ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, বাংলাদেশে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীভুক্ত নাগরিকদের আর্থসামাজিক বৈষম্য এখন অনেক কমে এসেছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন ও প্রাঙ্গণে ঐতিহাসিক ১৬৯তম মহান সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের সংবিধানেই বাংলাদেশের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার প্রতিটি জাতীয় নীতিমালায় দেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীভুক্ত নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেছেন। ভূমিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ‘জাল যার জলা তার’ নীতি সামনে রেখে আমরা প্রকৃত মৎস্যজীবীদের জলমহাল ইজারার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে তা জলমহাল নীতিমালায় সংযুক্ত করার ব্যাপারে চিন্তা করছি। এছাড়া সমতল ভূমিতে বসবাসরত ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীভুক্ত সমাজের বিভিন্ন দাবির আবেদন কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করা হবে। ভারত রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কথা উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী বলেন, তার ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা বিশ্বে সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর জন্য এক মর্যাদাকর অধ্যায়। ১৮৫৫ সালে সাঁওতাল বিদ্রোহ ভারতে উপনিবেশবিরোধী আন্দোলনে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে এবং ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করেছিল। ভূমিমন্ত্রী জানান, সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ পরিকল্পনার উদ্দেশ্য দেশের সব ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নাগরিকের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমান, ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক মৃন্ময় চক্রবর্তী, ভারতের সাঁওতাল পরগনা ফিল্ম অ্যান্ড আর্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক ব্লেস ইমানুয়েল ট্রুডো প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি হিংগু মুরমু প্রমুখ। এ সময় সারা দেশ থেকে আসা সাঁওতাল সম্প্রদায়ের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, আগামী ৩০ জুন সাঁওতাল বিদ্রোহের ১৬৯তম বার্ষিকী। ১৮৫৫-৫৬ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ভগনাডিহি গ্রামে দুই ভাই বীর সিধু মুরমু ও কানু মুরমুর নেতৃত্বে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকদের বিরুদ্ধে এই বিদ্রোহ হয়েছিল। ইতিহাসে এটি সাঁওতালি ‘হুল’ বা সাঁওতাল বিদ্রোহ নামে পরিচিত।