ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তওবা করা ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার ফজিলত

তওবা করা ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার ফজিলত

হযরত আবু সায়ীদ খুদরী (রা.) বলেন, রাসুল করীম (সা.) বলেছেন : শয়তান বলল, প্রভু হে! তোমার ইজ্জতের কসমণ্ড আমি তোমার বান্দাদের গোমরাহ করতে থাকব, যাবৎ প্রাণ দেহে থাকে। তখন প্রভু পরওয়ারদেগার আযযা ও জাল্লা বললেন, আমার ইজ্জত ও জালাল ও উ”চ মর্যাদার কসম- আমি তাদের মাফ করতে থাকব, যাবত তারা আমার নিকট মাফ চাইতে থাকবে। (আহমদ, মিশকাত, হাদীস নং-২২৩৫)।

প্রত্যেক আদম সন্তানই অপরাধী আর উত্তম অপরাধী তারাই, যারা তাওবা করে। (তিরমিযী, মিশকাত, হাদিস-২২৩২) যে সর্বদা ক্ষমা চায়, আল্লাহতায়ালা তার জন্য প্রত্যেক সংকীর্ণতা হতে একটি পথ বের করে দেন এবং প্রত্যেক চিন্তা হতে তাকে মুক্তি দেন, আর তাকে এমন ¯’ান হতে রিজিক দান করেন, যেখান হতে সে কখনও ভাবেনি। (আহমদ, আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ, মিশকাত, হাদিস-২২৩০)। রাসুল করীম (সা.) বলেছেন- যখন বান্দা গোনাহ স্বীকার করে এবং মাফ চায়, আল্লাহ তা কবুল করেন। (বোখারি ও মুসলিম, মিশকাত, হাদিস-২২২২)।

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- তাঁর শপথ যাঁর হাতে আমার জান রয়েছে- যদি তোমরা গোনাহ না করতে, আল্লাহ তোমাদের সরিয়ে দিতেন এবং এমন জাতিকে সৃষ্টি করতেন যারা গোনাহ করে আল্লাহতায়ালার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করত, আর আল্লাহ তাদের মাফ করে দিতেন। (মুসলিম, মিশকাত, হাদিস-২২২০)।

‘যারা গোনাহ করত’ মানে যাদের গোনাহ করা প্রকৃতিগতভাবে সম্ভব এবং ফেরেশতাদের ন্যায় তাদের পক্ষে গোনাহ করা অসম্ভব নয়। এতে গোনাহের অনুমতি দেয়া হ”েছ না; বরং আল্লাহর ক্ষমার প্রশস্ততা বুঝানো হয়েছে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : আল্লাহতায়ালা রাতে আপন হাত প্রসারিত করেন, যাতে দিনের গোনাহগার তাওবা করে। আবার দিনের বেলায় হাত প্রসারিত করেন, যাতে রাতের গোনাহগার তাওবা করে। এভাবে তিনি করতে থাকবেন, যাবৎ না পশ্চিম দিক হতে সূর্য উদিত হয়। (মুসলিম, মিশকাত, হাদিস-২২২১)।

হযরত আলী (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন আল্লাহ ভালোবাসেন সেই মুমিন বান্দাকে যে গোনাহে পতিত হয়ে তাওবা করে। (মিশকাত, হাদিস-২২৫০)

হযরত আবু যর (রা.) বলেন- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- যে ব্যক্তি দুনিয়াতে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক ও সমকক্ষ না করে তাঁর সাথে সাক্ষাত করবে (মৃত্যুবরণ করবে) আর তার উপর পাহাড় পরিমাণ গোনাহর বোঝাও থাকবে, আল্লাহ তাকে মাফ করে দিবেন (বিনা তাওবায়, যদি তার ই”ছা হয়)। (বায়হাকী, মিশকাত, হাদিস-২২৫৩)।

হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : আল্লাহ তা‘আলা বলেন, যে জানে যে, আমি গোনাহ মাফ করার অধিকারী আমি তাকে মাফ করে দিব এবং আমি কারও পরোয়া করি না- যাবৎ সে আমার সাথে কাউকে শরীক না করে। (শরহুস সুন্নাহ, মিশকাত, হাদিস-২২২৯)।

হযরত আবু হুরায়রা (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, কোনো বান্দা অপরাধ করল এবং বলল, প্রভু হে! আমি অপরাধ করেছি তুমি তা ক্ষমা কর। তখন আল্লাহ বলেন, (আমার ফেরেশতাগণ) আমার বান্দা কি জানে যে, তার একজন প্রভু আছেন, যিনি অপরাধ ক্ষমা করেন অথবা অপরাধের জন্য শাস্তি দেন? (তোমরা সাক্ষী থেকো) আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম। অতঃপর আল্লাহ যত দিন চান, ততদিন সে অপরাধ না করে রইল, আবার অপরাধ করল এবং বলল, প্রভু হে! আমি আবার অপরাধ করেছি, তা ক্ষমা কর তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা কি জানে যে, তার একজন প্রভু আছেন, যিনি অপরাধ ক্ষমা করেন অথবা অপরাধের জন্য শাস্তি দেন? আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করলাম। অতঃপর সে অপরাধ না করে রইল যতদিন আল্লাহ চাইলেন। আবার অপরাধ করল এবং বলল, প্রভু হে! আমি আবার আরেক অপরাধ করেছি। তুমি আমাকে ক্ষমা কর। তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা কি জানে যে, তার একজন প্রভু আছেন, যিনি অপরাধ ক্ষমা করেন অথবা অপরাধের জন্য শাস্তি দেন। আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করলাম। সে যা ই”ছা করুক। (বোখারি ও মুসলিম, মিশকাত, হাদিস-২২২৫)।

‘যা ই”ছা করুক’ বলতে গোনাহ করার আদেশ দেয়া হয় নাই, বরং আল্লাহর দয়া ও ক্ষমার মাহাত্ম্য বুঝানো হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত