ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তৃতীয় ধাপে উপজেলা ভোট ২৯ মে

উন্মুক্ত নির্বাচনে বেড়েছে প্রার্থী

উন্মুক্ত নির্বাচনে বেড়েছে প্রার্থী

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের তপশিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ২৯ মে ১১২টি উপজেলায় এই ধাপে ভোটগ্রহণ করা হবে। এবারের ভোটে সরকারের পক্ষ থেকে উন্মুক্ত করে দেয়ায় প্রার্থী বেড়েছে। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বর্জন করায় আবারও তারা রাজনৈতিক মাঠে পরাজয় বরণ করছে।

তৃতীয় ধাপের তপশিল নিয়ে গতকাল ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, মনোনয়ন ফরম জমার শেষ তারিখ ২ মে, যাচাই-বাছাই ৫ মে, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮ মে, আপিল নিষ্পত্তি ৯ থেকে ১১ মে, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে এবং ভোটগ্রহণ ২৯ মে। এই ধাপে ২১টি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এবং বাকিগুলো ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি-জামায়াত ভোট বর্জন করে আবারও রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের কাছে হেরে যাচ্ছে। তারা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে সরাসরি আসলে তৃণমূলে সংগঠন চাঙ্গা হতো।

সূত্র জানায়, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত অংশ নেবে না এটা ধরে নিয়েই ভোট প্রতিযোগিতামূলক করতে দলীয় প্রতীক ‘নৌকা’ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আওয়ামী লীগ। বিএনপি-জামায়াত আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটে না এলেও তাদের অনেক নেতা নেমে পড়েছেন ভোটের মাঠে।

তার পরও নিজেদের কৌশল বদল করছে না আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, বিরোধীদলের নেতারা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকলেও উপজেলায় একক প্রার্থী দেওয়া হবে না। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে বিরোধীদের জয় হলে তা নিজেদের রাজনৈতিক বিজয় হবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

বিএনপির নেতাদের প্রার্থিতার বিষয়ে গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি উপজেলা নির্বাচনের বিরোধিতা করছে প্রকাশ্যে। তবে আমাদের জানামতে, স্থানীয় পর্যায়ে তাদের অনেকেই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিসহ সমমনারা অংশ নেয়নি। এমন অবস্থায় নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে দলীয় প্রতীক দেওয়ার পাশাপাশি নেতা-কর্মীদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার অনুমতিও দেয় আওয়ামী লীগ; যাতে ৫৯টি আসনে আওয়ামী লীগের নেতারা স্বতন্ত্র নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর উপজেলা নির্বাচনে বিএনপিসহ সমমনারা আসবে না ধরেই নৌকা প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ক্ষমতাসীন দল। শেষ পর্যন্ত প্রথম ধাপের ১৫০টির মধ্যে ৫০টির বেশি উপজেলায় বিএনপি-জামায়াতের নেতারা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। যেসব উপজেলায় আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন, সেখানে ভোট ভাগাভাগির সুযোগে বিরোধীদের বিজয়ের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে বলেও মনে করছেন অনেকেই। তবে এসব উপজেলায় দলীয় একক প্রার্থী দেওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা।

দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান বলেন, এখানে ভিন্ন কোনো কৌশল করার কিছু নেই। উন্মুক্ত মানে উন্মুক্তই। সে ক্ষেত্রে তাদের জনপ্রিয়তায় আওয়ামী ঘরানার বাইরে যদি কেউ নির্বাচিত হয়, তাতে আমাদের আপত্তির কিছুই নেই। বরং অভিনন্দনই জানাব।

এদিকে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটে এক হাজার ৮৯১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। চেয়ারম্যান পদে ৬৯৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭২৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৭১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করবেন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রশাসক।

দ্বিতীয় ধাপের তপশিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিল ২১ এপ্রিল শেষ সময়, মনোনয়নপত্র বাছাই ২৩ এপ্রিল, আপিল গ্রহণ ২৪-২৬ এপ্রিল, আপিল নিষ্পত্তি ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। আর ১৬১ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ২১ মে।

এ ধাপের নির্বাচনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ভোটারের সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি যেখানে সেখানে একাধিক সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োজিত থাকবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত