প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব

তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ধারাবাহিক মূল্যায়ন সাময়িক পরীক্ষা নেই

প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে এখন থেকে প্রথমণ্ডতৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়ন করা হবে। প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা হবে না। এমন তথ্য জানিয়েছেন প্রাথমিক ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ।

গতকাল সচিবালয়ে প্রাথমিক ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

গত বছর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। প্রথম বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন এই শিক্ষাক্রম শুরু হয়। আর গত জানুয়ারি শুরু হওয়া নতুন শিক্ষাবর্ষে ওই তিন শ্রেণি ছাড়াও নতুন করে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে চালু হয়েছে এই শিক্ষাক্রম।

পর্যায়ক্রমে ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে (উচ্চমাধ্যমিক) বাস্তবায়িত হবে নতুন শিক্ষাক্রম। নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বড় অংশ হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিকভাবে (শিখনকালীন)। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বছরে তিনটি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হতো। যেহেতু এ বছর প্রাথমিকের তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত নতুন শিক্ষাক্রম চালু হয়েছে, তাই সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসা ছিল তৃতীয় পর্যন্ত আগের মতো প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িক বা বার্ষিক পরীক্ষা হবে কি না।

উত্তরে সচিব বলেন, পরীক্ষা নেয় বিষয়টি তেমন নয়। মূল্যায়ন পদ্ধতিটা ভিন্ন। এটা হলো ধারাবাহিক মূল্যায়ন। ধারাবাহিক মূল্যায়ন মানে একটা শিক্ষার্থীর সামগ্রীক আচরণ অবজার্ভ করে, এটি মূল্যায়নের মাধ্যমে মূল্যায়ন। কিন্তু তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত আমরা লিখিত পরীক্ষা, বইয়ের বোঝা থেকে আমরা তাদের মুক্ত করেছি।

তিনি বলেন, মূল কথা হলো তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রথম সাময়িক, দ্বিতীয় সাময়িক-এটি আর থাকবে না। মূল্যায়নের পদ্ধতি ভিন্ন হবে, যেহেতু ধারাবাহিক মূল্যায়ন। মূল্যায়ন হবে, কিন্তু আগের মতো গতানুগতিক না। ধারাবাহিক মূল্যায়ন থাকবে।

সচিব বলেন, এ মূল্যায়ণ একটা অ্যাপসের মাধ্যমে করা হবে। অ্যাপসটি এরই মধ্যে তৈরি হয়েছে। এটা আমরা সহসায় পেয়ে যাবো। মূল কথা হলো তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রথম সাময়িক, দ্বিতীয় সাময়িক এটি আর থাকবে না। শিক্ষারা যাতে দ্রুত মূল্যায়ন করতে পারে এ জন্য এনসিটিবি অ্যাপস করছে।

প্রাথমিক স্কুলে ৫০ এর কম শিক্ষার্থী থাকলে পাশের স্কুলে একীভূত : বিগত ১০ বছরে দেশের যেসব প্রাইমিক স্কুলে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৫০-এর কম এমন স্কুলগুলোকে পাশের স্কুলের সঙ্গে মার্জ (একীভূত) করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ।

গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রাথমিক ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

সচিব বলেন, আমরা বিগত ১০ বছরের চিত্র দেখব। যেসব স্কুলে ৫০ জনের কম শিক্ষার্থী আছে, সেগুলো পর্শবর্তী স্কুলের সঙ্গে একীভূত করা হবে। আমরা এ ধরনের প্রায় ৩০০টি স্কুল পেয়েছি। এগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি। তবে ঢালাওভাবে সব স্কুল বন্ধ করা হবে না। স্থানীয় বস্তবতাসহ সব অবস্থা দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, রাঙ্গামাটি জেলার বিলায়ছড়ি একটা উপজেলা আছে, সেখানে একটা স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ৪২ জন। বিগত কয়েক বছরই ৪২ জন। ওই স্কুল আমরা মার্জ করবো না। কারণ ওই ৪২ জন শিক্ষার্থী প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার জায়গা থেকে আসে। সুতরাং ওই প্রেক্ষাপট আমরা বিবেচনায় নেব। সুতরাং আমরা একেবারে ইনজেনারেল সিদ্ধান্ত নেবো না।

তিনি বলেন, যেখানে বিগত কয়েক বছর ধরে ৫-৭ জন শিক্ষার্থী আছে, সেগুলো আমরা মার্জ করে দেবো, এটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত।

বরিশাল শহরের একটি স্কুলের উদাহরণ দিয়ে সচিব বলেন, ওই স্কুলে গত ১০ বছরে ২০ জনের বেশি শিক্ষার্থী কখনো হয়নি।

তিনি আরো বলেন, আবার দেখা যায় কোনো কারণে করোনার সময় ৫০ জনের নিচে চলে আসে, এখন আবার ৮০-৯০ হয়েছে আমরা এ স্কুল বন্ধ করব না। আবার অন্যদিকে দেশের ৫০০-এর বেশি স্কুলে ১৫০০ বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। সেখানে ভর্তি জন্য আরো ১ হাজার শিক্ষার্থীর ডিমান্ড আছে। এসব স্কুলগুলোর অবকাঠামো উন্নয়নসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো উদ্যোগ নেওয়া হবে।