ভুটানের রাজা আজ ঢাকায় আসছেন

প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে আজ চার দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। তার সফরে দেশটির সঙ্গে তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করবে বাংলাদেশ। এছাড়া সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত একটি চুক্তি নবায়ন করা হবে।

গতকাল ভুটানের রাজার বাংলাদেশ সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ভুটানের রাজার সফরে নতুন করে তিনটা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে। সেগুলো হলো– ভুটানের থিম্পুতে একটি বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠা, বাংলাদেশের কুড়িগ্রামে ভুটানের জন্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং ভোক্তা সুরক্ষায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বিষয়ক। এছাড়া সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত একটি চুক্তি আছে আমাদের সঙ্গে সেটার নবায়ন করা হবে।

ভুটানের রাজার সফরসূচি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ভুটানের রাজা আজ থেকে ২৮ মার্চ বাংলাদেশ সফর করবেন। সফরে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে অংশ নেবেন। আজ সকালে বিমানবন্দরে ভুটানের রাজাকে স্বাগত জানাবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বিমানবন্দরে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সফরের প্রথম দিন ভুটানের রাজা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন এবং জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। বাংলাদেশ সফরকালে তিনি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন।

সফরের প্রথম দিন রাজার সঙ্গে তার সৌজন্য সাক্ষাৎ হবে। আগামীকাল ২৬ মার্চ ভোরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন ভুটানের রাজা।

বাংলাদেশ সফরে ভুটানের রাজা পদ্মা সেতু পরিদর্শন করবেন জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভুটানের রাজার সফরে শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতাল পরিদর্শন করবেন। তিনি পদ্মা সেতু পরিদর্শন করবেন। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন পরিদর্শন করবেন। কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলটি পরিদর্শনের জন্য বিমানে করে ঢাকা ছাড়বেন। পরে সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ সফর শেষ করবেন। স্থলবন্দরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাকে গার্ড অব অনার দেবে। সেখানে তাকে বিদায় জানাবেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

আলোচনার বিষয় প্রসঙ্গে ড. হাছান বলেন, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সহযোগিতা, আইসিটি ও পর্যটন ক্ষেত্রে আরও নিবিড় সহযোগিতার মতো বিষয়গুলো থাকবে।

এছাড়া কানেকটিভিটি বিষয়ক বিভিন্ন আঞ্চলিক ও উপআঞ্চলিক উদ্যোগে সমন্বিত সহযোগিতা, কুড়িগ্রামে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, ট্রানজিট চুক্তি এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ খাতে ভারতকে সঙ্গে নিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিনিময়ের ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রস্তাব এবং স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে।

রাজার সফরের তাৎপর্য তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরে বাংলাদেশে প্রথম কোনও উচ্চ পর্যায়ের রাষ্ট্রীয় সফর এটি। এ সফরে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে (বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে) ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।