ঈদের পরপরই দেশজুড়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করবে আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন যুবলীগ। সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি আনতে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা ও মহানগরে সম্মেলন করবে সংগঠনটি। সম্প্রতি সুপ্রিমকোর্ট বার নির্বাচন নিয়ে অনভিপ্রেত ঘটনার সম্মুখীন হয় যুবলীগ। কতিপয় নেতার কারণে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের সমালোচনার মুখে পড়ে সংগঠনটি। আঁচ লাগে ‘মানবিক যুবলীগ’র ভাবমূর্তিতে। সুপ্রিমকোর্টের ঘটনা নিয়ে অবশেষে ভিডিও বার্তা দিতে বাধ্য হন যুবলীগের চেয়ারম্যন শেখ ফজলে শামস পরশ। ভিডিও বার্তায় সুপ্রিমকোর্ট নিয়ে যুবলীগের অবস্থান পরিষ্কার করেন তিনি।
সুপ্রিমকোর্ট কাণ্ডে সংগঠনের যে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে, তা পুনরুদ্ধারে কৌশল নিয়েছে যুবলীগ। মানবিক কার্যক্রম বাড়ানোর পাশাপাশি সংগঠনকে গতিশীল করার পরিকল্পনা রয়েছে যুবলীগের র্শীষ নেতৃত্বের। এ লক্ষ্যে তৃণমূল গোছানোর কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এছাড়া সরকার বিরোধী যেকোনো আন্দোলন মোকাবেলার প্রস্তুতি রাখবে সংগঠনটি।
জানা গেছে, ঈদে পরপরই বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জেলার সম্মেলন করবে যুবলীগ। সম্মেলনের মাধ্যমে সাংগঠনের দায়িত্বভার নতুন নেতৃত্বের হাতে তুলে দেয়া হবে। জেলা ও মহানগরে অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতাদের জায়গা দেওয়া হবে। যুবলীগ থেকে যারা সাবেক হবেন তারা জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হবেন। ঈদের পর যে জেলাগুলোতে যুবলীগের সম্মেলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেগুলো হল; পিরোজপুর, ঝালকাঠি, নড়াইল, যশোর, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর, কুড়িগ্রাম এবং লালমনিরহাট। নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুবলীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, যেসব জেলা ও মহানগরে যুবলীগের কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে, ঈদের পরপরই সেগুলোর সম্মেলন করা হবে। এজন্য যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল দায়িত্বশীল নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। যুবলীগকে আরও সুসংগঠিত করতে রমজানের পরই ব্যাপক সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু হবে। এছাড়া যুবলীগের পক্ষ থেকে মানবিক কার্যক্রম বাড়ানোরও নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। রমজানের শুরু থেকে ইফতার সমগ্রী বিরতণ করছে এবং রোজা শেষে অসহায় মানুষদের ঈদ সামগ্রী দেবে যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
জানতে চাইলে যুবলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, যুব সমাজের আস্থা ও বিশ্বাসের ঠিকানা যুবলীগ। দেশের যে কোন ক্রান্তিকালে দুর্যোগ-দুর্বিপাকে মানুষের পাশে দাঁড়ায় যুবলীগের নেতাকর্মীরা। ঈদকে কেন্দ্র যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল সব জেলা এবং মহানগরের নেতাকর্মীদের সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে বলেছেন। অসহায় মানুষকে চাল, ডাল, তেলসহ খাদ্য সামগ্রী ও ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। সাধারণ মানুষ ভালো থাকলে, সেটাই হবে যুবলীগের ঈদ আনন্দ।
যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, যুবলীগ রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যুবলীগ দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যুবলীগ একটি ঐতিহ্যবাহী, সুশৃঙ্খল সংগঠন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশের যেকোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে, দুর্যোগ-দুর্বিপাকে দেশের মানুষের পাশে ছিল যুবলীগ এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে, ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠায় যুবলীগের নেতাকর্মীরা অতীতের মতো সোচ্ছার থাকবে। দেশব্যাপী যুবলীগকে আরও শক্তিশালী ও গতিশীল করা হবে।