দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করে বাংলাদেশ ও কাতার বন্ধুত্বের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে গতকাল বন্ধুপ্রতিম দুই দেশ পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে ১০টি নথি স্বাক্ষর করেছে, যার মধ্যে পাঁচটি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একান্ত এবং এরপর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠকে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক করে দুই দেশ। এ সময় দ্ইু দেশের নেতা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন।
যে পাঁচ বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে : বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে আইনি ক্ষেত্রে সহযোগিতা চুক্তি; পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা সম্পর্কিত চুক্তি; কাতার ও বাংলাদেশের মধ্যে আয়ের ক্ষেত্রে দ্বৈত কর পরিহার ও কর ফাঁকি রোধে চুক্তি; সাগর পথে পরিবহন চুক্তি এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) ও কাতার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (কিউসিসিআই) মধ্যে যৌথ ব্যবসা পরিষদ (জেবিসি) গঠনে চুক্তি।
পাঁচটি সমঝোতা স্মারক হলো : বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে ক্রীড়া ও যুব ক্ষেত্রে সহযোগিতাবিষয়ক সমঝোতা স্মারক; কাতার ও বাংলাদেশের শ্রম মন্ত্রণালয়ের মধ্যে জনশক্তি কর্মসংস্থান (শ্রম) ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক; বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতাবিষয়ক সমঝোতা স্মারক; বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে শিক্ষা, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য সমঝোতা স্মারক এবং কাতার পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি মাওয়ানি কাতার ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক।
আমিরের নামে সড়ক : অনুষ্ঠানে রাজধানী ঢাকার একটি সড়ক ও পার্কের নামকরণ করা হয় কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির নামে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন মিরপুরের কালশী এলাকায় নির্মিত পার্কটি এবং মিরপুর ইসিবি চত্বর থেকে কালশী ফ্লাইওভার পর্যন্ত সড়কটি কাতারের আমিরের নামে নামকরণ করা হয়। বর্তমানে সড়ক ও পার্কটি যথাক্রমে শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এভিনিউ ও শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি পার্ক নামে পরিচিত।
এর আগে সকাল সোয়া ১০টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কাতারের আমির পৌঁছালে টাইগার গেটে তাকে ফুল দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাদের মধ্যে প্রথমে একান্ত বৈঠক এবং এরপর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর শেষে আমির বঙ্গভবনের উদ্দেশে যাত্রা করেন এবং রাষ্ট্রপতি তাকে অভ্যর্থনা জানান। দুপুরে বঙ্গভবনের দরবার হলে কাতারের আমিরের সম্মানে মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। দুই দিনের সফর শেষে গতকাল সন্ধ্যায় বিশেষ বিমানে ঢাকা ছাড়েন কাতারের আমির। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান।
গত সোমবার বিকাল ৫টার দিকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন কাতারের আমির। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে কাতারের আমিরের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেন।
