ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

এ সপ্তাহে ঝিনাইদহ-৪ আসন শূন্য ঘোষণার বিষয়ে সিদ্ধান্ত

এ সপ্তাহে ঝিনাইদহ-৪ আসন শূন্য ঘোষণার বিষয়ে সিদ্ধান্ত

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের মরদেহের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। তার মরদেহের সন্ধানে বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালাচ্ছে কলকাতা পুলিশ। এদিকে তার মরদেহের সন্ধান পাওয়া না গেলে ঝিনাইদহ-৪ আসন শূন্য ঘোষণা নিয়ে জটিলতা দেখা দিতে পারে। তবে বিষয়টি নিয়ে এ সপ্তাহে সিদ্ধান্ত নেবে সংসদ সচিবালয়।

সূত্র জানায়, জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে আনোয়ারুল আজিমের আসনটি শূন্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করার কথা। নির্বাচন কমিশনেরও ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু আসন শূন্য ঘোষণার আগে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া জরুরি।

জানা যায়, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ব্যক্তিগত সফরে ভারতে যান ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম। ১৭ মে থেকে পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরদিন তার নিখোঁজের বিষয়ে উত্তর কলকাতার বরানগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন সেখানকার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপর সংসদ সদস্যের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস (ডরিন) ঢাকায় গোয়েন্দা সংস্থা ডিবির কাছে বাবার নিখোঁজের অভিযোগ দেন।

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ১৩ মে রাতে খুন করা হয় আনোয়ারুলকে। কলকাতা পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে। এর মধ্যে ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও মৃতদেহ পাওয়া যায়নি।

সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আবদুস সালাম গণমাধ্যমকে বলেন, এ সপ্তাহে বিষয়টি নিয়ে স্পিকারের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফরহাদ আহম্মদ খান বলেন, সংসদ সচিবালয় থেকে শূন্য ঘোষণা করা হলে সংবিধান অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন হবে ঝিনাইদহ-৪ আসনে। আসন শূন্য ঘোষণা করলে ইসি ব্যবস্থা নিতে পারবে।

আইন অনুযায়ী সংসদের আসন শূন্য ঘোষণার বিষয়ে সংবিধানের ৬৭(১) অনুচ্ছেদে যেসব পরিস্থিতির উল্লেখ আছে, সেগুলো হলো কোনো সংসদ সদস্য (ক) যদি নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে নব্বই দিনের মধ্যে শপথগ্রহণ বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরদান করতে অসমর্থ হন। (খ) সংসদের অনুমতি ছাড়া একাদিক্রমে নব্বই বৈঠক অনুপস্থিত থাকেন। (গ) সংসদ ভেঙে যায়। (ঘ) সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের (২) দফার অধীন অযোগ্য হন। (ঙ) সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে বর্ণিত পরিস্থিতির উদ্ভব হয়।

এছাড়া সংবিধানের ৬৭(২) অনুচ্ছেদে বলা আছে, কোনো সংসদ সদস্য যদি স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র দেন এবং স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকার যদি তা পান, তখন থেকে আসন শূন্য হবে। তবে কোনো সংসদ সদস্য মারা গেলে বা খুন হওয়ার পর মরদেহ না পেলে কীভাবে সংসদীয় আসন শূন্য ঘোষণা করা হবে, তা সংবিধান বা সংসদের কার্যপ্রণালি বিধিতে উল্লেখ রয়েছে।

সুপ্রিমকোর্ট বারের সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, আসন শূন্য ঘোষণার জন্য স্পিকারকে মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে। এ জন্য মৃত্যুসনদ পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। তবে সেটি না এলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দেওয়া প্রমাণের ভিত্তিতেও আসন শূন্য ঘোষণা করতে আইনগত বাধা নেই। আনার যে খুন হয়েছেন, সেটি ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় প্রমাণিত। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিরোধীদলীয় উপনেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, সরকারিভাবে ওনার মৃত্যু যতক্ষণ পর্যন্ত ঘোষণা করা না হবে, ততক্ষণ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হবে না। আর মৃত্যুসনদ লাগবে। সেটা দিলে আসনটি শূন্য হবে।

কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, আনোয়ারুল আজিমের আসন কীভাবে শূন্য ঘোষণা হবে, সে প্রশ্নের উত্তর স্পিকারই দিতে পারেন। তবে চূড়ান্তভাবে সংসদ যখনই নিশ্চিত হবে তিনি মারা গেছেন, তখনই আসন শূন্য ঘোষণা করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত