আলোচনায় থাকছে উন্নয়ন সহযোগিতা বৃদ্ধি

ঢাকায় আসছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু

প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ফের বাংলাদেশ সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। এর আগে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগমুহূর্তে ঢাকায় সফরে এসেছিলেন তিনি। ওই সফর কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পাড়ায় ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছিল। এবারও ডোনাল্ড লু’র ঢাকাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রায় পাঁচ মাস পরে ডোনাল্ড লু’র আবারও ঢাকার সফর বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্কের বেশকিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে। ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র ডোনাল্ড লুর ঢাকা সফরের তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র বলেছে, চলতি মাসের মাঝামাঝিতে ঢাকা সফর করতে পারেন লু। তিনি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকায় আসবেন। তবে শেষ পর্যন্ত সফরটির দিনক্ষণ এবং কর্মসূচিতে সংযোজন-বিয়োজনের সম্ভাবনা থাকায় খোলাখুলি সব বলতে পারেনি সরকারি এক কর্মকর্তা।

সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং নতুন সরকার গঠনের পরপরই বাইডেন প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বাংলাদেশ সফরের আলোচনা শুরু হয়। নির্বাচন প্রশ্নে ওয়াশিংটনের স্বতন্ত্র অবস্থান থাকলেও দুই দেশের মধ্য বিদ্যমান বহুমাত্রিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা সফর করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার। আর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ১৬ জানুয়ারি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলকের সঙ্গে সচিবালয়ে তার দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সাক্ষাৎকালে তারা দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়, বিশেষ করে ডেটা নিরাপত্তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, আইওটি, রোবোটিকস ও ডাক ব্যবস্থা আধুনিকায়নে উভয় দেশ কীভাবে একসঙ্গে কাজ করতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনা করেন।

জানা গেছে, সাউথ এশিয়ায় আলোচিত ডোনাল্ড লু’র ঢাকায় এটি হবে চতুর্থ সফর। একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিতে বাংলাদেশের জন্য স্বতন্ত্র মার্কিন ভিসানীতি ঘোষণাসহ নানামুখী তৎপরতার পার্ট হিসেবে গত জুলাইতে তিনি সর্বশেষ বাংলাদেশ সফর করেন। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার সঙ্গী হয়ে এসেছিলেন ডোনাল্ড লু। ভোট-পূর্ব রাজনৈতিক মাঠের বাড়তি উত্তাপের কারণে উজরা জেয়া ও ডোনাল্ড লু’র যুগল সফরটি দেশ ও দেশের বাইরে বেশ আলোচনায় ছিল। উজরা জেয়া ও ডোনাল্ড লু সেদিন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন। নির্বাচন কোন ফর্মে হবে- তা নিয়ে যে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো চাওয়া নেই, সেটি তাদের সফরে স্পষ্ট করা হয়েছিল। মূলত বিষয়টি বাংলাদেশের নেতৃত্বের ওপর ছেড়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। আলোচিত সেই সফরে প্রভাবশালী ওই কর্মকর্তা খোলাসা করেই বলেছিলেন, ‘আসুন বাংলাদেশের মানুষকে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ দিই।’ জুলাইয়ের ঢাকা সফরের পরও উজরা জেয়া ও ডোনাল্ড লু’র সঙ্গে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ নিয়েই আলোচনা হয়েছে। সর্বশেষ গত মার্চে বাংলাদেশের ৫৪তম ‘স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪’ উদযাপন উপলক্ষ্যে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেন ডোনাল্ড লু। ওই বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি-আমেরিকানদের কথা উল্লেখ করে লু বলেন, তাদের শক্তি ও অসাধারণ কঠোর পরিশ্রম দুটি মহান জাতির মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছে।