ড. হাছান মাহমুদ

তিস্তা প্রকল্পে অর্থায়ন করতে চায় ভারত

প্রকাশ : ১০ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা। গতকাল সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রী জানান, ‘ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে সাক্ষাতে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আন্তরিক আলোচনা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। এই সম্পর্ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।’

ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিস্তায় আমরা একটা বৃহৎ প্রকল্প নিয়েছি। ভারত সেখানে অর্থায়ন করতে চায়। আমি বলেছি, তিস্তায় যে প্রকল্পটি হবে, সেটা আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী হবে। আমাদের প্রয়োজন যেন পূরণ হয়।’

কানেক্টিভিটি নিয়ে এবং বাংলাদেশিদের জন্য ভারতীয় ভিসা সহজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রতি বছর বাংলাদেশের ১৬ থেকে ১৭ লাখ মানুষের জন্য ভিসা ইস্যু করে ভারত। বিশ্বে সর্বোচ্চ ভিসা ভারত ইস্যু করে বাংলাদেশে। অনেক সময় ভিসা পেতে অপেক্ষা করতে হয়। সেটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, বাংলাদেশে ভারতীয় মিশনের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য তারা আরো লোকবল নিয়োগ করছেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে উদ্ভাবনী প্রক্রিয়ার কথা আলোচনা করেছি। অনলাইনে আবেদনের কথা বলেছি যেন সহজে মানুষ ভিসা পায়। তারা বিষয়টি আন্তরিকতার সঙ্গে দেখছেন।’

শক্তির উৎসের কানেক্টিভিটি নিয়ে আলোচনার কথা উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘আমরা ফিজিক্যাল কানেক্টিভিটি নিয়ে আলোচনা করেছি। সেটা অনেক দূর এগিয়েছে। বিশেষ করে নেপাল ও ভুটানকে ট্রানজিট দেওয়া এবং এ দুই দেশ থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা। ইতোমধ্যে নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করার ক্ষেত্রে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে। ট্যারিফ নিয়েও আলোচনা অনেকটা চূড়ান্ত হয়েছে। সেটি আমাদের ক্রয় কমিটিতে যাবে। সেটি হলে ভারতের ওপর দিয়ে আমরা নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করতে পারব।’

বৈঠকে সীমান্ত হত্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নন-লেথাল (প্রাণঘাতী নয়) এমন অস্ত্র ব্যবহার করার ওপর আমরা গুরুত্বারোপ করেছি। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন, তারা তাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছেন। তাদের আন্তরিকতার অভাব নেই। এটি নিয়ে দুই দেশের সরকারি ও রাজনৈতিক পর্যায়ে আন্তরিকতার কোনও ঘাটতি নেই।’

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনেক আগে থেকে ভারত সফরের কথা রয়েছে। ভারতে যেহেতু নির্বাচন, সেটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কখন সফর হবে, সেটি নির্ধারণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভারতে নির্বাচনের পর সরকার গঠন হবে। তারপর প্রধানমন্ত্রীর সফর কখন হবে, সেটা ঠিক হবে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফর সূচি চূড়ান্ত করতে দুই দিনের সফরে গত বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা পৌঁছেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা। একটি বিশেষ ফ্লাইটে কোয়াত্রা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া) এটিএম রোকেবুল ইসলাম এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা তাকে স্বাগত জানান।

তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের মধ্যদিয়ে সফরের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ছাড়া পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ মোমেনের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি।