ঢাকা ১২ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কুমিল্লায় বাবার কবরের পাশে অবন্তিকার দাফন

কুমিল্লায় বাবার কবরের পাশে অবন্তিকার দাফন

কুমিল্লা নগরীর উত্তর বাগিচাগাঁও এলাকার বাসায় গত শুক্রবার রাতে আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। গতকাল বিকালে কুমিল্লা সরকারি কলেজ মাঠ এবং শহরতলীর নিজ বাড়ি শাসনগাছা মহাজনবাড়ি এলাকায় পৃথক নামাজে জানাজা শেষে তার মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। তার নামাজে জানাজায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণিপেশার শোকার্ত মানুষজন অংশ নেন। এদিকে তার এই মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে গতকাল দিনভর নগরীর উত্তর বাগিচাগাঁওয়ের ‘পিসি পার্ক অরণি’ নামের বাসায় উৎসুক জনতার ভিড় লক্ষ্য করা যায়।

এদিকে অবন্তিকার মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে নগরীর কান্দিরপাড় এলাকায় বিক্ষোভণ্ডসমাবেশ ও

মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। অবন্তিকার মা-ভাই ও পরিবারকে সান্তনা দিতে জবি থেকে গতকাল সকালে ৩ জন শিক্ষকের নেতৃত্বে ৩৫ জন শিক্ষার্থী কুমিল্লায় ছুটে আসেন। বাসা ও জানাজায় উপস্থিত জনতার একটিই দাবি, এ ঘটনার সাথে যারাই জড়িত থাকুক তাদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হয়।

সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, অবন্তিকার বাবা ছিলেন কুমিল্লা সরকারি কলেজের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন। স্ত্রী তাহ্মিনা শবনম, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়ে ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা ও একমাত্র ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী জাবিদ জাওয়াদ অপূর্বকে নিয়ে ৪ জনের ছোটখাটো সাজানো সংসার ছিল ওই কলেজ শিক্ষকের। শহরের শাসনগাছা এলাকায় পৈত্রিক বাড়ি হলেও তারা থাকেন নগরীর উত্তর বাগিচাগাঁও এলাকার ফায়ার সার্ভিস সড়কের ‘পিসি পার্ক অরণি’ নামের বাসায়। দুই সন্তানের মধ্যে অবন্তিকা উচ্চশিক্ষার জন্য ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। অনার্স ডিগ্রি লাভের পর তিনি বিমান বাহিনীতে চাকরিতে যোগদান করেন। একপর্যায়ে হাঁটুতে ব্যথাজনিত কারণে চাকরি ছেড়ে জবিতে মাস্টার্সে ভর্তি হন। এরপর ২০২২ সাল থেকে তার জীবনে নেমে আসে নানান ঘটনা-দুর্ঘটনা।

অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম আহাজারী করে বলেন, কোথায়ও বিচার পায়নি আমার মেয়ে। কারণে-অকারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২২ সাল থেকে আমার মেয়ের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। তিনি বলেন, জবি প্রশাসনের ডাকে আমি আমার স্বামীকে নিয়ে একাধিকবার প্রশাসনের কাছে গিয়ে ছিলাম, বিচার তো পাইনি উল্টো তারা আমাদের আরও মানসিকভাবে হয়রানী করেছে। অবন্তিকার ভাই জাবিদ জাওয়াদ অপূর্ব বলেন, আপুু ঢাকা থেকে আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব বিষয় সবার সঙ্গে শেয়ার করতেন। আপুর মরদেহ বিকাল ৪টার দিকে শাসনগাছা এলাকায় দাফন করা হয়েছে। অবন্তিকার সহপাঠি আবদুর রহমান ও মুশফিকুর রহমান বলেন, যে অবন্তিকা পুরো ক্লাস মাতিয়ে রাখত, আমরা চাই বিষয়টির একটি সুষ্ঠু তদন্ত হোক।

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি ফিরোজ হোসেন বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে অবন্তিকার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার পর তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত