টঙ্গী পর্যন্ত যাচ্ছে মেট্রোরেল লাইন

যাতায়াতে বাঁচবে সময়

প্রকাশ : ১১ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্বের ঘনবসতি শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম ঢাকা। আর এই ঘনবসতি শহরে মানুষের যাতায়াত সহজ করতে মেট্রোরেল চালু করা হয়েছে। এটিতে একইসঙ্গে অনেকে যাতায়াতের পাশাপাশি যানজট নিরসনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্যবহারের দিক থেকে যাত্রীদের পছন্দের তালিকায় মেট্রোরেল অনেকটাই এগিয়ে থাকছে। মেট্রোরেলে যাতায়াতের সফলতার কারণে এবার টঙ্গী পর্যন্ত বর্ধিত হচ্ছে মেট্রোরেলের লাইন। ঢাকার গণপরিবহন ব্যবস্থা মেট্রোরেল বর্তমানে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যাত্রী আনা নেওয়া করছে। এ রুটের বর্ধিতাংশ গিয়ে ঠেকবে কমলাপুরে। অন্যদিকে উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে একটি পথ সাভারের আশুলিয়া যাওয়ার কথা ছিল। তবে নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী আপাতত টঙ্গী পর্যন্ত বর্ধিত হচ্ছে মেট্রোরেলের ওই লাইন। মেট্রোরেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সাভারের আশুলিয়া পর্যন্ত মেট্রোরেল যাওয়ার কথা। কিন্তু নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী টঙ্গী পর্যন্ত বর্ধিত হচ্ছে মেট্রোরেলের লাইন। এমআরটি লাইন-৬ নির্মাণের সময়ই দিয়াবাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পথ তৈরি করে রাখা হয়েছে ভবিষ্যতের কথা ভেবে। এরইমধ্যে বর্ধিত এ পথের সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। দ্রুতই নকশা চূড়ান্ত করে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে।’ পরিকল্পনা ছিল পথটি আশুলিয়া পর্যন্ত নেওয়ার। তবে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারণে নতুন এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এটি টঙ্গী রেলস্টেশন পর্যন্ত এই যুক্ত করা হবে বলে জানান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ।

তিনি বলেন, মূলত টঙ্গী রেলস্টেশন এবং সড়ক জংশনকে সংযুক্ত করতে পারলে ওই অঞ্চলের মানুষের সুবিধা বাড়বে। এরই মধ্যে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি শুরু হয়েছে। এ পথ চালু হলে টঙ্গী থেকে কমলাপুর পর্যন্ত যাত্রা পথ হবে ৪৮ মিনিটের।

দেশের প্রথম মেট্রোরেল উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলছে। যার মধ্য দিয়ে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে নতুন এক দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। প্রতিদিন মেট্রোরেলে মানুষ যাতায়াতের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। ৩৮ মিনিটেই মেট্রোরেলে করে উত্তরা থেকে সরাসরি যাওয়া যায় মতিঝিলে। মেট্রোরেলের আশপাশ এলাকার নানা পেশাজীবী ও সাধারণ বাসিন্দারা উচ্ছ্বসিত। টঙ্গী পর্যন্ত মেট্রোরেলের লাইন স্থাপন করা হলে যাত্রীদের যাতায়াতের আরো সুবিধা হবে।

বর্তমানে সকাল ৯টায় মেট্রোরেলে অফিসগামী যাত্রীদের ভিড় লাগে। টঙ্গীর বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী মো. জাকির অফিস করতে নিয়মিত মতিঝিল যান। তিনি বলেন, টঙ্গী থেকে বাসে করে উত্তরার দিয়াবাড়ি মেট্রোরেলের স্টেশনে আসতে হয়। সেখান থেকে প্রতিদিন মতিঝিলে যাই। টঙ্গীতে মেট্রোরেল স্টেশন হলে আমাদের মতো লাখ লাখ মানুষ সুবিধা পাবেন। অফিসে যেতে দেরি হবে না। অফিসে কোনো এক্সকিউজও দিতে হবে না। সময় মতোই হাজির হতে পারব।

সাধারণ গণপরিবহনে উত্তরা থেকে মতিঝিল যেতে অফিস আওয়ারে প্রায় দুই থেকে ৪ ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়। তবে মেট্রোরেলে করে প্রায় ৩৮ মিনিটের মধ্যে নির্বিঘ্নে চলে যেতে পারছে ঢাকার এক প্রান্তর থেকে আরেক প্রান্ত। এতে সময় অপচয় রোধের পাশাপাশি পেশাগত ও ব্যক্তিজীবনে যুক্ত হচ্ছে অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা। যা জীবনকে আরো ‘প্রোডাক্টিভ’ করে তুলছে যাত্রীদের।

নাজমুল হোসেন নামে মিরপুরের এক যাত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেলের কারণে নির্ধারিত সময়ে অফিসে যেতে পারছি। তাতে আগে যদি আমি একটি কাজ করতে পারতাম এখন দুটি কাজ করতে পারছি। আর সড়কে ভোগান্তির কারণে কাজের ক্ষেত্রে মেন্টালি অ্যাডজাস্ট করতে সমস্যা হতো, সেটা আর হয় না। এখন কাজেও মনযোগ বেড়েছে। পুরো ঢাকা শহরে মেট্রোরেল চালু করতে পারলে মানুষের যাতায়াতে আরো সুবিধা হবে।