কুরআন পাঠের ফজিলত

প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী

তোমরা কুরআন পড়বে। কেন না, তা কিয়ামতের দিন তার পাঠকদের জন্য সুপারিশকারীরূপে উপস্থিত হবে। (মিশকাত, হাদিস নং-২০১৮)

যখন তুমি শয্যা গ্রহণ করবে, আয়াতুল কুরসি পড়বে। তাহলে আল্লাহর তরফ হতে সর্বদা তোমার জন্য একজন নেগাহবান থাকবে এবং শয়তান তোমার নিকট আসতে পারবে না, যাবৎ না তুমি ভোরে উঠ। (মিশকাত, হাদিস নং-২০২১)

সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত, যে তা রাতে পড়বে, তার জন্য তা যথেষ্ট হবে। (মিশকাত, হাদিস নং-২০২৩)

যে ব্যক্তি সুরা কাহফের প্রথম ১০টি আয়াত মুখস্ত করবে, তাকে দাজ্জাল হতে নিরাপদ রাখা হবে। (মিশকাত, হাদিস নং-২০২৪)

সুরা ইখলাস তেলাওয়াত করা প্রতি রাতে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়ার সমান; সুরা এখলাস কুরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান। (মিশকাত, হাদিস নং-২০২৫)

রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি রাতে শয্যা গ্রহণ করার সময় সুরা এখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস পড়ে শরীরে ফুঁ দিতেন। (মিশকাত, হাদিস নং-২০২৯)

কিয়ামতের দিন কুরআন পাঠকারীকে বলা হবে, পাঠ করতে থাক এবং উপরে উঠতে থাক। অক্ষর অক্ষর ও শব্দ শব্দ স্পষ্টভাবে পাঠ করতে থাক, যেভাবে দুনিয়াতে স্পষ্টভাবে পড়তে। কেন না, তোমার স্থান শেষ আয়াতের নিকটে, যা তুমি পাঠ করবে। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৩১)

যে পেটে কুরআনের কিছু নাই তা খালিঘর তুল্য। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৩২)

যে আল্লাহর কিতাবের কোনো একটি অক্ষর পাঠ করেছে তার কারণে তাতে নেকি মিলবে দশ গুণ। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৩৪)

যে ব্যক্তি কুরআন পাঠ করেছে এবং তাতে যা আছে তার সাথে আমল করেছে তার মাতা-পিতাকে কিয়ামতের দিন সূর্যের কিরণ অপেক্ষা উজ্জ্বল তাজ পরানো হবে। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৩৬)

প্রত্যেক জিনিষের একটি কলব (হৃদয়) রয়েছে। আর কুরআনের কলব হল সুরা ইয়াসীন। যে তা একবার পড়বে, সে ১০ বার কুরআন পড়ার সওয়াব পাবে। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৪৪)

ধন্য সেই জাতি যাদের উপর সুরা ত্বা-হা ও সুরা ইয়াসীন নাযিল হয়েছে, ধন্য সেই পেট যে তা ধারণ করেছে এবং ধন্য সেই মুখ যে তা উচ্চারণ করেছে। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৪৫)

সুরা ‘মূলক’ এক ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করেছে, ফলে তাকে মাফ করে দেয়া হয়েছে। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৪৯)

সুরা ইযা যুলযিলাত (সওয়াবে) কুরআনের অর্র্ধেকের সমান, কুলহুওয়াল্লাহ এক-তৃতীয়াংশের সমান এবং কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরুন এক-চতুর্থাংশের সমান। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৫২)

সুরা মুলককে হাদিসে ওয়াকিয়া ও মুনজিয়া বলা হয়েছে। ওয়াকিয়া শব্দের অর্থ রক্ষাকারী এবং মুনজিয়া শব্দের অর্থ মুক্তিদানকারী। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, এই সুরা আজাবরোধ করে এবং আজাব থেকে মুক্তি দেয়। যে এই সুরা পাঠ করে তাকে এই সুরা কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবে। (কুরতুবি)

হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) এর রেওয়ায়েত অনুসারে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমার আন্তরিক বাসনা এই যে, সুরা মুলক প্রত্যেক মুমিনের অন্তরে থাকুক। হযরত আবু হুরায়রা (রা) এর বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহর কিতাবে একটি সুরা আছে যার আয়াত তো ৩০টি; কিন্তু কিয়ামতের দিন এই সুরা এক এক ব্যক্তির পক্ষে সুপারিশ করবে এবং তাদের জাহান্নাম থেকে বের করে জান্নাতে দাখিল করবে; সেটি সুরা মুলক। (মাআরেফুল কুরআন, ৮খ. পৃ-৬১১)

দিনে ২০০ বার সুরা এখলাস পড়লে তার ৫০ বছরের গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে, যদি তার উপর ঋণের বোঝা না থাকে। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৫৪)

শয্যা গ্রহণকালে ডান পার্শ্বের ওপর শয়ন করে ১০০ বার সুরা এখলাস পড়লে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে বলবেন, বান্দা, ডান দিকের বেহেস্তে প্রবেশ কর। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৫৫)

মুখস্থ কুরআন পড়া ১ হাজার মর্যাদা রাখে আর কুরআন শরিফ দেখে দেখে পড়া ২ হাজার মর্যাদা রাখে। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৬৩)

অধিকতর মর্যাদাবান সুরা সুরা এখলাস, অধিকতর মর্যাদাবান আয়াত আয়াতুল কুরসি, অধিকতর বরকতময় আয়াত সুরা বাকারার শেষের দিক। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৬৫)

সুরা ফাতেহায় (শারীরিক ও মানসিক) সব রোগের আরোগ্য রয়েছে। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৬৬)

যে ব্যক্তি জুমাবারে সুরা কাহফ পড়বে, তার ঈমানের নূর এ জুমা হতে ওই জুমা পর্যন্ত চমকাতে থাকবে। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৭১)

যে ব্যক্তি দিনের প্রথম দিকে সুরা ইয়াসীন পড়বে তার সমস্ত হাজত পূর্ণ হবে। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৭৩)

সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত, তোমরা তা শিক্ষা করবে এবং তোমাদের নারীদেরও তা শিক্ষা দেবে। কেন না, তাতে রয়েছে ক্ষমা প্রার্থনা, আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায় ও দোয়া। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৬৯)

প্রত্যেক জিনিসের একটি শোভা আছে, আর কুরআনের শোভা হল সুরা ‘আর-রহমান’। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৭৬)

যে সুরা ‘কুল হুওয়াল্লাহ’ ১০ বার পড়বে তার জন্য বেহেস্তে একটি বালাখানা, যে ২০ বার পড়বে তার জন্য বেহেস্তে দু’টি বালাখানা, আর যে ৩০ বার পড়বে তার জন্য বেহেস্তে তিনটি বালাখানা তৈরি করা হবে। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৮১)

প্রকাশ করে কোরাআন পাঠকারী প্রকাশ্যে খয়রাতকারীর ন্যায়, আর চুপে কুরআন পাঠকারী চুপে খয়রাতকারীর ন্যায়। (মিশকাত, হাদিস নং-২০৯৮)

সুরা তাকাছুর : দৈনিক এই সুরা পাঠ করা ১ হাজার আয়াত পাঠ করার সমান। (মাআরেফুল কুরআন, ৮ম খণ্ড : পৃ-৯৯৮)

সুরা কুরাইশ (লি ঈলাফে) : যে ব্যক্তি শত্রু বা বিপদের আশঙ্কা করে তার জন্য সুরা কুরাইশের তিলাওয়াত নিরাপত্তার রক্ষাকবচ। প্রত্যেক বালা মুসিবত দূর করার জন্য এটা পরীক্ষিত ও অব্যর্থ। (মাআরেফুল কুরআন, ৮ম খণ্ড : পৃ-১০১৭)