ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠকে সিইসি

সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে ব্যর্থ হলে ক্ষুণ্ণ হতে পারে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা

সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে ব্যর্থ হলে ক্ষুণ্ণ হতে পারে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা

উপজেলা নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, যে কোনো মূল্যে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হবে। সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে ব্যর্থ হলে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ক্ষুণ্ণ হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষ্যে সব বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক, জেলা প্রশাসক, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠক হয়। তিন ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে সভায় নির্বাচন কমিশনারা, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

স্বাগত বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, দেশের নির্বাচনে আবেগ অনুভূতির জন্য কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়। ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। যে কোনো মূল্য নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হবে। এই নির্বাচনে ব্যর্থ হলে বিগত সংসদ নির্বাচনে যে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে তা ক্ষুণ্ণ হতে পারে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র আছে তা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজেলা নির্বাচনে অধিক সতর্কতা অবলম্বনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে ইসি। একইসঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনেরও নির্দেশনা দিয়েছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।

ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে একটি বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় নির্বাচন কমিশনার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পুলিশের আইজিপি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সবার আলোচনার বিষয় ছিল সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য মাঠপর্যায়ে কী ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে, আর কী সহায়তা দরকার সেটা।

ইসি সচিব বলেন, প্রত্যেকেই তাদের নিজ নিজ জেলায় কী সমস্যা আছে তা বলেছেন। পার্বত্য জেলাগুলোয় তিনদিনের পরিবর্তে পাঁচদিনের সম্মানী ভাতা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। কমিশন সেটা সম্মত হয়েছে। প্রতি ইউনিয়নে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলায় ২ থেকে ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। এছাড়া প্রয়োজনে অতিরিক্ত জনবল দেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকরা পরামর্শ দিয়েছেন ভোটের দিন সকালে ব্যালট গেলে অতিরিক্ত বাজেটের প্রয়োজন হবে। কমিশন সেটা বিবেচনা করবে বলে আশ্বস্ত করেছে। মূলত মাঠ প্রশাসনে যাতে সমন্বয়ের মাধ্যমে সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়া যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যানরা স্বপদে থেকে নির্বাচন করা যাবে বলে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন। কমিশন আপিল করবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, আদেশের কপি এখনও পাইনি। পেলে আপিল করা হবে।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, জেলায় জেলায় কোর কমিটি মিটিং করে জানালে সে অনুযায়ী অতিরিক্ত ফোর্স দেওয়া হবে। তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা যেভাবে নিরপেক্ষতা, সততা, নিষ্ঠার সঙ্গে যে দায়িত্ব পালন করেছেন, সেই ধারাবাহিকতা যেন অব্যাহত থাকে।

জাহাংগীর আলম বলেন, তারা চ্যালেঞ্জের কথা বলেনি। তারা যেটা বলেছে স্থানীয় নির্বাচনে যেহেতু প্রার্থীর সংখ্যা বেশি থাকে, সেখানে প্রতিযোগিতাটা বেশি হবে। এজন্য তারা আইনশৃঙ্খলা সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য বলেছে। সহিংসতার আশঙ্কা করেনি। এ বিষয়টা গোয়েন্দা রিপোর্টে থাকে। কোথাও কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পার্বত্য জেলার নির্বাচনে সতর্কতার জন্য অধিক সতর্কতা অবলম্বের জন্য বলা হয়েছে। মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব নিয়ে ইসি সচিব বলেন, আচরণবিধি যাতে সবাই যথাযথভাবে প্রতিপালন করে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তারা অনুরোধ করেছেন। কমিশনও সেটা আশ্বস্ত করেছে যে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবেন। আগামী ৮ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত চার ধাপে দেশের পৌনে ৫০০ উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত