ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আজ থেকে বদলে যাচ্ছে ৪৪০ বছরের পদ্ধতি

অর্থবছরের সঙ্গে সমন্বয় করে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়

অর্থবছরের সঙ্গে সমন্বয় করে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়

আজ থেকে ভূমি উন্নয়ন করের নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ভূমি উন্নয়ন কর আইন ২০২৩ অনুযায়ী, ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের সময়কাল হবে জাতীয় অর্থবছরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে প্রতি বছরের ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত। এত দিন ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের সময়কাল ছিল বাংলা সনের ১ বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত। এ পরিবর্তনের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন করে আদায় ব্যবস্থাপনা জাতীয় অর্থবছরের সঙ্গে সমন্বিত করা হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয় আশা করছে, জাতীয় অর্থবছরের সঙ্গে সমন্বয়ের ফলে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ভূমি মালিকের ভূমি উন্নয়ন কর দেওয়া সম্পর্কিত হিসাব ব্যবস্থাপনা আরো সহজ ও গতিশীল হবে। এছাড়া জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমি উন্নয়ন করের প্রভাব নির্ণয় আরো বেশি সুবিধাজনক হবে। এ ব্যাপারে ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ গত ৮ জুন ভূমিসেবা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এই নতুন পদ্ধতি আমাদের দেশের ভূমি রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী করবে এবং রাজস্ব আদায়ে গতিশীলতা আনবে। আসুন আমরা সবাই মিলে এই নতুন যাত্রায় সফল হই। বর্তমান পরিবর্তনটি ভূমি উন্নয়ন করের আদায় প্রক্রিয়াকে অধিকতর সুষম, স্বচ্ছ ও কার্যকর করবে বলে আমরা মনে করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালে অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর-ব্যবস্থা উদ্বোধন করেন। গত বছরের পহেলা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল ২০২৩) থেকে সারা দেশব্যাপী ভূমি উন্নয়ন কর শতভাগ অনলাইনে আদায় করা হচ্ছে।

ভূমি উন্নয়ন করব্যবস্থা স্মার্ট করার কাজ হচ্ছে বলেও ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, মুঘল বাংলায় ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রথম বাংলা সন গণনা করা হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে খাজনা আদায়ে এই গণনা কার্যকর শুরু হয়েছিল ১৫৫৬ সাল থেকে (পূর্বের তারিখে দেখিয়ে)। কালক্রমে ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমল হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশেও বাংলা সনের হিসাবেই জমির খাজনা তথা ভূমি কর নেওয়া হতো। ১৫৮৪ প্রায়োগিক সাল ধরলে সময়ের প্রয়োজনে প্রায় ৪৪০ বছর পর ভূমি কর আদায়ের সময় পরিবর্তন হচ্ছে।

ভূমি উন্নয়ন কর হালসনের হিসাব অনুযায়ী পরিশোধ করতে হয়। অর্থাৎ, প্রতি বছরের ভূমি উন্নয়ন কর উক্ত বছরের ৩০ জুনের মধ্যে জরিমানা ব্যতীত আদায় করা যাবে। কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তি বা পরিবারভিত্তিক কৃষি জমির মোট পরিমাণ ৮ দশমিক ২৫ একর বা ২৫ বিঘা পর্যন্ত হলে ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে না। তবে এই জমির পরিমাণ ২৫ বিঘার বেশি হলে সম্পূর্ণ কৃষি ভূমির ওপর ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে। অকৃষি ভূমিকে ব্যবহারভিত্তিক বাণিজ্যিক, শিল্প এবং আবাসিক ও অন্যান্য শ্রেণিতে বিভাজন করে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, অকৃষি ভূমির ভূমি উন্নয়ন কর হার নির্ধারণ ও পুনর্নির্ধারণ করে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করে থাকে। এছাড়া সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যেকোনো ব্যক্তি বা যেকোনো শ্রেণির ব্যক্তিবর্গ বা কোনো সংস্থাকে ওই প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত শ্রেণি ও পরিমাপের কৃষি বা অকৃষি ভূমির ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ করতে পারবে। অন্যদিকে গতকাল রোববার সচিবালয়ে সরকারের কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির আওতায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এর আওতাভুক্ত দপ্তর-সংস্থার ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত