দেশীয় খেলাগুলোকেও এগিয়ে নেয়ার তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

খেলাধুলা শারীরিক-মানসিক শক্তি জোগায়

প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

সব ধরনের খেলাধুলার পাশাপাশি দেশীয় খেলাগুলোকেও এগিয়ে নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধনমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বিকালে বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৩’ এবং ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৩’ এর চূড়ান্ত পর্যায়ের খেলা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ তাগিদ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খেলাধুলা মানুষের শারীরিক ও মানসিক শক্তি জোগায়। যখনই সরকারে এসেছি তখনই আমি চেষ্টা করেছি খেলাধুলার প্রতি আমাদের ছেলে-মেয়েদের আরও বেশি অনুরাগী করতে। কারণ খেলাধুলা মানুষের শারিরীক ও মানসিক শক্তি দেয়। দেশপ্রেম শেখায়, আনুগত্য শেখায় এবং সে সঙ্গে দেশেপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে। আমি চাই আমাদের ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা, শরীর চর্চা, সাংস্কৃতিক চর্চার মধ্য দিয়ে নিজেদের উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে।

সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খেলাধুলায় আমাদের ছেলে-মেয়েরা যেন আরও বেশি আগ্রহী হয়ে অংশগ্রহণ করে, আমাদের দেশীয় খেলাধুলাগুলোকেও সমানভাবে সুযোগ দিতে হবে। কারণ দেশীয় খেলাগুলোর মধ্য দিয়ে আমাদের ছেলে-মেয়েদের আরও মেধা বিকাশের সুযোগ হবে। আজকে আমাদের এ খেলাধুলার মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। সারা বিশ্বের কাছে পরিচিত করতে পারি। আমাদের ক্ষুদে ফুটবল খেলোয়াড়রা যারা আজকে এখান থেকে শুরু একদিন তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের জন্য আরও বেশি সম্মান বয়ে নিয়ে আসবে।

খেলাধুলা প্রসারে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে টানা চারবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছেলে-মেয়েরা সারা বছর ধরে যেন খেলাধুলা করতে পারে সে জন্য তার সরকার প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করছে। এছাড়া প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিকদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করছে।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই আয়োজন যারা করেছেন তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি সত্যি খুব চিন্তিত ছিলাম যে, এই প্রচণ্ড রোদে আমাদের ছেলে-মেয়েরা খেলছে তাদের শারীরিক দিক থেকে কোনোরকম অসুবিধা না হয়। আয়োজকরা অবশ্যই সেদিকে খেয়াল রাখবেন। যারা সাফের টুর্নামেন্টে খেলেছে সেখানে বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট, যারা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে খেলা শুরু করেছিল সেই খেলোয়াড়রা সেখানে বিশেষ অবদান রেখেছে এবং পাঁচজন খেলোয়াড় এখান থেকেই উঠে এসেছে। কাজেই আমাদের ভবিষ্যতের জন্য একটা বিরাট সম্ভাবনা রয়ে গেছে। আমাদের যারা খুদে ফুটবলার আমি সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমরা সমস্ত উপজেলায় একটা করে মিনি স্টেডিয়াম করে দিচ্ছি, যাতে শুধু বিদ্যালয়ের মাঠ নয়, প্রত্যেকটা উপজেলায় খেলাধুলার সুযোগ তৈরি হয়, সেই ব্যবস্থা করেছি।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের নাম ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৩ এ রানার্সআপ হয়েছে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার তালিমগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার চর গোলাপবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তারা ২-১ গোলে চ্যাম্পিয়ন হয়। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ-২০২৩ এ রানার্সআপ হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার টেপুরগাড়ি বিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ৩-১ গোলে দলটি চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০২৩ সালের এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল ৬৫ হাজার ৩৫৪টি স্কুলের ১১ লাখ ১১ হাজার ১৮ জন শিক্ষার্থী। সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো নিয়ে ২০১০ সাল থেকে হচ্ছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ। এর এক বছর পর চালু হয় বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ।