ওবায়দুল কাদের

আন্দোলনের নামে ফের সন্ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বিএনপি

প্রকাশ : ১১ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আন্দোলন ও নির্বাচন ঠোকাতে ব্যর্থতার পর বিএনপি আবারো আন্দোলনের নামে দেশে বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তিনি বলেন, যারা বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি করতে পারে, তারা দেশের বিরুদ্ধে অনেক কিছুই করতে পারে। এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথসভার শুরুতে এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির সমাবেশ মানেই অগ্নিসন্ত্রাস, বিশৃঙ্খলা ও রক্তপাত। কাজেই বিএনপির কাছে গোটা রাজধানীকে যতি তাদের ওপর ছেড়ে দিই তাহলে জনগণের জানমাল সুরক্ষায় সমস্যা হয়। সেজন্য আমাদের মাঠে থাকতে হয়। কোনো পাল্টাপাল্টি নয়, জনগণের সুরক্ষার জন্যই আওয়ামী লীগকে মাঠে থাকতে হয়। সমাবেশ থেকে সন্ত্রাস, নৈরাজ্যটাই বিএনপির রাজনীতি। তাই আমাদের সজাগ থাকতে হবে। বিএনপি সুযোগ পেলেই ফনা তুলে রাষ্ট্র ও জানমালের ক্ষতি করবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কারা পালায় আবারো তা প্রমাণিত হয়েছে, বিএনপি পালায়, তাদের নেতা রাজনীতি করবে না এমন মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়ে গেছে, দেশে ফেরার সাহস নেই। বিএনপি চলে রিমোট কন্ট্রোলে। এই রিমোট কন্ট্রোলে আন্দোলন সফল হয় না। ভোটারদের ভয় পায় বলেই বিএনপি নির্বাচনে আসে না। নির্বাচন নিয়ে তাদের দাবির কোনো যৌক্তিকতা নেই। যারা খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি করে তারা দেশের বিরুদ্ধে অনেক কিছুই করতে পারে।

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র আছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা কোনো সংঘাতে জড়াব না। বিএনপি আমলে কোনো স্থানীয় নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে, কোনো ধরনের ক্যাজুয়্যালিটি ছাড়া? এমন প্রশ্ন রেখে সড়কপুরি মানুষের মন্ত্রী বলেন, এবারের উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে, কোনো ধরনের সংঘাত হয়নি। এর কৃতিত্ব সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে দিতে হবে। এবারে যে ভোট পড়ছে খুব ভালো ভোট পড়েছে বলব না, মোটামুটি পড়েছে। এই নির্বাচনে বিএনপির ভোট বর্জনকে প্রত্যাখ্যান করে দলটির অনেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। দলটির কারো কথা কেউ শোনে না। ভুল আর ব্যর্থতার চোরাবালিতে আটকে থাকা বিএনপি কোনো কিছু আদায় করতে পারবে না। মুখে ফুলঝুরি ছড়ালেও ভেতরে তারা হতাশ। যতদিন তারা ইতিবাচক রাজনীতির ধারায় ফিরে না আসবে ততদিন তারা জনবিচ্ছিন্ন থাকবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতা গয়েশ্বর বলে দেশের জনগণকে নয়, পার্শবর্তী দেশকে খুশি করে টিকে আছে আওয়ামী লীগ। ভারত আমাদের প্রতিবেশী পরীক্ষিত বন্ধু। নির্বাচনের সময় তারা কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। ভারতকে খুশি করে নয়, জনগণের শক্তিতেই টিকে আছি। ভারতের দয়ায় নয়। পঁচাত্তরের পর কত বছর ক্ষমতায় ছিলাম না, তখন কি ভারত আমাদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল?

আগামী ১৭ই মে বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। দিবসটিকে ঘিরে সারাদেশে কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলো। বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনা ফিরে না এলে দেশে গণতন্ত্র থাকত না। যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হতো না। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদুৎ কেন্দ্র, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট হতো না। আওয়ামী লীগ সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অনেকটাই সফল। বিএনপির সময় মূল্যস্ফীতি হু হু করে বেড়েছিল।

ফিলিস্তিনে ইসরাইলের গণহত্যা নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে যুদ্ধাংদেহী ইসরাইল ফিলিস্তিনের রাফায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এই ইসরাইল সারাবিশ্বের জন্য আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ডক্টর আব্দুর রাজ্জাক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডক্টর হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, ডাক্তার দীপু মনিসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগসহ সহযোগী ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।