ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় চিরশায়িত হলেন পাইলট জাওয়াদ

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় চিরশায়িত হলেন পাইলট জাওয়াদ

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বিমান বাহিনীর পাইলট আসিম জাওয়াদ। গতকাল জুমার নামাজের পর শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে তৃতীয় জানাজা শেষে বিকাল ৩টায় মানিকগঞ্জ শহরের সেওতা কবরস্থানে তার নানার কবরে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তার মরদেহ বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি হেলিকপ্টার মানিকগঞ্জ শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে অবতরণ করে। বিমান বাহিনীর সদস্যরা হেলিকপ্টার থেকে তার কফিনবন্দি মরদেহ কাঁধে করে নামিয়ে আনেন। এরপর নিহত জাওয়াদকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। ছেলের কফিনবন্দি মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পরেন মা নিলুফা খানমসহ স্বজনরা। সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।

নিহত পাইলট আসিম জাওয়াদ সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের ধুলট গ্রামের ডা. আমান উল্লার ছেলে। তিনি মৃত্যুকালে স্ত্রী, ছয় বছরের কন্যা আইজা ও এক পুত্র সন্তান রেখে গেছেন।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পতেঙ্গার বানৌজা ঈসা খাঁ হাসপাতালে (নেভি হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাইলট আসিম জাওয়াদ মারা যান। এর আগে ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ইয়াক-১৩০ নামের একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান চট্টগ্রামের পতেঙ্গা জহুরুল হক বিমান ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে। এর কিছুক্ষণ পরই বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয় এবং বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। পতেঙ্গা এলাকার কর্ণফুলী নদীতে বিমানটি বিধ্বস্ত হওযার আগেই বৈমানিক উইং কমান্ডার সোহান ও বৈমানিক স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ প্যারাস্যুট দিয়ে নদীতে নামেন। পরে তাদের উদ্ধার করে পতেঙ্গা নেভি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিমানের উইং কমান্ডার সোহান জহুরুল হক ঘাঁটির মেডিকেল স্কোয়াড্রনে চিকিৎসাধীন আছেন। অপরদিকে বিমান বিধ্বস্তর ঘটনায় বৈমানিক আসিম জাওয়াদ পতেঙ্গার নেভি হাসপাতাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১২টার দিকে মারা যান।

এদিকে আমাদের সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি-মো: খোকন জানান নিহত আসিম জাওয়াদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার গোপালপুর গ্রামে। ২০ মার্চ ১৯৯২ সালে তার জন্ম হয় সাটুরিয়া উপজেলার গোপালপুর গ্রামে এবং ছোটবেলার কিছু সময় কেটেছে ওই গ্রামে। এক সময় তারা মানিকগঞ্জ চলে আসেন। তার বাবা-মা জেলা শহরের গোল্ডেন টাওয়ারে নিজস্ব ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেন। বাবা-মার একমাত্র সন্তান ছিলেন আাসম জাওয়াদ। তবে চাকরিজনিত কারণে আাসম জাওয়াদ স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ চট্টগ্রামে থাকতেন। তার এই অকাল মৃত্যুতে গ্রামের বাড়িতে বইছে শোকের মাতম। তার বাবা আমান উল্লাহ একজন চিকিৎসক আর মা নিলুফার খানম সাভার ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ছিলেন। তার স্ত্রীর নাম অন্তরা আক্তার।

নিহতের মামা সুরুষ খান বলেন, আসিম জাওয়াদ একজন চৌকস অফিসার ছিল। ছোটবেলা থেকেই সে বিমানবাহিনীতে যোগ দেবে এমন স্বপ্ন ছিল। স্ত্রী, ছয় বছরের মেয়ে আয়জা ও এক বছরের ছেলেকে নিয়ে তিনি চট্টগ্রামে থাকতেন। নিজের ট্রেনিং জীবনে সকল বিষয়ের শ্রেষ্ঠত্বের জন্য তিনি পেয়েছেন সোর্ড অফ অনার।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত