমিন হোসেন (রিমি) বলেন, অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জন করায় ময়মনসিংহের আনার কলি, রাজশাহীর কল্যাণী মিনজি, সিলেটের চা শ্রমিক কমলী রবিদাশ, বরগুনার জাহানারা বেগম ও খুলনার পাখি দত্ত হিজরাকে এ সম্মাননা দেওয়া হবে। জয়িতাদের সাফল্য তুলে ধরতে গিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ময়মনসিংহের আনার কলি একজন সফল উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী, ওরাও সম্প্রদায়ের জয়িতা কল্যাণী মিনজি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে লেখাপড়া করেন। বর্তমানে তিনি সোনাদিঘি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
‘এছাড়া সিলেটের কমলী রবিদাশ একজন সফল জননী। মাত্র ১৮ টাকা দিন মজুরিতে চা শ্রমিক হিসেবে অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে এক ছেলেকে তিনি উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেন। তার ছেলে বর্তমানে একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা।’ সিমিন হোসেন রিমি জানান, বরগুনার জাহানারা বেগমের ১২ বছর বয়সে বিয়ে হয়ে যায়। যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় স্বামী তাকে এসিডে দগ্ধ করেন। পরে নিজেকে একজন স্বাবলম্বী জয়িতা হিসেবে প্রমাণ করেন। খুলনার পাখি দত্ত হিজড়া নিজের জনগোষ্ঠীর অধিকার ও জীবনমান উন্নয়নে কাজ করেছেন। পাঁচজন শ্রেষ্ঠ জয়িতার প্রত্যেককে ১ লাখ টাকার চেক, ক্রেস্ট, উত্তরীয় এবং সনদ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।