মস্কোর কনসার্টে ভয়াবহ হামলা : নিহত ১৩৩

* আইএসের দায় স্বীকার * ১১ জন আটক

প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় আয়োজিত এক কনসার্টে হামলার ঘটনায় শেষ খবর পর্যন্ত ১৩৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই ঘটনায় ১১ জনকে আটক করা হয়েছে যাদের মধ্যে চারজন সরাসরি হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটির নিরাপত্তা প্রধান। খবর বিবিসি, এএফপি।

মস্কোর উপকণ্ঠে অবস্থিত ক্রোকাস সিটি হলের ওই কনসার্টে বন্দুক হামলা ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি)।

এরই মধ্যে ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই হামলার ঘটনা ঘটে। এদিকে হোয়াইট হাউজ বলেছে, তারা সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে আরো তথ্য জানতে কাজ করছে। তবে এ হামলায় কোনো ধরনের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে ইউক্রেন।

হোয়াইট হাউজ নিশ্চিত করেছে যে, মার্চের শুরুতেই মস্কোতে ‘বড় সমাবেশ’ লক্ষ্য করে হামলা চালানো হতে পারে এ বিষয়ে রুশ কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন এ ঘটনাকে ‘ভয়াবহ ট্র্যাজেডি’ বলে অভিহিত করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ক্রোকাস সিটি সেন্টারে ভয়ানক ট্র্যাজেডি ঘটেছে। নিহতদের স্বজনদের প্রতি আমার সমবেদনা। এ ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন বলেন, চলতি মাসের শুরুর দিকে মস্কোয় একটি পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তথ্য ছিল। কনসার্টসহ বড় ধরনের সমাবেশ লক্ষ্য করে হামলার সম্ভাবনা ছিল এবং এ বিষয়ে রুশ কর্তৃপক্ষকে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে তথ্য দেওয়া হয়েছে। এর আগে ২০১৭ সালে সেন্ট পিটার্সবার্গ মেট্রোতে একটি বোমা হামলার ঘটনায় ১৫ জন নিহত হয়।

বলা হচ্ছে, প্রায় ২০ বছরের মধ্যে এটাই রাশিয়ায় সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার ঘটনা। এদিকে এ হামলার ঘটনায় ভারত এবং চীন রাশিয়ার প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছে। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, চীন সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করে, সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা করে এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য রুশ সরকারের প্রচেষ্টাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে।

অপরদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এরই মধ্যে এ ‘জঘন্য সন্ত্রাসী হামলার’ নিন্দা জানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট করেছেন। তিনি লিখেছেন, ভয়াবহ এ শোকের সময় রুশ সরকার এবং এর জনগণের প্রতি তার দেশ সংহতি প্রকাশ করছে।

এদিকে হামলার পরই ক্রেমলিন সরাসরি কাউকে দায়ী না করলেও কোনো কোনো রুশ আইনপ্রণেতা এ হামলার সঙ্গে ইউক্রেন জড়িত বলে অভিযোগ করেন।

সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ টেলিগ্রাম অ্যাপে লিখেছেন যে হামলার জন্য দায়ী ব্যক্তিরা যদি ইউক্রেনীয় হয়ে থাকে, তাদের সবাইকে খুঁজে বের করতে হবে এবং সন্ত্রাসী হিসেবে তাদের ধ্বংস করে দিতে হবে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মাইখাইলো পোডোলিয়াক হামলার সঙ্গে ইউক্রেনের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ইউক্রেন কখনও সন্ত্রাসের পথ ব্যবহার করেনি। এই যুদ্ধের সবকিছুই নির্ধারিত হবে কেবল যুদ্ধক্ষেত্রে। তবে তিনি মনে করছেন যে, চলমান সংঘাতের ন্যায্যতা প্রমাণ করতে এবং ইউক্রেনে সামরিক অভিযান বাড়াতে এই হামলার বিষয়টি ব্যবহার করবে রাশিয়া।