তীব্র গরমে গলে যাচ্ছে শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কের পিচ

প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

তীব্র গরমে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। মানুষের সঙ্গে হাঁসফাঁস দেখা দিয়েছে পশু-পাখির মধ্যেও। তীব্র তাপপ্রবাহে শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কের বালিবাড়ির মোড় থেকে নরসিংহপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে গলে যাচ্ছে বিটুমিন (সড়কের পিচ)। সরেজমিন দেখা যায়, শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কের ভেদরগঞ্জ উপজেলার বালিবাড়ির মোড় থেকে নরসিংহপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেজা। ১৭ কিলোমিটারের এই সড়কটির প্রায় ১৫টি স্থানে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে বিটুমিন গলে সড়কটি ভিজে গেছে। ভেজা অংশ দিয়ে গাড়ি চালাতে গেলে টায়ারের সঙ্গে বিটুমিন লেগে যাচ্ছে। ভেজা স্থান দিয়ে ট্রাকসহ যানবাহন ধীর গতিতে চলাচল করছে। এছাড়া মোটরসাইকেল, রিকশা, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক বিটুমিন উঠে যাওয়া অংশ এড়িয়ে চলাচল করছে। বিটুমিন গলে যাওয়ায় সড়কে দুর্ঘটনা এড়াতে ধীরগতিতে যানবাহন চালাচ্ছেন চালকেরা। এছাড়া বিটুমিন গলে যাওয়ার ফলে সড়কের পাথর সরে গিয়ে সড়কটি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে সওজ বিভাগের প্রকৌশলী জানিয়েছেন, সড়কের বিটুমিন গলে যায়নি, তাপপ্রবাহের কারণে ব্লিডিং হয়েছে। শরীয়তপুরের সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিগত এক সপ্তাহের অধিক সময় ধরে শরীয়তপুরের তাপমাত্রা ৩৭ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে। প্রচণ্ড রোদে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় সড়কে যানবাহন চলাচলে সমস্যা দেখা দিয়েছে। শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়ক দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যানবাহন চট্টগ্রাম অঞ্চলে চলাচল করে। সদর উপজেলার মনোহর বাজার মোড় থেকে মেঘনা নদীর তীরবর্তী ভেদরগঞ্জ উপজেলার নরসিংহপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত ৩১ কিলোমিটারের সড়কটিতে অধিগ্রহণের কাজ চলমান রয়েছে। সড়কটির বালিবাড়ীর মোড় থেকে নরসিংহপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার অংশ ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে গত বছরের জুন থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বিটুমিন দিয়ে কার্পেটিং করা হয়েছিল। বালিবাড়ির মোড় থেকে নরসিংহপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত সড়কের বিটুমিন গলে যায়নি। তাপমাত্রা যখন অতিরিক্ত পরিমাণে বেড়ে যায়, তখন ভালো মানের বিটুমিনের ব্লিডিং হয়। বাংলায় এটাকে ফুলে যাওয়া বলে। অধিক তাপপ্রবাহের কারণে সড়কটির বিটুমিনের ব্লিডিং হয়েছে। দাবদাহ কমে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলোতে আরেক লেয়ার বিটুমিন দিয়ে দেওয়া হবে। ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখীপুর থানার স্টেশন বাজার এলাকার রুহুল আমিন জীবিকার তাগিদে সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন শরীয়তপুর জজকোর্টে যাতায়াত করেন। তিনি বলেন, বিটুমিন গলে যাওয়ার বিষয়টি গত দুই তিন ধরে লক্ষ্য করেছি। সড়কের বিটুমিন গলে যাওয়ার কারণে মোটরসাইকেলের চাকার সঙ্গে বিটুমিন আটকে যাচ্ছে। সড়কটিতে চলাচল করা এখন জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এরপর থেকে অন্য সড়ক ব্যবহার করবো। আমান আহমেদ নামের একজন শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কে মাইক্রোবাস চালান। শরীয়তপুরের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন বলেন, সড়কের বিটুমিন গলে যায়নি। যেকোনো সড়কে যখন ভালো মানের বিটুমিন ব্যবহার করা হয়, তখন তাপমাত্রা বেড়ে গেলে ব্যবহৃত বিটুমিনের ব্লিডিং হয়। যাকে বাংলায় বলতে পারি ফুলে যাওয়া। তাপপ্রবাহ কমে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে নতুন করে বিটুমিনের লেয়ার দিয়ে দেওয়া হবে। শুধু শরীয়তপুর নয়, গরমে সারা দেশের সড়কেরই একই অবস্থা।