পশ্চিমবঙ্গের আদালত

সিয়ামকে ১৪ দিনের সিআইডি হেফাজতের নেয়ার নির্দেশ

প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা মামলায় অভিযুক্ত মো. সিয়াম হোসেনকে ১৪ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের একটি আদালত। গতকাল তাকে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাত জেলা ও দায়রা আদালতে তোলা হলে এই আদেশ দেন বিচারক।

মামলাটি ওঠে আদালতের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারক সংগীতা লেট’র এজলাসে। বিচারক সিআইডি কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চান, আসামিকে কত দিনের হেফাজতে চাইছেন তারা। জবাবে সিআইডি জানায়, ১৪ দিনের হেফাজত দিলে তাদের তদন্তে অগ্রগতি আসবে। এ কথা শুনে সিয়ামকে ১৪ দিনের জন্য সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। গত শুক্রবার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ এলাকা থেকে সিয়ামকে গ্রেপ্তার করে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (সিআইডি)। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৪ (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ), ৩০২ (অপরাধমূলক নরহত্যা), ২০১ (তথ্য-প্রমাণ লোপাট) এবং ৩৪ (সংঘবদ্ধভাবে অপরাধমূলক কাজ সংঘটিত করা)- এই চার জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হয়েছে।

সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মন্দাক্রান্তা মুখার্জি জানান, এমপি আনারের মরদেহের টুকরোর সন্ধান, হত্যায় কী কী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল সেগুলো উদ্ধারসহ তদন্তে গতি আনতেই সিয়ামকে ১৪ দিনের হেফাজতে চেয়েছিল সিআইডি। আদালত তা মঞ্জুর করেছেন। সিয়ামের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে ১২০বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) ধারা যুক্ত করা হবে বলেও জানান সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর। এর আগে, অনেক নাটকের পর শুক্রবার (৭ জুন) রাতে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি জানায়, এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি সিয়ামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিআইডির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বাংলাদেশের ভোলা জেলার বুরহাদ উদ্দিন গ্রামের ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. সিয়াম। তার বয়স ৩৩ বছর বয়স। সিয়ামের বাবার নাম আলাউদ্দিন বালি। ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার পর বনগাঁর সীমান্তবর্তী অঞ্চলে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন সিয়াম। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

এ নিয়ে এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত আখতারুজ্জামান শাহীনের দুই সহযোগী সিয়াম হোসেন ও জিহাদ হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করলো সিআইডি। এর আগে, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জিহাদ হাওলাদার নামে সন্দেহভাজন এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। গত ২৩ মে এই তাকেও উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিহাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই হত্যাকাণ্ডে সিয়ামের জড়িত থাকার বিষয়টি জানতে পারেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

গত ১৩ মে সঞ্জীবা গার্ডেনে এমপি আনারকে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সন্দেহ করা হচ্ছে, এই খুন ও মরদেহ গুমের কাজে যুক্ত ছিলেন সিয়াম। নিউটাউনের অভিজাত ওই ভবনের যে সিসিটিভি ফুটেজ সামনে এসেছিল, তাতে সিয়ামকেও দেখা গিয়েছিল। শুরু থেকেই বলা হচ্ছিল, এমপি আনারকে হত্যার পর নেপালে পালিয়ে গেছেন সিয়াম। তাকে খুঁজতে নেপাল গিয়েছিল ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে একটি তদন্তকারী দল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ এলাকা থেকে সিয়ামকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

এর আগে, এই হত্যা মামলার অন্যতম আসামি জিহাদ হাওলাদার ওরফে কসাই জিহাদকে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন আদালত। গত শুক্রবার তাকে বারাসাত জেলা ও দায়রা আদালতে তোলা হলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শুভঙ্কর বিশ্বাস এই নির্দেশ দেন। সেই অনুসারে, জিহাদকে আগামী ২১ জুন আবারও আদালতে তোলা হবে। এই মুহূর্তে দমদমের কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি তিনি। তবে সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তারা আদালতের অনুমতি নিয়ে কারাগারে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন।