মাদক আইনের শাস্তি ও জরিমানা নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত অপরাধের প্রকৃতি ও মাদকের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে অপরাধের শাস্তি হয় বলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। গতকাল জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেট অধিবেশনে এমপি মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানান। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এমপি মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে লিখিত প্রশ্নে জানতে চান, মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে বিদ্যমান শাস্তির বিধান কী; জরিমানার পরিমাণ কত; এবং লক্ষ্য করা যাচ্ছে কতিপয় ক্ষেত্রে নামসর্বস্ব জরিমানা আদায় করে অপরাধীকে ছেড়ে দেওয়া হয়; এই ধারা বাতিল করা হবে কি না; না হলে, তার কারণ কী? জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) অনুযায়ী মাদক অপরাধের শাস্তি হয় মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত অপরাধের প্রকৃতি ও মাদকের পরিমাণের ওপর। মাদকের ধ্বংসাত্মক প্রবণতা বিবেচনায় এ আইনের তফসিলে ক, খ ও গ এই তিন শ্রেণির মাদকদ্রব্য রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘ক’ শ্রেণির মাদকের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। সেবন, প্রয়োগ ও ব্যবহার ব্যতীত এই শ্রেণির মাদকে অন্যূন ১ বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। সেবন, প্রয়োগ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে অন্যূন তিন মাস কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

‘খ’ শ্রেণির মাদকের ক্ষেত্রে অনূর্ধ্ব ১০ বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড এবং অন্যূন ৬ মাস কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। সেবন, প্রয়োগ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই শ্রেণির মাদকে অন্যূন ৩ মাস কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

‘গ’ শ্রেণির মাদকের ক্ষেত্রে অনূর্ধ্ব ৫ বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড এবং অন্যূন ৬ মাস কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। সেবন, প্রয়োগ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই শ্রেণির মাদকে অনূর্ধ্ব এক বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়াও মাদকদ্রব্য উৎপাদনে ব্যবহারযোগ্য যন্ত্রপাতি রাখার অপরাধে অনূর্ধ্ব ১০ বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড, গৃহ অথবা যানবাহন ইত্যাদি ব্যবহার করতে দেওয়ার অপরাধে অনূর্ধ্ব ৫ বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। অর্থ যোগানদাতা, পৃষ্ঠপোষকতা, মদদদাতা এবং মাদক অপরাধ সংগঠনে প্ররোচনাকারীর জন্য সংশ্লিষ্ট অপরাধের নির্ধারিত দণ্ডের অনুরূপ দণ্ডের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, (খ) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) এর বিধান মোতাবেক মাদক অপরাধ সংঘটনের দায়ে সাজা প্রদানের পাশাপাশি জরিমানা প্রদানেরও বিধান রয়েছে। জরিমানা প্রদানের পরিমাণও নির্ভর করে মাদক অপরাধ সংঘটনে ব্যবহার্য মাদকের পরিমাণের ওপর। আর এ ক্ষেত্রে বিজ্ঞ বিচারকগণ তাদের স্বীয় এখতিয়ার অনুযায়ী জরিমানা প্রদান করে থাকেন। উল্লেখ্য, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) এর ৫৭ ধারার বিধান অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমেও দোষ স্বীকারের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক শাস্তি প্রদান করার বিধান রয়েছে। এ ক্ষেত্রে যে অপরাধের শাস্তি সর্বোচ্চ ২ বছর সে অপরাধের বিচারই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আরোপিত হয়। এক্ষেত্রে জরিমানার পরিমাণও কম হতে পারে। একটি মাদক অপরাধের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, কেউ যদি ২ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হয়, তবে তার জরিমানা খুবই সামান্য হতে পারে।