ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দেরিতে আসায় খোলা হয়নি গেট

আকুতি করেও দেওয়া হলো না শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা

আকুতি করেও দেওয়া হলো না শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা

মুন্সীগঞ্জ সদরের মিরকাদিম পৌরসভার প্রকাশ মন্ডলের (২৯) ইচ্ছে ছিল শিক্ষক হওয়ার। সে স্বপ্নপূরণে গতকাল সকালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে উপস্থিত হন মুন্সীগঞ্জের প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) কেন্দ্রে। তবে আসার পথে হয়ে যায় বিলম্ব! সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের মধ্যে কেন্দ্রে থাকার কথা থাকলেও ৯টা ৩৫ মিনিট মিনিটে উপস্থিত হওয়ায় প্রবেশাধিকার পাওয়া হয়নি আর। এ সময় পরে বার বার চেষ্টা করে বিভিন্ন আকুতি করলেও গেট খোলা হয়নি। শুধু এক প্রকাশই নয়, গতকাল শুক্রবার প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বিলম্বে উপস্থিত হওয়ায় পরীক্ষা দিতে পারেনি অনেক পরিক্ষার্থী। শহরের দেওভোগ থেকে ৯টা ৪০ মিনিটে উপস্থিত হওয়া সাজ্জাদ হোসেন (২৭), চরকেওয়ার ইউনিয়ন থেকে ৯টা ৪৫ মিনিটে আসা মো: রফিকুল ইসলাম, লৌহজং উপজেলা থেকে আসা সুমন (৩০) সহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গেটে বিভিন্ন আকুতি করতে দেখা যায়। এ সময় পরীক্ষা দিতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পরেন কেউ কেউ। পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কয়েকজন অভিভাবকদেরও আকুতি করতে দেখা যায়। শিক্ষক পরিক্ষার্থী প্রকাশ মন্ডল বলেন, রাস্তায় গাড়ির কারণে মাত্র পাঁচ মিনিট দেরিতে পৌঁছাই, আমাকে সুযোগটি দিতে পারত। অনেকবার গেটে আকুতি করলেও কারো সাড়া পেলাম না। অনেক পরীক্ষার্থী কিছুটা দেরিতে আশায় তাদের পরীক্ষা দেওয়া হলো না। ১০ মিনিট বিলম্বে ৯টা ৪০ মিনিটে উপস্থিত হওয়া রনী ঘোষ (৩০) এটি আমার চাকরি পাওয়ার শেষ বছর, তাই শেষ চেষ্টা করার জন্য এসেছিলাম। পথে কিছুটা বিলম্ব হওয়ায় আমার ৫ থেকে ৭ মিনিট দেরি হয়ে যায়। এজন্য আর পরীক্ষা হলে ঢুকতে দিল না। হয়তো পরীক্ষা দিতে পারলে উত্তীর্ণ হলে চাকরি করে পরিবারকে সহযোগিতা করতে পারতাম। আরো কয়েকজন পরীক্ষার্থী জানান নানা কারণেই তাদের কিছুটা দেরি হয়েছে। তবে এমন হবে জানলে আরো আগেই উপস্থিত হওয়ার কথা জানান তারা। শুধু তাই নয়, পিটিআই পরীক্ষা কেন্দ্রে সহকারী স্বাস্থ্য পরির্দশক নূরুন্নাহার বেগমের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে উপস্থিত থাকার কথা ছিল তিনিও ৯টা ৪৫ মিনিটে আসায় গেটের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (শিক্ষা শাখা ও আইসিটি শাখা) মুনতাসির মাহফুজ জানান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ছিল সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে পরীক্ষার্থীদের আসন গ্রহণ ও সকাল সাড়ে ৯টায় প্রবেশাধিকার বন্ধের। নির্দেশনা অনুযায়ী ৯টা ৩০ মিনিটে গেট বন্ধ করা হয়। তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রের শিক্ষক পদ একটি দায়িত্বশীল জায়গায়, যারা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করবে, তাদের সময়ের গুরুত্ব অনুধাবন করা উচিত। সময়মতো কেন্দ্রে প্রবেশের বিষয়টিও একটি পরীক্ষা ছিল। তাই বিশৃঙ্খলা এড়াতেই নির্ধারিত সময়ের পর কাউকে আর প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এবিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক আবু জাফর রিপন মুঠো ফোনে জানান, সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে পারেনি শুধুমাত্র তাদেরই গেটের ভেতর প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এবার মুন্সীগঞ্জ জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে ৬ হাজার ৫৭ জন পরীক্ষার্থী ছিল। সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত জেলার ৯টি পরীক্ষা কেন্দ্রে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত