ওবায়দুল কাদের

পাকিস্তান প্রশংসা করলেও বিএনপির চোখে পড়ে না

প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা পাকিস্তান করলেও দেশের সরকারবিরোধীদের উন্নতি চোখে পড়ে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল উন্নয়ন দেখতে পায় না। তারা দিনের আলোতে রাতের অন্ধকার দেখে। দেশের উন্নয়ন নিয়ে এত হীন মনোবৃত্তির পরিচয় তারা দিচ্ছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে তাদের বাস্তবতা বোঝা উচিত।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের উন্নতি ও উচ্চতা দেখে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ লজ্জিত হন। তখন পূর্ব পাকিস্তানকে তাদের কাছে মনে হতো বোঝা। এখন সে বোঝাই অনেক উন্নয়নে এগিয়ে গেছে। সে উন্নয়ন দেখে তিনি লজ্জিত হন। বিএনপি যতটা অপপ্রচার করে, তাদের শাহবাজ শরিফের বক্তব্য থেকে প্রকৃত সত্য শিক্ষা নেওয়ার অনেক কিছু আছে।

ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, সারাবিশ্ব যুদ্ধ সংঘাতে ভয়ংকর পরিস্থিতির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি- রাশিয়া-ইউক্রেন, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ পৃথিবীকে উত্তপ্ত করে রেখেছে। বিশ্ব জনমতকে উপেক্ষা করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু রাফায় আগ্রাসী অভিযান শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের নেত্রী যুদ্ধের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে চলছেন। সকল প্রকার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ও এ যুদ্ধকে না বলার জন্য বিশ্বের সকল নেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন।

‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি’ যুক্তরাষ্ট্রের এমন প্রতিবেদনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, সারা পৃথিবীতে যেভাবে মানবাধিকারের অবনতি হচ্ছে, আজকে যুক্তরাষ্ট্র কথা বলছেন। তাদের ম্যাথিউ মিলার, জন কিডনি এরা এইসব নিয়ে কথা বলছেন হোয়াইট হাউসে। আমার বক্তব্য হচ্ছে- তাদেরই পাশে গাজায় ইসরায়েল যা করছে, সেটা মানবাধিকারের কোন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে? ১৪ হাজার শিশু, ৩৫ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং প্রতিদিনই হত্যাকাণ্ড হচ্ছে।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার এখনো সময় আছে। যে কোনো সময় প্রত্যাহার করতে পারে। শেষটা দেখেন। দলের নির্দেশ অমান্য হলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এমন কথা কিন্তু আমি বলেছি। কাউকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে আওয়ামী লীগ বাধ্য করতে পারে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনটা করলে প্রশংসা করবেন? আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ আছে সবসময় একটা উলটা প্রশ্ন করতে অভ্যস্ত। আমাদের কৌশল নিয়ে আপনার কথা বলার দরকার নেই। নির্বাচন ঘিরে সিইসির সংঘাতের শঙ্কার বিষয়টি আওয়ামী লীগ কীভাবে দেখছে, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কাছে। উত্তরে তিনি বলেন, সংঘাতের আশঙ্কা হয়ত করতে পারেন। সংঘাত যেন না হয়, সেটা দেখার জন্য আমাদের দায়িত্ব আছে, আমাদের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে। বিএনপির আন্দোলন নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, গণঅভ্যুত্থান থেকে লিফলেট বিতরণে নেমে আসা এটা কি আন্দোলনের উত্তাল হবার লক্ষণ? না আন্দোলন ধীরে ধীরে ফিলড আউট হচ্ছে এমন লক্ষণ? উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি থেকে অংশ নেওয়া ৬৭ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করার বিষয়ে এক প্রশ্নে কাদের বলেন, আমরা এখানে সমর্থনও করছি না, বিরোধিতাও করছি না। বিএনপির ব্যাপার বিএনপি দেখবে।

সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত এক নারীনেত্রীর কাছ থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদকের ১০ লাখ টাকা দাবি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, এইটার সত্যতা কি? ফোন রেকর্ড আছে। প্রমাণ পেলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় নন্দী, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ।