ঈদ সামনে রেখে চলছে আগাম পশু কেনাবেচা

চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছেন খামারিরা

প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রাহাত হুসাইন

পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে খামারিদের। কোরবানির জন্য প্রস্তুত করছে গবাদিপশু। ইতোমধ্যে অনেক খামারে শুরু হয়েছে অগ্রিম বেচাকেনাও। কোরবানির জন্য পছন্দের পশু অগ্রিম বুকিং দিয়ে রাখছেন অনেক ক্রেতা। এবার দেশে চাহিদার তুলনায় ২৩ লাখ কোরবানির পশু বেশি আছে বলে জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি বছরের মতো এবারও বিভিন্ন জাতের গরু-মহিষ ও ছাগলের সমারোহ রয়েছে খামারগুলোতে। পরম আদর যত্ন করে সেগুলোকে লালন-পালন করছে খামারিরা। কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে খামার মালিকরা। উৎপাদন খরচ বিবেচনায় এবার কোরবানির পশুর দাম বেশি হবে।

খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পশুখাদ্যের দাম বাড়ায় পশুপালনে খরচ বেড়েছে। বিগত বছরের তুলনায় এবার ভূষি ও ভুট্টাসহ অন্যান্য পশুখাদ্যে বস্তাপ্রতি কয়েকশ টাকা বেড়েছে। এছাড়া পশুর পরিচর্যায় নিয়োজিত শ্রমিকদের মজুরিও বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। জানতে চাইলে বিসমিল্লাহ অ্যাগ্রো খামারের স্বত্বাধিকারী রাশেদ আহমেদ বলেন, কোরবানির ঈদের জন্য আমার খামারে ৮০টি গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে থেকে ক্রেতারা আসতে শুরু করেছেন। পছন্দ হলে ওজন স্কেলে উঠিয়ে মেপে দেখে খামারেই গরু রেখে যাচ্ছেন। ঈদের আগ মুহূর্তে তারা গরু নিয়ে যাবেন। গত কয়েক মাসে প্রায় সব ধরনের পশু খাদ্যের দাম বাড়ায় এ বছর গরু প্রতি ২০ শতাংশ দাম বৃদ্ধি পাবে।

দাম বাড়লেও ভারতীয় গরু দেশে প্রবেশ করতে দেবে না সরকার। গরুর অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে কঠোর নজরদারি রাখবে। পাশাপশি গরু আমদানিরও অনুমতি দেবে না। এ প্রসঙ্গে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বলেন, কোরবানি নিয়ে আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। দেশে চাহিদা অনুযায়ী কোরবানির পশু রয়েছে। পশু আমদানির প্রশ্নই ওঠে না। যদি কেউ আমদানির চেষ্টা করে, তাহলে সে ঠকবে। কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে গরুর অবৈধ প্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে কঠোর নজরদারি করা হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রাণিসম্পদণ্ড২ অনুবিভাগ) এ.টি.এম মোস্তফা কামাল। তিনি আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, কোরবানি উপলক্ষ্যে সীমান্ত দিয়ে পশুর অনুপ্রবেশ যেন না ঘটে, সেজন্য কঠোর নজরদারি থাকবে। কেউ যদি চোখ ফাঁকি দিয়ে পশু আনতে চায়, তবে বিজিবি ব্যবস্থা নেবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান বলেন, কোরবানির পশুর সরবরাহ ও ব্যবস্থাপনায় সরকারের পরিপূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে। কোরবানির পশুর চাহিদা নিরূপণ, সরবরাহ ও অবাধ পরিবহন নিশ্চিতকরণে ইতিমধ্যেই আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা করা হয়েছে। কোরবানির চাহিদার চেয়ে এবার ২২ লক্ষ ৭৭ হাজার ৯৭৩টি অতিরিক্ত গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ১ কোটি ২৯ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭টি যা গতবারের চেয়ে ৪ লাখ ৪৪ হাজার ৩৪টি বেশি। ফলে কোরবানির পশু নিয়ে কোনোরকম সংশয়, সংকট বা আশঙ্কার কারণ নেই। গত বছরের ন্যায় এ বছরও অনলাইন প্লাটফর্মে সারাদেশে কোরবানির পশু বিক্রয়ের ব্যবস্থা চালু থাকবে, যা ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য সুখকর অবস্থা তৈরি করবে।