গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

কিছু রোগী হয়তো বাঁচান যাবে না, তবে অবহেলা যেন না থাকে

প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

গাজীপুরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে গুরুতর আহতদের সার্বিক খোঁজখবর নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, দগ্ধদের অনেকেরই অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। আমরা কিছু রোগীকে হয়তো বাঁচাতে পারব না, কিন্তু কোনো রোগীর প্রতি শেষমুহূর্ত পর্যন্ত আমাদের চেষ্টার যেন কোনো রকম অবহেলা না থাকে, এটি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। গতকাল সকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে গুরুতর আহত রোগীদের উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে চিকিৎসকদের সঙ্গে জরুরি বোর্ড সভায় তিনি এসব কথা বলেন। চিকিৎসকদের উদ্দেশ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধদের শারীরিক কষ্ট অনেক। তারা খুবই অসহায় অবস্থায় থাকেন। প্রতিটি রোগীকে নিজের পরিবারের সদস্যদের মতো করে আমাদের সবাইকে চিন্তা করতে হবে। তিনি বলেন, দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে সার্বিক বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে তাদের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় প্রধানমন্ত্রী নিজে বহন করবেন বলেও আমাকে অবগত করেছেন। এখন আমাদের দায়িত্ব হলো নিজেদের সেরাটা দিয়ে তাদের চিকিৎসা করা। এর আগে সভার শুরুতে ভর্তিকৃত রোগীদের শারীরিক অবস্থার বিস্তারিত তথ্য জানতে চান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। এমনকি অগ্নিদগ্ধ হয়ে ভর্তিকৃতদের মধ্যে কতজন শিশু, কতজনের অবস্থা বেশি গুরুতর, কতজন আইসিইউ, এইসডিওতে ভর্তি আছেন তার খোঁজ নেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এসময় হাসপাতালটির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ নওয়াজেস খানসহ অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক (রেডিওলোজি) ডা. খলিলুর রহমান, অধ্যাপক (এনেস্থিসিওলজি) ডা. আতিকুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক (বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি) ডা. হাসিব রহমান, সহযোগী অধ্যাপক (বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি) ডা. হোসাইন ইমামসহ (ইমু) অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা।

আগুনে দগ্ধের ঘটনায় তদন্ত কমিটি

কালিয়াকৈরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিরচলা এলাকায় সিলিন্ডারের ছিদ্র থেকে বের হওয়া গ্যাসের আগুনে ৩৬ জন দগ্ধ হওয়ার ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। গতকাল সকালে গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মো. সফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ওই তদন্ত কমিটির কথা জানান। এ সময় গাজীপুরের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ, কালিয়াকৈর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজমীর হোসেন, কালিয়াকৈর থানা পুলিশের ওসি এএফএম নাসিম ও মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইফুল আলম উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসক বলেন, গ্যাসের আগুনে ৩৬ জন দগ্ধ হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৪ জন ঢাকায় এবং দুইজন স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ঘটনাটি তদন্ত করতে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবিরকে তদন্ত কমিটির প্রদান করা হয়েছে। অন্য দুই সদস্য হলেন- কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ ও গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরিফিন। তিনি আরও বলেন, এখানে খুবই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যারা থাকেন গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে তাদের অভিজ্ঞতা কম। যার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের দিয়ে অগ্নিমহড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে। এ ছাড়া অগ্নিদগ্ধদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে এবং সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। গাজীপুরের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম বলেন, এখানে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটি খুবই মর্মান্তিক। এ ধরনের ঘটনা যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় এজন্য জনসচেতনতা প্রয়োজন। আইনের কাঠামো থেকে যারা এর ব্যক্তয় ঘটাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে যারা গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করে তাদের ডিলারশিপ ঠিক আছে কি না, সেগুলো দেখা হবে।