জেনারেল আজিজের ভাইয়ের এনআইডি জালিয়াতি

জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার কথা জানালেন ইসি সচিব

প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ আহমেদের দুই ভাইয়ের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতির ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবেন বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) শফিউল আজিম।

গতকাল বুধবার নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এমন প্রতিশ্রুতির কথা জানান সচিব। তদন্ত কমিটি নিয়ে শফিউল আজিম বলেন, জালিয়াতির ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে। ওনারা প্রথমে কীভাবে ভোটার হয়েছিলেন, কোন কোন তথ্যগুলো এখানে এসেছে, আমরা একেবারে আদ্যোপান্ত-শুরু কীভাবে হলো, কোথায় ওলটপালট হলো, ডিটেইল তারা তদন্ত করেছেন। তদন্ত কমিটি আমাদের কাছে আরো সময় চেয়েছে। আমি মনে করি যে, আরো সময় লাগতে পারে। আমরা আরো বিস্তারিত ও নিঁখুতভাবে তদন্তটা করতে চাই, যাতে কোনো ধরনের ফাঁক-ফোকর না থাকে। আস্থা নিয়ে ইসি সচিব বলেন, তদন্ত কমিটির ওপর আমাদের আস্থা আছে। তারা কাজ করছে। আপনাদের আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে। আরো দুই সপ্তাহের সময় চেয়েছে। কারণ ওনারা শুরু থেকে এই পর্যন্ত অনেকগুলো ডকুমেন্ট জমা দিয়েছিলেন। সবগুলো ডকুমেন্ট যোগাড় করা, পরীক্ষা করা, সোর্সে গিয়ে এগুলো আবার ভেরিফাই করা, আমরা চাচ্ছি বৈজ্ঞানিকভাবে যাতে কোনো ধরনের কোথাও খুঁত না থাকে। আমরা চাই না, আবার আরেক ধরনের ভুল হোক। সন্দেহের আওতায় ইসির কর্মকর্তারা বা যোগসাজশ আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, যে-ই থাকুক কেউ সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। আমরা সবাইকেই সন্দেহ করছি। আবার এটা তদন্তেই প্রমাণ। এতটুকু কথা দিতে পারি, বিন্দুমাত্র কারো যদি এখানে ইনভলমেন্ট থাকে, তার আইন অনুযায়ী যে সর্বোচ্চ শাস্তি সেটা আমরা এনশিউর করব। এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃতি খুনি রিসালদার মোসলেম উদ্দিনের সন্তানদের এনআইডিতে পিতার নাম পরিবর্তন করা বিষয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরে বিভিন্ন নামে তিনি কিন্তু আত্মগোপনে ছিলেন। বিভিন্ন নাম ধারণ করেছেন বলে আমাদের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। কোথায় কোথায় তিনি ছিলেন, কী কী কাজে সেই নামগুলো ব্যবহার করেছেন, তার আত্মীয়স্বজনরা এটা কোথায় কোথায় ব্যবহার করেছেন; সমস্ত তথ্যগুলো নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে। তদন্ত কমিটি এ নিয়ে রাত-দিন পরিশ্রম করছে। পুরোদমে একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি কাজ করছে।

শফিউল আজিম বলেন, এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এটা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে, অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। কোনো ধরনের ফাঁক-ফোকর যেন না থাকে আমরা সেটা নিশ্চিত করব। আমরা নিখুঁত, পুর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট উত্থাপন করব। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের ইভিএম নিয়ে ইসি সচিব বলেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) প্রতি ভোটারদের আস্থা বেড়েছে। তিনি বলেন, গতকাল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কাঞ্চন পৌরসভার সাধারণ নির্বাচন, বরিশালের গৌরনদীতে মেয়র পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া রাজবাড়ীর পাংশা, জামালপুরের মেলান্দহ ও শেরপুরের নকলা পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের উপনির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনে কাঞ্চন পৌরসভায় ৭২ শতাংশ, গৌরনদীতে ৪২ দশমিক ২৩ শতাংশ, পাংশায় ৩৫ দশমিক ২৪ শতাংশ, মেলান্দহে ৬৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ ও নকলায় ৬৯ দশমিক ২৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোটে সহিংসতা নিয়ে ইসির সচিব বলেন, খুব সুন্দরভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সবগুলোতেই ইভিএমে ভোট হয়েছে। বড় ধরনের কোনো সহিংস ঘটনা ঘটেনি। খুবই উৎসবমুখর ছিল পরিবেশ। শুধুমাত্র গৌরনদীতে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। হাতেনাতে ধরা পড়েছে। একজন প্রিজাইডিং অফিসার, আরো দু’জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারকে আমরা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। যদি প্রমাণ হয়, তাদের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিত মালমা করার জন্য বলে দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, খুব বেশি ভোট পড়েছে। সেটি বড় ঘটনা। আমার কাছে মনে হয় গণমাধ্যমের সহযোগিতা, মানুষের উৎসাহ বেড়েছে, আগ্রহ বেড়েছে। ইভিএমের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে বলে আমি মনে করি।