সংসদে কৃষিমন্ত্রী

২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ উন্নত দেশে রূপান্তরিত হবে

প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সংসদে কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা রূপকল্প ২০২১ সালে যে ডেল্টা প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে, তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ হবে জ্ঞানভিত্তিক সুখী সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ। গতকাল শনিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের ওপর দেওয়া বক্তব্যে এ কথা তিনি। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন। কৃষিমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে সদ্য স্বাধীন একটা দেশকে বঙ্গবন্ধু যখন গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন, তখন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি নৃশংসভাবে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। তার পরবর্তী সময়ে জেলের অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। এরকম নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড পৃথিবীতে আর হয়েছে কি না জানি না, যা ছিল ঘৃণ্য-জঘণ্য হত্যাকাণ্ড। যদিও তাদের অনেকের শাস্তি হয়েছে, ফাঁসি হয়েছে। যাদের হয়নি তাদের শাস্তির দাবি জানান তিনি। সরকার গঠন নিয়ে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়ে আবারো সরকার গঠন করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অনেক উন্নয়ন ঘটেছে।

কৃষি খাত নিয়ে মন্ত্রী বলেন, দেশের ৪৩ শতাংশ মানুষ কৃষিতে সম্পৃক্ত। সত্যিকার অর্থে এ দেশের কৃষকের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বঙ্গবন্ধু নিজেই বলেছিলেন, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। কৃষি খাত অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য একটি বড় খাত। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, খাদ্যের জন্য অন্যের ওপর নির্ভর করা চলবে না।

প্রয়োজনীয় খাদ্য আমাদেরই উৎপাদন করতে হবে। কৃষকদের বাঁচাতে হবে উৎপাদন বাড়াতে হবে। তা নাহলে কৃষি তথা দেশকে বাঁচাতে পারব না। নির্বাচনি ইশতেহার নিয়ে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে আমরা ১১টি বিশেষ অধিকার উল্লেখ করেছি। যার প্রথমটি- দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা। চতুর্থটি হলো- লাভজনক কৃষির জন্য সমন্বিত কৃষিব্যবস্থা, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও উৎপাদন বাড়াতে বিনিয়োগ বাড়ানো। চলতি বছরের ধানের উৎপাদন বেড়েছে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, যান্ত্রিকীকরণের ফলে কৃষকদের হার্ভেস্টার মেশিন দেওয়ায় একটা ধানও কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে নষ্ট হয়নি। আমরা চেষ্টা করছি আমাদের প্রতিটি কৃষক যাতে স্বয়ং সম্পূর্ণ হতে পারে। যাতে তারা না অভিযোগ করে একবার সার পেলাম তো মেশিন পেলাম না, আবার মেশিন পেলাম তো সার পেলাম না। সারের ডিলার নিয়োগে এমপিদের নাম সুপারিশ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এমন ব্যক্তিকে সুপারিশ করুন, যিনি সার আত্মসাৎ করবেন না।

আব্দুস শহীদ বলেন, উন্নয়নের জন্য ঘাটতি বাজেট দেওয়া হয়ে থাকে। সেটা বিদেশি কোনো ফান্ড থেকে পূরণ হয়ে থাকে। এবারে যে ঘাটতি তা জিডিপির ৪.৫ শতাংশ, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঘাটতি জিডিপির ৫.৭ শতাংশ ছিল। সব জায়গাতে ঘাটতি থাকে। সেটা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি এসব সংস্থা থেকে ফান্ড নিয়ে পূরণ করেই বাজেট বাস্তবায়িত করা হয়ে থাকে। যার ফলে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়, দেশের উন্নয়ন ঘটছে ব্যাপকভাবে। এবারে কৃষি খাতে অনেক টাকা বাজেট দেওয়া হয়েছে। যোগাযোগ খাত, সামাজিক নিরাপত্তা, দরিদ্র্য বিমোচন, নারী উন্নয়ন ও শিশু কল্যাণে বাজেটে অধিক টাকা দেওয়া হয়েছে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমি টাকার বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। এলাকার মানুষ ৭ বার আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করে এখানে পাঠিয়েছেন। আমার এলাকার চা বাগানে স্কুল হচ্ছে। একটি ৭তলা বিদ্যালয় হচ্ছে। কিন্তু চা শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিষয়ে আরো একটু নজর দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে আহ্বান জানান তিনি। তাদের ছেলে-মেয়েরা অপুষ্টিতে ভুগছে। এ সময় তিনি মৌলভীবাজারে একটি মেডিকেল কলেজ করার দাবি জানান। সিলেটের জন্য তিনি একটি দ্রুতগতির ট্রেন দেওয়ার জন্য রেলমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।