ঈদযাত্রার প্রথম দিনেই ট্রেন বিলম্বে : ভোগান্তিতে যাত্রীরা

প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদুল আজহার আর চার দিন বাকি। গতকাল থেকে শুরু হয়েছে ‘স্পেশাল’ ট্রেন সার্ভিসে ঈদযাত্রা। তবে প্রথম দিনের যাত্রা স্বস্তিদায়ক হয়নি ঘরমুখো মানুষের জন্য। প্রথম দিনে নির্দিষ্ট সময়ে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায়নি ট্রেন, স্বাভাবিকভাবে ছেড়েও গেছে বিলম্বে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। তীব্র গরমের মধ্যেই স্টেশনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়। এতে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, আবার অনেকেই ঈদের সময় এই বিলম্বকেই ‘নিয়ম’ ভেবে মেনে নিয়েছেন।

ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে দিনের প্রথম ট্রেন রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস (৭৬৯) ভোর ৬টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ট্রেনটি স্টেশন ছেড়েছে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে। দিনের দ্বিতীয় ট্রেন পর্যটক এক্সপ্রেস (৮১৬) ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে ঢাকা স্টেশন ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ছেড়েছে ৬টা ৫০ মিনিটে। তৃতীয় ট্রেন সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস (৭০৯) সকাল সাড়ে ৬টায় ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ঢাকা স্টেশন ছেড়েছে সকাল সাড়ে ৮টায়। সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে কিশোরগঞ্জগামী এগারোসিন্দুর প্রভাতী (৭৩৭) ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি ছেড়ে যায় সকাল ৯টা ১৯ মিনিটে। এছাড়া মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার (৪৩) সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কোনো প্ল্যাটফর্ম পায়নি; রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেস (৭৭১) সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ৪০ মিনিট বিলম্বে ট্রেনটি ৯টা ৫৭ মিনিটে ঢাকা স্টেশন ছেড়ে যায়। দিনের প্রথম ঈদ স্পেশাল ট্রেন ‘দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল’ ৯টা ২৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ট্রেনটি ১ ঘণ্টা বিলম্বে ১০টা ২৫ মিনিটে ঢাকা স্টেশন ছাড়ে। পঞ্চগড়গ্রামী একতা এক্সপ্রেস (৭০৫) সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ২৫ মিনিট বিলম্বে ১০টা ৪০ মিনিটে ঢাকা স্টেশন ছেড়ে রেলওয়ের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, ঈদযাত্রার প্রথম দিন হিসাবে সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু শুরুর দিকের দুইটি ট্রেনের কোচ সংযোজন ভুল হওয়ায় সেগুলো সংশোধন করতে আরো ঘণ্টাখানেক বেশি সময় লেগেছে। ফলে এই ট্রেনগুলোর বিলম্বের জের অন্য ট্রেনগুলোতেও টানতে হয়। ফলে ২০ থেকে ৩০ মিনিট দেরি হয়।

ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার জানান ঢাকায় আসার পর ট্রেনগুলো আবার ছেড়ে যায়। এখন ওইদিক থেকে যদি কোনও ট্রেন দেরিতে আসে তাহলে ট্রেনগুলো এইখান থেকেও দেরিতে ছেড়ে যায়। কারণ, ট্রেনগুলো ঢাকায় আসার পরে ক্লিনিং ও ওয়াটারিং করা হয়। এর জন্য প্রত্যেকটা ট্রেনে অন্তত ১ ঘণ্টা সময় লাগে। তিনি আরো জানান আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে যাত্রীদের নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া। যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে ট্রেনগুলো ১০ থেকে ২০ মিনিট দেরিতে ছাড়তে হতে পারে। গত ঈদুল ফিতরের মতো এবারও প্ল্যাটফর্ম এলাকায় যেন কোনো টিকিটবিহীন ব্যক্তি প্রবেশ করতে না পারেন, সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যার ফলে ঢাকা স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম এলাকায় অবাঞ্ছিত কোনো মানুষকে দেখা যায়নি। ঈদযাত্রায় ট্রেনের যাত্রীদের যেন কোনো ভোগান্তিতে পড়তে না হয়, সেজন্য প্ল্যাটফর্ম এলাকায় প্রবেশমুখে র্যাব, পুলিশ এবং রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেছে।