ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

স্বস্তির বৃষ্টিতে শীতল হাওয়ায় জুড়াল প্রাণ

স্বস্তির বৃষ্টিতে শীতল হাওয়ায় জুড়াল প্রাণ

টানা তীব্র তাপদাহে সারা দেশে জনজীবন ছিল বিপর্যস্ত। বিপর্যস্ত ছিল রাজধানীবাসীও। অবশেষে বহুল আকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা পেয়েছে রাজধানীবাসী। গত রোববার রাতে তীব্র তাপদাহে জনজীবন ত্রাহি অবস্থার মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নামে স্বস্তির বৃষ্টি। কোথাও কোথাও মৌসুমের প্রথম শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। তীব্র গরমের নাভিশ্বাস থেকে এই ঝড়-বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরেছে রাজধানীবাসীর। বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি দিয়ে স্বস্তির কথা জানান অনেকে। সেই বৃষ্টির পানিতে ভিজে শরীর-মন শীতল করতে অনেকেই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন রাস্তায়। অনেকে ছাদে উঠে ভিজেছেন বৃষ্টির পানিতে। বৃষ্টি যেন জীবনের গতি আরো ছন্দময় করে দিয়েছে। আকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিতে মন-প্রাণ জুড়িয়েছেন নগরবাসী।

গত রোববার রাত সাড়ে ৯টার পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় বাতাস বইতে থাকে। ফলে নগরের তাপমাত্রা কিছুটা প্রশমিত হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ঝড়ো বাতাস বয়ে যাওয়ার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে নামে স্বস্তির বৃষ্টি। শুধু বৃষ্টি নয়, সঙ্গে কালবৈশাখি ঝড়। কোথাও কোথাও শিলাও পড়েছে। ঝড় থেমে গেলেও রাত ১১টার পরও বৃষ্টি হচ্ছিল।

এর আগে টানা কয়েক সপ্তাহ প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীতে বৃষ্টি হয়। এরপর ধীরে ধীরে কমতে থাকে নগরীর তাপমাত্রা। গত রোববার দুপুরে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এছাড়া গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার (গতকাল) থেকে দেশের ৮ বিভাগেই ঝড়-বৃষ্টি বাড়তে পারে। এতে তাপপ্রবাহের তীব্রতা আরো কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

গত রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসের বলা হয়, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ সময় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। আবহাওয়া অফিস জানায়- ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা অধিকাংশ জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে।

এদিকে, রোববার রাতে বৃষ্টির দেখা পেয়ে গভীর রাতে বৃষ্টিতে ভিজতে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, কয়েক দিনের তীব্র গরমে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলাম। শরীরে ঘামাচি উঠে গেছে। বৃষ্টির নামার পর আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। বৃষ্টির পানিতে ভিজে শরীর ও মন শীতল করে নিলাম। তিনি আরো বলেন, বাসায় এসি নেই। যারা এসির মধ্যে ছিলেন তারাতো ঠান্ডায় ছিলেন। তারা বৃষ্টির মর্যাদা বুঝবেন না। বৃষ্টির পানিতে ভেজার আনন্দও পাবেন না। বৃষ্টির ফলে পরিবেশ অনেকটা শীতল হয়েছে। খুব ভালো লাগছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বৃষ্টিতে ভিজছিলেন কয়েকজন শ্রমিক। ভিজে ভিজে আনন্দ করছিলেন তারা। তাদের মধ্যে একজন বলেন, খুব ভালো লাগছে বৃষ্টিতে ভিজে। শরীর-মন দুটোই ঠান্ডা হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, আল্লাহ চাইলে সব পারেন। দেখলেন তো। এদিকে গত রোববার ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টি হয়েছে। রাজশাহী, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত