ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কাতারের আমিরের বৈঠক

বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ কামনা

বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ কামনা

বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (এসইজেড) কাতারের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, খাদ্য সরবরাহের চেইনগুলো-উৎপাদন থেকে ব্যবহার পর্যন্ত-কৃষি-উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ, খাদ্য প্যাকেজিং, স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার, সার উৎপাদনসহ বিভিন্ন খাতে ও বিনিয়োগকে স্বাগত জানাবে বাংলাদেশ।

ঢাকায় সফররত কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির সাথে আজ দুপুরে বঙ্গভবনে এক সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এই আহ্বান জানান। বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন গণমাধ্যমকে ব্রিফ করেন।

উপসাগরীয় অঞ্চলে কাতারকে বাংলাদেশের একটি মূল্যবান উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, আমিরের সফর এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত ১০টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) আগামী দিনে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরো সম্প্রসারিত ও গভীরতর করবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার বিদেশী বিনিয়োগের জন্য ১০০টি অর্থনৈতিক বিশেষ অঞ্চল স্থাপন করেছে। কাতারের বিনিয়োগকারীরা পেট্রো-কেমিক্যাল, জ্বালানি, মেশিনারিজ, তথ্য-প্রযুক্তি, ইলেকট্রনিক্স, সিরামিক, কৃষি-ব্যবসা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের মতো কিছু ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রণোদনা পেতে পারে এবং সহায়তা করতে পারে।’

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন প্রায় ৩.৭৫ লাখ বাংলাদেশিকে কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়ার জন্য কাতার সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, এই জনবল কাতার এবং বাংলাদেশ উভয় দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রতিনিয়তই অবদান রাখছেন।

কাতারের আমিরকে আরো তরুণ, দক্ষ ও আধা-দক্ষ জনশক্তি, আইটি বিশেষজ্ঞ, পেশাদার প্রযুক্তিবিদ নিয়োগের আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।

বাংলাদেশকে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) দেওয়ার জন্য কাতার সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রপতি কাতারের কাছে দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি সহায়তা চেয়েছেন।

তিনি বলেন, বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে উভয় পক্ষকে আরও বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। রাষ্ট্রপতি চলমান ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আলোচনার সুবিধার্থে কাতারের (মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে) প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

কাতারের আমির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন।

তিনি আশ্বাস দেন যে, আগামী দিনেগুলোতে বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

কাতারের আমির বলেন, কাতার এবং বাংলাদেশ স্বাক্ষরিত বিভিন্ন চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকসমূহ দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে আরো কার্যকরি ভূমিকা রাখবে।

সাক্ষাৎকালে, উভয় নেতা সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তাদের কুশল বিনিময় করেন এবং আনন্দ প্রকাশ করেন যে এই সফর বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে বহুমুখী অংশীদারিত্বকে আরো জোরদার করার উপায় নির্ধারণ করবে।

বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, পররাষ্ট্র সচিব এবং বঙ্গভবনের সংশিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে কাতারের প্রতিনিধি দলে ছিলেন-আমিরি দেওয়ান প্রধান শেখ সৌদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন হামাদ আল-থানি, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোলতান বিন সাদ আল-মুরাইখি এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত কাতারের রাষ্ট্রদূত সেরায়া বিন আলী আল-কাহতানি।

বঙ্গভবনের ক্রেডেনশিয়াল হলে বৈঠক শেষে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন কাতারের আমির ও তার সফরসঙ্গীরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, উপদেষ্টা ও কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি এই ভোজে অংশ নেন। কাতারের আমিরের সম্মানে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত