মসজিদের জমিতে জালিয়াতচক্রের থাবা!

প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিনিধি

ধামরাইয়ের মিজান-লাবু জালিয়াতচক্র সরকারকে ওয়াক্ফ করে দেওয়া মরহুম মৌলভী ফজলুল করিম সিদ্দিকীর ২১১ শতাংশ ওয়াক্ফ সম্পত্তি দখল করার পাঁয়তারা করছে। জালকাগজ ও ভুয়া তথ্য দিয়ে এই জালিয়াতচক্র দীর্ঘদিন ধরে রাজাপুরের ৯ নম্বর মৌজার দাগ খতিয়ান ১২০ খতিয়ানের দাগ নং ৩০৮, ৩০৯ ও ১৪১৯ থাকা ২১১ শতাংশ জমি জোরকরে দখলে নিয়ে ভোগ করছে। মসজিদের সম্পক্তির আয়ও লুটে নিচ্ছে। শুধু কি তাই, এই মিজান-লাবু জালিয়াতচক্রটি এ জমি যিনি ওয়াক্ফ করে দিয়েছেন, তাদের সবাইকে মৃত দেখিয়ে নোটারি দলিলসহ জমির সমস্ত কাগজপত্র নকল করে নিজেদের নাম বসিয়েছে। বিষয়টি ওয়াক্ফ এস্টেটের নজরে আসলে সতর্ক হয় ওয়াক্ফ এস্টেট। ঘটনাটি ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার চররাজাপুর গ্রামের রাজাপুর ৯ নাম্বার মৌজায় জালিয়াতচক্রটি এ জালিয়াতির ঘটনা ঘটিয়েছে। জালিয়াত মিজান ও লাবুর সাথে বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিকদের সাথে তারা কথা বলবেন না বলে জানান।

স্থানীয় সূত্র জানায় ধামরাই থানার চররাজাপুর গ্রামে জালিয়াতচক্রের মিজান ও লাবুর নেতৃত্বে রয়েছে একাধিক কিশোর গ্যাং। ওয়াক্ফ সূত্র জানায়, সরকারের ওয়াক্ফ এস্টেট তালিকাভুক্ত মসজিদটির নাম রাজাপুর মধ্যস্থ চেরাগী জামে মসজিদ, ওয়াক্ফ এস্টেট-এর ই, সি নং ১১৩৩২। নির্মাণের পর শুরু থেকে মসজিদটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক-মোতয়াল্লী ছিলেন, মরহুম মৌলভী ইব্রাহিম সিদ্দিকী, এরপর মসজটির সভাপতি-মোতয়াল্লির দায়িত্বে ছিলেন, তার ছেলে মরহুম মৌলভী ফজলুল করিম সিদ্দিকী, এরপর তার ছেলে মরহুম হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী এবং বর্তমানে তার বড় ছেলে শামীম সিদ্দিকী সভাপতির দায়িত্বে আছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বিগত সময়ে একাধিকবার নদীর ভাঙনের কারণে মসজিদটি নদীতে বিলীন হয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘসময় পরে নদীর চর জেগে উঠলে এলাকায় লোকজন ঘড়বাড়ি তৈরি শুরু করে বসবাস করছে। এমতাবস্থায়, ওয়াক্ফ এস্টেট থেকে জানানো হয়, রাজাপুর মধ্যস্থ চেরাগী জামে মসজিদের জায়গায় মসজিদ নির্মাণ করা যেতে পারে; কিন্তু অন্য কোনো জায়গায় এ মসজিদ নির্মাণ করা যাবে না। আমরা সে পরামর্শ মেনেই উল্লেখিত স্থানের জমিতে সব নিয়মকানুন মেনে মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করতে গেলেই ধরা পরে এই জালিয়াতচক্রের চক্রান্ত ও জালকাগজপত্র। জানা গেছে, এই জালিয়াতচক্রটি মসজিদের নামে থাকা সব জমির কাগজপত্র জালিয়াত করে নকল দলিল তৈরি করে ধরা পরে পালিয়ে যায়, এরআগে স্থানীয় অধিবাসীরা প্রতিবাদ করায় জালিয়াতচক্রের মূল হোতা মো: মিজানুর রহমান সিদ্দিকী ও তার ভাই মো: লাবুবুর রহমান সিদ্দিকী তাদের পোষা কিশোর গ্যাং সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে মসজিদ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মারামারি করে পালিয়ে যায়। এতে দুই নারীসহ কয়েকজন গুরুত্বর আহত হন। গুরুতর আহত নারী রিয়া বেগম জনি বাদী হয়ে ধামরাই থানায় গত ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং তারিখে মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় গ্যাং লিডার মো: মিজানুর রহমান সিদ্দিকী, গ্যাং লিডার মো: লাবুবুর রহমান সিদ্দিকী, নাজমূল হক নয়ন, রফিকুল ইসলাম কিতু, মোবারক হোসেন পাগলা, কাইয়ুম হাসান লিখন, রাব্বি ইসলাম রোমা, ইমরান হোসেন রতন, রোকন মিয়া, খোরশেদ মিয়াসহ আরো অজ্ঞাত কয়েকজন। মামলা নং-৩১। ধারা-১৪৫/ ৪৪৭/ ১২৩/ ৩২৫/ ৩২৬/ ১০৭/ ৩৫৪/ ৩৭৯/ ১০৬/ ১১৪ পেননাল কোড ১৮৬০।

থানা সূত্রে জানা গেছে, আসামিরা পলাতক থাকায় এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। মসজিদ কমিটির একাধিক কর্মকর্তা হানান মসজিদের জমি জালিয়াতচক্রের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ওয়াক্ফ এস্টেট থেকে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।