প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক

ঈদের ছুটি বাড়েনি

মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে সেবা আমদানি-রপ্তানিতে

প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদুল ফিতরে সরকারি ছুটি বাড়ানো নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছে। তবে গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে ছুটির বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে। এবারে ঈদুল ফিতরে ছুটি বাড়ানো হয়নি।

সংশ্লিষ্টরা সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে সরকারের আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ৯ এপ্রিল ছুটির জন্য মন্ত্রিসভায় সুপারিশ করেছিল। তবে সেই সুপারিশ নাকচ করে দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ফলে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৯ এপ্রিল মঙ্গলবার সরকারি অফিস-আদালত খোলা থাকছে। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানেই ছুটি না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।

মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৯ এপ্রিল সরকারি অফিস ছুটির বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশ নাকচ করে দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ৮ ও ৯ এপ্রিল যথাযথ নিয়মে অফিস খোলা থাকবে। তবে যারা দূরে যাবেন তারা চাইলে ছুটি নিতে পারবেন।

এ প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও সরকারের আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ৯ এপ্রিল সরকারি ছুটি থাকছে না। আমরা আইনশৃঙ্খলা কমিটির পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব করেছিলাম তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন করা হয়নি।

তিনি বলেন, এ বছর ঈদে লম্বা ছুটি পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে আরও ছুটি দিলে সরকারি কাজকর্মে স্থবিরতা নামতে পারে। তবে যারা দূরে ঈদ করতে যাবেন তারা তো চাইলে ছুটি নিতে পারেন। তাদের সেই অধিকার আছে। জানা গেছে, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে রোজা ২৯টি হলে আগামী ১০ এপ্রিল এবং রোজা ৩০টি হলে ১১ এপ্রিল সারা দেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। তবে সরকার রমজান ৩০ দিন ও ঈদুল ফিতর ১১ এপ্রিল হচ্ছে ধরে আগামী ১০, ১১ ও ১২ এপ্রিল (বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার) ঈদের ছুটি নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপর ১৩ এপ্রিল (শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি এবং ১৪ এপ্রিল (রবিবার) নববর্ষের ছুটি। এর আগেও ৭ এপ্রিল শবেকদরের ছুটি রয়েছে। শবে কদরের ছুটির পর ৮ ও ৯ এপ্রিল (সোম ও মঙ্গলবার) দুদিন অফিস খোলা। ১১ এপ্রিল ঈদ হলে বাড়ি যেতে মাত্র একদিন (১০ এপ্রিল) সময় পাওয়া যাবে। এর মধ্যদিয়ে এখন ১০ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত টানা পাঁচ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

মন্ত্রিসভায় ঈদুল ফিতরে ছুটির বিষয় ছাড়াও কয়েকটি এজেন্ডা উত্থাপন করা হয়। এরমধ্যে সেবা অন্তর্ভুক্ত করে ‘আমদানি ও রপ্তানি আইন, ২০২৪’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। নতুন আইনানুযায়ী, সেবা আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে। এ ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ও নিষিদ্ধকরণের ১৯৫০ সালের আইন আছে। পুরোনো আইনগুলো পর্যায়ক্রমে যুগোপযোগী করার নির্দেশনা আছে। এজন্য নতুন আইনের খসড়া করা হয়েছে। আগের আইনে নতুন করে কিছু বিষয় সংযুক্ত করা হয়েছে। আগে শুধু পণ্যের কথা বলা ছিল। এখন বাণিজ্যিকভাবে সেবা কার্যক্রমকেও এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেবা আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে।’

তিনি বলেন, এ আইনের আওতায় সেবাকে যুক্ত করা হয়েছে। কমোডিটির পাশাপাশি সার্ভিসকে যুক্ত করা হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের অধীন জেনারেল এগ্রিমেন্ট অন ট্রেড ইন সার্ভিস চুক্তিতে বর্ণিত সংজ্ঞা অনুযায়ী যেকোনো সেবা।

মাহবুব হোসেন বলেন, ‘সরকার কোনো পণ্য বা সেবা নিয়ন্ত্রণ বা নিষিদ্ধ করতে পারবে। এ সম্পর্কিত আদেশ ও বিধিবিধান প্রণয়ন করতে পারবে। আমদানি ও রপ্তানি নীতি প্রণয়নের দায়িত্ব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়েছে।’ এছাড়া সভায় ‘পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা আইন, ২০২৪’, ‘বিদেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা (স্থাবর সম্পত্তি অর্জন নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০২৪’ এবং ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০২৪’ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ আইনগুলো গত সরকারের মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হলেও তা সংসদে বিল আকারে পাস হয়নি। তাই সরকার পরিবর্তনের কারণে নতুন করে আইনগুলো মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য এসেছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।