ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বেনজীর-আজিজ প্রসঙ্গে কাদের

অপরাধ করে কেউ পার পাবে না

অপরাধ করে কেউ পার পাবে না

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। বিচার বিভাগ স্বাধীন, দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক স্বাধীন। সেখানে যদি কেউ অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত হয় আমরা কোন প্রটেকশন দিব? হোক সে সাবেক আইজিপি কিংবা সাবেক সেনাপ্রধান। অপরাধ করলে দেশের প্রচলিত আইনে শাস্তির মুখে সমর্পণ করা হবে। অপরাধী যত প্রভাবশালীই হোক শাস্তি তাকে পেতেই হবে। অপরাধের বিষয়ে সরকারের নীতি জিরো টলারেন্স।

গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনয়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো ব্যক্তি যত প্রভাবশালী হোক অপরাধ অপকর্ম করতে পারে। এখানে প্রশ্ন থেকে যায়, সরকার এ ব্যাপারে তাদের অপরাধ-অপকর্মে শাস্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকার সৎ সাহস দেখিয়েছে কি না। শেখ হাসিনার সরকারের সে সৎ সাহস আছে। বুয়েটে আবরার হত্যাকাণ্ডে যাদের দণ্ড দেয়া হয়েছে তারা সবাই ছাত্রলীগ। সরকার তাদের প্রটেকশন দিতে যায়নি। বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রেও সরকার কাউকে প্রটেকশন দেয়নি। ব্যক্তি অপরাধ করতে পারে। কিন্তু সরকার তাকে প্রটেকশন কেন দেবে? আমরা অপরাধীকে অপরাধী হিসেবেই দেখি। সে যতই প্রভাবশালী হোক অপরাধ করলে শাস্তি তাকে পেতেই হবে। ‘আওয়ামী লীগ দুঃশাসন ও জুলুম চালাচ্ছে’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুলের মানসিক ট্রমা মনে হয় ভয়ংকর পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। তিনি ও তার দলের নেতারা বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। তারা আন্দোলন সংগ্রামে ব্যর্থ। তাদের এদিকও নেই, ওদিকও নেই। বন্ধুরাও আগের মতো এসে তাদের উৎসাহিত করে না। আগে ঘুম থেকে উঠেই মির্জা ফখরুল মার্কিন দূতাবাসে হাজির হয়ে নাস্তা করতে যেতেন, রাতেও খুঁজে পাওয়া যেত না। বিদেশীরা ক্ষমতায় বসাবে সে কর্পূরও উড়ে গেছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কোনো সাধারণ নাগরিক জেল-জুলুমণ্ডহয়রানির মুখোমুখি হয়নি জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা পুলিশ মেরেছে, পুলিশ হাসপাতালে অগ্নি সংযোগ করেছে তারা তো অপরাধী। তাদের বিএনপি হিসেবে আটক করা হয়নি। আটক করা হয়েছে সন্ত্রাস, আগুন সন্ত্রাসে জড়িত থাকার অপরাধে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা অস্ত্রসহ আটকের পর তার পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। খুনিদের পক্ষে বিএনপির যে প্র্যাকটিস এখনো সেটা করে যাচ্ছে। বিএনপির সব নেতাই বাইরে। তাহলে তাদের কে নির্যাতন করছে?

সরকারের জনভিত্তি নেই বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ৪২ শতাংশের বেশি মানুষ ভোটকেন্দ্রে এসেছে। বাংলাদেশের এই হার অন্যান্য দেশের তুলনায় সন্তোষজনক। বিএনপির আমলে ১৫ই ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে বিবিসি জানিয়েছে ভোটার উপস্থিতি ছিল পাঁচ শতাংশ, আর তখনকার নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল উপস্থিতি ২১ শতাংশ। এখনকার নির্বাচনে উপস্থিতি তার দ্বিগুণ। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে নির্বাচন কমিশন বলেছে উপস্থিতি ৩৬ শতাংশের বেশি। আর দ্বিতীয় ধাপে ৩৭ শতাংশের বেশি। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা জনগণের প্রতিনিধি। আমরা জনগণের ইচ্ছায় দেশ শাসন করছি। বিএনপি পথ হারিয়ে পথহারা পথিকের মতো বেসামাল বক্তব্য দিচ্ছে। টিকটক, ফেসবুকে বিএনপি এত মিথ্যাচার ও নোংরাভাবে আমাদের আক্রমণ করে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে নোংরা ভাষায় আক্রমণ করে। এরপরও তারা বলে- সরকার নাকি তাদের ওপর জুলুম করছে। আসলে বিএনপির এসব বক্তব্য অবান্তর। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা অর্জন করেছে, দখল নয়। বিএনপি বলছে দখল। জনগণের ভোটে আমরা নির্বাচিত হয়েছি। নির্বাচনের পর পৃথিবীর অনেক দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে এবং একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। আমরা বিএনপিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিঠিটি পড়তে বলব।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় নন্দী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খানসহ অন্যরা। এর আগে নেত্রকোনা-১ (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মানু মজুমদারের মরদেহে শ্রদ্ধা জানায় আওয়ামী লীগের নেতারা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত