চোখ রাঙাচ্ছে এডিস মশা

প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আমিরুল ইসলাম অমর

বিগত দিনগুলোর চেয়ে এডিস মশা এবার সবচেয়ে বেশি চোখ রাঙাতে শুরু করেছে। ভয়াবহ রূপও নিচ্ছে ডেঙ্গু। নীরবে প্রাণ কেড়ে নেয়া ডেঙ্গু এবার মৌসুম আসার সঙ্গে সঙ্গে মরণ কামড়ও শুরু করে দিয়েছে। ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ। সব রেকর্ড ভেঙে গত বছরেই প্রাণ গেছে ১ হাজার ৭০৫ জনের। সমীকরণ রয়েছে, এ বছর আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে ডেঙ্গু। যার আভাস মিলেছে সরকারি তথ্যেও। তাই দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে চলতি বছরেও ডেঙ্গু বিপদ বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কীটতত্ত্ববিদরা। দেশে চলতি বছর গতবারের তুলনায় দ্বিগুণ ডেঙ্গু রোগী; মৃত্যুও দ্বিগুণের বেশি। এতে এডিস মশাবাহিত এই রোগ গত বছরের চেয়েও ভয়ংকর রূপে ফেরার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় রোগীর ভোগান্তি এড়াতে আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগীদের মধ্যে ৬ জন ভর্তি হয়েছেন ঢাকা মহানগরের হাসপাতালগুলোতে। এর বাইরে বরিশাল বিভাগে ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১১ জন, খুলনা বিভাগে ২ জন ও রাজশাহী বিভাগে ১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৭১৪ জন। তাদের মধ্যে ৩৩ জন মারা গেছেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ১ হাজার ৫৫ জন, যাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩৩৯ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। মার্চ মাসে আক্রান্ত হয়েছেন- ৩১১ জন; যাদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এপ্রিলে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০৪ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। মে মাসের ২৩ দিনে ৫০৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখে ২০০০ সাল থেকে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে এ রোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যুও হয় ওই বছর।

এবার ডেঙ্গুর মৌসুম আসার সঙ্গে সঙ্গে রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। গত বছরের তুলনায় এবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার দ্বিগুণ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা বলেছেন, ২০০০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে ৮৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু শুধু গত বছরই ডেঙ্গুতে ১ হাজার ৭০৫ জন মারা গেছেন। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি। তিনি আরো বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া না হলে চলতি বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব গত বছরের চেয়ে বেশি হওয়ার আশঙ্কা আছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঠিকঠাক মশা নিধন না করলে এবার পরিস্থিতি হবে আরো ভয়াবহ। ভেঙে যেতে পারে গত বছরের প্রাণহানির রেকর্ড। এ অবস্থায় প্রয়োজন জোর প্রস্তুতি। এমন পরিস্থিতিতে চলতি বছরের প্রস্তুতি নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ডেঙ্গু নিয়ে অত্যন্ত সজাগ আছি। সরকারের একার পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। নাগরিকদের মশা নিধনে সক্রিয় হতে হবে। এরমধ্যেই ডেঙ্গু রোগীদের যথাযথ ও সময়মতো চিকিৎসাসেবা দিতে দেশের সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, গত বছর যেভাবে ডেঙ্গুর বিস্তার ছিল এতেই বোঝা যায়, এবার আগে থেকেই সতর্ক না হয়ে কোনো উপায় নেই।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একই সঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশা নিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। গ্রাম কিংবা শহর, গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্তের হার ও মৃত্যুর সংখ্যায় বাদ পড়েনি কোনো অঞ্চল।

তাই এবার প্রস্তুতিটাও নিতে হবে আঁটসাঁট বেঁধে বলে পরামর্শ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, সিটি করপোরেশনের যত ওয়ার্ড রয়েছে, ওই ওয়ার্ডগুলো যদি ভাগ করা হয়। যেমন : উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ, মধ্য ঝুঁকিপূর্ণ, নিম্ন ঝুঁকিপূর্ণ ও ঝুঁকি নেই। অতএব, এই ৪টি ভাগে ভাগ করলে; উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ যেসব এলাকা, সেসব জায়গায় প্রচুর কাজ করতে হবে। মধ্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায়ও অনেক কাজ করতে হবে। নিম্ন ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলোয় একটু কম কাজ করলেও হবে।

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ আরো জানান, এক দেশ, এক স্বাস্থ্য। ম্যালেরিয়া রোগটি যদি স্বাস্থ্য বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে, তাহলে ডেঙ্গু কেন নয়! যদি আমরা স্বাস্থ্য বিভাগকে দায়িত্ব দিই, তাহলে গত ২০ বছরে যতটা নিয়ন্ত্রণ হয়নি, আগামী ১০ বছরে তা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। লোক দেখানো অভিযান নয়, মশার প্রজনন ধ্বংসে দরকার আন্তরিকতা; লাগবে জনসচেতনতাও।

এদিকে আইইডিসিআর উপদেষ্টা ড. মুশতাক হোসেন বলেন, মশক নিধন খুবই দরকার এবং সেটা সামগ্রিকভাবে পাড়ায়-পাড়ায়, গ্রামে-গ্রামে, মহল্লায়-মহল্লায় মানুষকে সম্পৃক্ত করে আমাদের পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন করতে হবে। এছাড়া চিকিৎসা ব্যবস্থা তো আছেই; স্তরভিত্তিক বিন্যাস ও কেন্দ্রীভূত চিকিৎসা ব্যবস্থাকে বিকেন্দ্রীকরণ করা।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের প্রথম ২ মাসের মধ্যেই ডেঙ্গু জ্বরে বেশি সংখ্যায় মারা গেছেন শিশু ও নারীরা। আক্রান্তে এবার পুরুষের সংখাও বেশি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনে আলাদা দপ্তর খুলে টাস্কফোর্সের মাধ্যমে জেলা পর্যায়ে কাজ করার তাগিদ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।

ডেঙ্গু প্রতিরোধ, বংশবিস্তার ও প্রজনন ধ্বংস করতে না পারলে এবার ভয়ংকর রূপ নেবে ডেঙ্গু। এ বছর আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাছাড়া আসন্ন ঈদে রাজধানী ছেড়ে বহু মানুষ বাড়ি যাবেন এই সময় বাসাবাড়িতে পানি জমে ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটতে পারে। তাই এ বিষয়ে আগে থেকেই সচেতনতা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. নিয়াতুজ্জামান বলেন, প্রতিনিয়তই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। এর লাগাম টানা জরুরি, আশঙ্কাজনক হারে ছড়িয়ে পড়ার আগে পরিকল্পিতভাবে এর প্রতিরোধ করা প্রয়োজন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে প্লাস্টিক ড্রামে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায় ১১ দশমিক ৪৩ শতাংশ, সেখানে ২০২২ সালে মৌসুম পূর্ব জরিপে লার্ভার পরিমাণ দ্বিগুণের বেশি বেড়ে ২৩ দশমিক ৯৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। দেশে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছিল ২০১৯ সালে।

ওই বছর লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। যদিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে মৃতের সংখ্যা ছিল ১৭৯ জন। ২০২০ সালে ১২ জন মারা যায়। ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত ৪২ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে শুধু আগস্ট মাসেই মারা যায় ৩০ জন। বেসরকারি হিসাবে ২০২১ সালে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের সাবেক নবজাতক ইউনিট প্রধান ও বারডেম হাসপাতালের (শিশু-২) শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আবিদ হোসেন মোল্লা বলেন, বর্ষা মৌসুমে কারও জ্বর হলে ডেঙ্গুর সম্ভাবনাটা মাথায় রেখেই চিকিৎসা করাতে হবে। রক্তসহ যা যা দরকার, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হবে। প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। মনে রাখতে হবে, ডেঙ্গু যদি একবারের বেশি কারও হয়, তাহলে জ্বরের তীব্রতার সঙ্গে সার্বিক জটিলতা ভয়াবহ আকারে হতে পারে। তিনি জানান, ডেঙ্গুআক্রান্ত যে কোনো বয়সি ব্যক্তির ক্ষেত্রেই ঝুঁকি থাকে। মনে রাখতে হবে, ডেঙ্গুর তেমন কোনো ওষুধ নেই। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি মাত্র। ডেঙ্গুর জীবাণু তার মতো করেই আক্রান্ত ব্যক্তিকে হানা দেয়। ডেঙ্গু যদি জটিল হয়, তাহলে এর চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় লাখ লাখ টাকা খরচ করার পরও আক্রান্ত ব্যক্তির জীবন অনিশ্চিত থাকে। শঙ্কা, সন্দেহ, উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়েই পুরো চিকিৎসাটা চলে। চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। দেশে চিকিৎসাসামগ্রী অপ্রতুল। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সচেতনতা বৃদ্ধি, প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

একই সঙ্গে গণমাধ্যমে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও সচেতনতার বিষয়ে বেশি বেশি প্রচার করতে হবে। মশারি ব্যবহার শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে এখন থেকেই। দরজা, জানালায় অস্থায়ী নেট লাগানোও জরুরি। কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার জানান, এবার দ্রুত সময়ের মধ্যে ডেঙ্গুর বিস্তার ধ্বংস করতে না পারলে ভয়ংকর রূপ নেবে। এডিস ধ্বংস করতে না পারলে আক্রান্তের সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়তে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার অধীনে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার ঘনত্বের প্রাক মৌসুম জরিপ-২০২২ এর প্রধান ছিলাম। এ সময় দেখা যায়, জমা পানিতে মশার লার্ভা জন্মানোর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বহুগুণ বেশি। ফলে ম্যালেরিয়া-ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত উদ্বেগ বাড়াচ্ছে নগর প্রশাসনের।

ড. কবিরুল বাশার জানান, ২০১৪ সাল থেকে তিনি ডেঙ্গু প্রতিরোধ, প্রজনন ধ্বংস, বিস্তার রোধ নিয়ে গবেষণা করছেন। এডিস মশার ঘনত্ব দিয়ে ডেঙ্গুর প্রকৃত রূপ নিশ্চিত করা যায় না। অর্থাৎ ৯৫ শতাংশই নিশ্চিত করা যায় না। আমরা এটি করছি আগাম সতর্ক করার জন্য। সংশ্লিষ্টরা ও সাধারণ মানুষ সতর্ক না হলে ডেঙ্গু বাড়ে। প্রাণ কাড়ে।

এডিসের সঙ্গে লাফিয়ে বাড়ে ডেঙ্গু, যা রোধ করা সম্ভব হয় না। এডিস ধ্বংস করতেই হবে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে হলে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে বছরে শতকোটি টাকার বেশি খরচ হলেও নগরবাসী মশার অত্যাচার থেকে রেহাই পাচ্ছে না। মশা মারায় খরচ বাড়লেও মশা কমে না। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়ায় অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যু হার বেশি।

এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় মশা মারার জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৪৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা, পরে সেটি বেড়ে ৫৮ কোটিতে দাঁড়ায়। চলতি অর্থবছরে ডিএনসিসিতে মশা মারতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮৪ কোটি টাকা। সংস্থাটিতে গত ৫ বছরের ব্যবধানে মশা নিধনের খরচ অনেক বাড়লেও এ কাজে তেমন সফলতা দেখাতে পারেনি ডিএনসিসি। একই অবস্থা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনেও। সেখানে চলতি অর্থবছরে প্রায় ৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। অর্থাৎ দুই সিটি করপোরেশনে মশা নিয়ন্ত্রণে বছরে শতকোটি টাকার বেশি খরচ হচ্ছে।

নগরবাসীর অভিযোগ, এর কারণ সিটি করপোরেশনের গাফিলতি, কার্যকরী ওষুধ ব্যবহার না করা, ঠিকমতো ওষুধ না ছিটানো ও মশার প্রজনন ক্ষেত্র চিহ্নিত করে ধ্বংস করতে না পারা। পাশাপাশি জনসচেতনতার অভাবও একটা কারণ।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবারে পরিস্থিতি গতবারের চেয়ে নাজুক হতে পারে। সংক্রমণ ও মৃত্যু সেই পূর্বাভাস দিচ্ছে। সাধারণত বর্ষার ঠিক আগে আগে শুরু হয় ডেঙ্গুর প্রকোপ। মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়টাকে ডেঙ্গুর মৌসুম ধরা হয়। সেই হিসেবে ডেঙ্গু মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। এখন প্রতিনিতই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। ফলে এবার ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিতে পারে এমনই আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।