বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের

বিএনপির উচিত জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা

প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপিই এ দেশে গণতান্ত্রিক আদর্শ বাস্তবায়নের প্রধান প্রতিবন্ধক। বিএনপি নেতাদের উচিত ছিল তাদের অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের জন্য জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করা। অথচ তারা সেটা না করে বরাবরের ন্যায় দুরভিসন্ধিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে।

গতকাল দলটির দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া সই করা গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ইতিহাসের নিষ্ঠুর সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে অসাংবিধানিক পন্থায় বন্দুকের নলের মুখে জাতিকে জিম্মি করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল। বিচারপতি সায়েমকে জোরপূর্বক অস্ত্রের মুখে সরিয়ে দিয়ে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি পদ দখল করেছিল। ১৯৭৭ সালে হ্যাঁ-না ভোটের প্রহসনের নির্বাচনের নামে দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছিল স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান। জিয়ার তথাকথিত গণতন্ত্র ছিল কারফিউ মার্কা গণতন্ত্র! লাগাতার সামরিক শাসন বলবৎ রেখে জনগণের উপর দুঃশাসনের স্টিমরোলার চালানো হয়েছিল।

তিনি বলেন, ১৯৭৮ সালের ৩ জুন একই সাথে সেনাপ্রধানের দায়িত্বে থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আয়োজন করে গণতন্ত্রকামী জনগণের সঙ্গে নির্মম তামাশা করেছিল স্বৈরাচার জিয়া; অবৈধভাবে একই সঙ্গে সেনাপ্রধান, প্রধান সামরিক আইন কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রপতির পদ দখল করে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করেছিল। স্বৈরাচার জিয়া পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করেছিল- মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে নির্বাসিত করেছিল। স্বৈরাচার জিয়ার হাতে প্রতিষ্ঠিত বিএনপি এদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করার রাজনৈতিক উত্তরাধিকার ধারণ করে চলেছে।

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, স্বৈরাচার জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন করেছিল। জাতিকে মিরপুর ও মাগুরা মার্কা উপ-নির্বাচন উপহার দিয়েছিল বিএনপি! নির্বাচনে কারচুপি করে ক্ষমতাদখলের পাঁয়তারায় আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন গঠন এবং ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার সৃষ্টি করেছিল বিএনপি।

অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে তখন বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের উপর অত্যাচার-নির্যাতনের ভয়াবহ নজির স্থাপন করা হয়েছিল। ২০০১ পরবর্তী সময়কালে বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনামলে ২১ হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। স্বৈরাচারের গর্ভে জন্ম নেওয়া বিএনপি সুপরিকল্পিতভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও মূল্যবোধ এবং গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্রের হত্যাকারীরা আজ যখন গনতন্ত্র নিয়ে কথা বলে- তখন বুঝতে হবে, তাদের ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য তাদের মায়াকান্না ছাড়া আর কিছু নয়। গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই। গণতন্ত্রের জন্য তাদের এই আহাজারি মূলত একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড, হাওয়া ভবন-খোয়াব ভবনের অধিপতি, দুর্নীতি-সন্ত্রাস ও দুর্বৃত্তায়নের বরপুত্র তারেক রহমানের দুঃশাসনের যুগে দেশকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য।

এদেশের গণতন্ত্রকামী দেশপ্রেমিক নাগরিক সমাজ এই অন্ধকারের অপশক্তির বিরুদ্ধে আজ ঐক্যবদ্ধ।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে বাংলাদেশ স্বপ্নের পথে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কাল রাতে মানবসভ্যতার ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের মধ্যদিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করা হয়েছিল। পাশাপাশি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, একইভাবে হন্তারকের দল ৩রা নভেম্বর জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছিল। সেদিন ঘাতকচক্র অসহায় নারী, শিশুকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল। সেদিন কোথায় ছিল গণতন্ত্র? কোথায় ছিল মানবাধিকার? ১৯৭৫-এর নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের পর খুনি জিয়ার হাতে জন্ম নেওয়া বিএনপি যখন গণতন্ত্রের কথা বলে, মানবাধিকারের কথা বলে, ইতিহাস তখন বিদ্রুপের হাসি হাসে।