ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রাতভর বিস্ফোরণের শব্দ ভোর থেকে ছিল শান্ত

দেখা যাচ্ছে ‘মিয়ানমারের জাহাজ’
রাতভর বিস্ফোরণের শব্দ ভোর থেকে ছিল শান্ত

মিয়ানমারের সীমান্তের ওপার থেকে রাতভর বিস্ফোরণের বিকট শব্দ কক্সবাজারের টেকনাফের সীমান্ত এলাকার লোকজন ঘুমাতে না পারলেও সকাল থেকে পরিস্থিত শান্ত রয়েছে। তবে এখনো একই স্থানে মিয়ানমারের জাহাজটি অবস্থান করছে বলে জানিয়েছেন সীমান্তের বাসিন্দারা।

সীমান্তের লোকজন জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৩ পর্যন্ত থেমে থেমে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মর্টার শেল ও গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এতে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ ও সেন্টমার্টিনের সীমান্ত এলাকা কম্পন সৃষ্টি হয়েছে। রাতভর ঘুমাতে পারেননি সীমান্তের এসব লোকজন। তবে গতকাল ভোর থেকে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ভোর থেকে দুপুর দেড় ১টা পর্যন্ত আর কোনো শব্দ পাওয়া যায়নি। তবে নাফনদীর ওপারে মিয়ানমার সীমান্তে এখনো অবস্থান করছে মিয়ানমারের জাহাজটি।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী জানিয়েছেন, গত বুধবার রাত থেকে মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। গতকাল সকাল থেকে তা শোনা যাচ্ছে না। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তবে নাফনদীর মিয়ানমার অংশে একটি বড় জাহাজ অবস্থান করায় আপাতত এ নৌপথ দিয়ে সেন্টমার্টিন যাতায়াত বন্ধ রাখা হয়েছে। সার্ভিস ট্রলারগুলো বিকল্প পথে সেন্টমার্টিন যাতায়াত করছে।

টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রীপাড়ার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আমিন জানিয়েছেন, বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দে আতঙ্কের মধ্যে রাত কাটা হচ্ছে। মিয়ানমারের কিছু কিছু এলাকা থেকে আগুনের ধোঁয়া উড়তেও দেখা গেছে। বিস্ফোরণের শব্দের সাথে সাথে কম্পন সৃষ্টি হয়। এতে ঘুম যাওয়াও যায় না।

গত বুধবার রাত থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শুরু হয় বলে জানান সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ৩টা পর্যন্ত থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। কিন্তু গতকাল ভোর থেকে আর কোনো শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না।

গত বুধবার দুপুর থেকে নাফনদীর টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মৌলভীপাড়ার বিপরীতে মিয়ানমারের নিকটবর্তী দেখা মিলে একটি বড় আকারের জাহাজ। এরপর বুধবার রাত ৯টা থেকে এপারে ভেসে আসতে থাকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। যে শব্দ টানা ৩ ঘণ্টার ধরে বিকট আকারে সীমান্তের লোকজন শোনেছেন। এরপর থেমে থেমে শব্দ শোনা গেছে রাতভর। বৃহস্পতিবার ভোর ৪ টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত আবারও শোনা গেছে এই বিকট শব্দ। বৃহস্পতিবার সকালের পর সেই বড় জাহাজটি দক্ষিণ দিকে সরে গিয়ে বর্তমানে টেকনাফের নাফনদী ও বঙ্গোপসাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা যায়। সেই জাহাজ থেকে মিয়ানমারের স্থলভাগে থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টার শেল বর্ষণের শব্দ অব্যাহত ছিল। গতকাল সকাল থেকে বিস্ফোরণের শব্দ বন্ধ রয়েছে। তবে ওই স্থানে দাঁড়িয়ে আছে জাহাজটি।

সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, টানা সাড়ে তিন মাস ধরে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্রগোষ্ঠী আরাকান আর্মির লড়াই চলছে। সম্প্রতি মংডু টাউনশিপের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে দুটি শহরসহ, সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১৪টি সীমান্তচৌকি, রাচিডং-বুচিডং টাউনশিপের বেশ কয়েকটি থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। এখন মংডু দখলের জন্য লড়ছে তারা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত