মিয়ানমারের গোলাগুলি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের

আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে

প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

সেন্টমার্টিনে মিয়ানমারের গোলাগুলি নিয়ে দেশটির সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, যুদ্ধকে পরিহার করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে এবং চলবে। তবে আক্রান্ত হলে জবাব দেওয়া হবে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ কিছু সংকট আছে। তাদের ৫৪টি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী রয়েছে। তাদের নিজেদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে; মতানৈক্য নেই। তাদের অভ্যন্তরীণ সংকটে আমরা যদি ভুক্তভোগী হই তাহলে সেটা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। সেখানে সরকারে আছে সামরিক শাসক। আমরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছি এবং করে যাবো যুদ্ধকে পরিহার করে। তবে আমরা আক্রান্ত হলে সে আক্রমণের জবাব দেব।

তিনি বলেন, আমাদের খাটো করে দেখার কিছু নেই। আমরা প্রস্তুত আছি। আজকে রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের ওপর জেঁকে বসেছে। মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদারভাবে সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন। এজন্য তাকে মানবতার মা বলা হয়। এখন বিশ্বের বড় বড় দেশ ও সংগঠনগুলো এজন্য আমাদের প্রশংসা করে, লিপ সার্ভিস দেয়। কিন্তু রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে যে সাহায্য তার পরিমাণ অনেক কমে গেছে। অর্থনৈতিক চলমান সংকটে আমরা চিন্তায় আছি।

১০-১২ লাখ রোহিঙ্গা বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে আছে। দুনিয়ার বড় বড় দেশগুলো যারা এ সংকট নিয়ে কথা বলে। আমাদের লিভ সার্ভিসের দরকার নেই। দরকার আমাদের কাধ থেকে রোহিঙ্গাদের বোঝা নামিয়ে ফেলা। আমরা সার্বিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী যেখানেই যান সর্বাগ্যে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ উপস্থাপন করেন।

এ সময় সড়কে যানজট নিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু জায়গায় যানজট হলেও কোথাও ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়নি। এবারের ঈদটা ভিন্ন। ধীর গতির পশুবাহী গাড়ি, সড়কের পাশে পশুর হাট একটা সমস্যা। রাস্তা কোন সমস্যা নয় যানজটের জন্য। এবার সড়কে অনেক বেশি যানবাহন। যানবাহনের ভিড়টা অনেক বেশি। কোথাও কোন যানজট হচ্ছে না অস্বীকার করে লাভ নেই। কিন্তু ঘন্টা পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়নি। আশা করি সামনের দিনগুলো ভালো যাবে। আজ এবং আগামীকাল গার্মেন্টস ছুটি হলে কোনো কোনো জায়গায় চাপটা বাড়তে পারে।

যে কোনো সময় সরকারের পতন হবে- বিএনপির এমন দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এক কথায় বলব এটা তাদের দিবাস্বপ্ন। সরকার পরিবর্তন হয় গণঅভ্যুত্থানে না হয় নির্বাচনে। ২০২৪-এর ৭ জানুয়ারিতে নির্বাচন হয়ে গেল। গণঅভ্যুত্থানে সরকারের পতন ঘটবে এটা হাস্যকর। তাদের নেতাকর্মীরাই তো আন্দোলনে সামিল হয় না। তাদের নেতাকর্মীরা আন্দোলনের মানসিকতায় নেই। আর জনগণ যে আন্দোলনের সম্পৃক্ত থাকে না সেটা কখনো গণঅভ্যুত্থান হতে পারে না। এদেশে একমাত্র গণঅভ্যুত্থান ৬৯ সালে। এরপর আর কোন কোন অভ্যুত্থান হয়নি। ৯০ এ গণআন্দোলন হয়েছে গণঅভ্যুত্থান নয়। যে আন্দোলনে স্বৈরাচার এরশাদের পতন হয়েছে।

মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড ল্যুর বাংলাদেশকে নিয়ে সাম্প্রতিক মন্তব্য প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের সংবিধান অনুসরণ করি, সংবিধান অনুযায়ী চলব। ডোনাল্ড ল্যু কোথায় কি বললেন সেটা নিয়ে আমাদের মাথা ঘামানোর কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। তারা কোন সময় কোন বিষয়কে নিয়ে নিন্দা করে আবার প্রশংসা করবে সেটা তাদের বিষয়। আমরা আমাদের নীতিমালার আলোকে সংবিধানকে অনুসরণ করে এগিয়ে যাবো।

প্রেসব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় নন্দীসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।