ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

অস্থিতিশীল কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়

অনির্দিষ্টকালের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটিতে দুই শিক্ষককে

অনির্দিষ্টকালের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটিতে দুই শিক্ষককে

যৌন হয়রানির ঘটনায় টানা ৯ দিন ধরে চলমান শিক্ষার্থী আন্দোলনে অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।

এ ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন শাহ এবং বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়া হয়েছে।

গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো: হুমায়ন কবীর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি এই অফিস আদেশ জারি করা হয়। একই সঙ্গে এই আদেশে আরো বলা হয়, মানবসম্পদ ও ব্যাবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে বিভাগীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বিভাগীয় প্রধানের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করবেন।

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই আদেশে নাখোশ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি- যৌন হয়রানির ঘটনায় অভিযুক্ত মানবসম্পদ ও ব্যাবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন শাহ এবং তাকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র’র স্থায়ী বহিস্কার আদেশ।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঘটনার ১৩ দিনেও যৌন হয়রানির ঘটনায় বিচার না হওয়ায় এবং এখন পর্যন্ত গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ না করে তালবাহানা করার অভিযোগে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে আন্দোলনকারিরা। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসসিক ভবন, সকল বিভাগের ফটক এবং ব্যাংকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করে। এ ঘটনায় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর তালাবদ্ধ প্রশাসনিক ভবনের ফটকে এসে আন্দোলনকারিদের শান্ত করার চেষ্টা করে। এতে শিক্ষার্থীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে বিকাল পৌনে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয়। এতে মহাসড়কের দুই পাশের যানজটের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়েছে মহাসড়কে চলাচলরত সাধারণ যাত্রীরা।

ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: কামাল হোসেন খবরের সত্যতা নিশ্চিত বলেন, অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। বিস্তারিত পরে জানানো হবে। প্রসঙ্গত, অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক ছাত্রীকে অনুপস্থিত দেখিয়ে পরীক্ষায় জরিমানা আদায়, নম্বর কম দেওয়া ও থিসিস পেপার আটকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠে মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন শাহ’র বিরুদ্ধে। এ ঘটনার বিচার দাবিতে গত ৪ মার্চ আন্দোলন শুরু করে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবি করে ওই বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ট্রেজারার ড. আতাউর রহমানকে প্রধান করে ৫ মার্চ ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কিন্তু এই তদন্ত কমিটি গঠনের একদিন পর ৬ মার্চ আন্দোলনকারিরা মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় তারা ওই বিভাগের শিক্ষকদের নেমপ্লেটসহ ভাঙচুর করে বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির ঘটনায় প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলে তাকেও তদন্তের আওতায় আনার দাবি জানান। পরে দাবি মেনে তদন্ত কমিটি পুর্নগঠন করে বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকেও তদন্তের আওতায় নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু দীর্ঘ সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না করায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত