ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ছাত্র-শিক্ষক আন্দোলন

কোটা বাতিল চেয়ে ফের কর্মসূচি শিক্ষার্থীদের

কোটা বাতিল চেয়ে ফের কর্মসূচি শিক্ষার্থীদের

সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল সংক্রান্ত রায়ের প্রতিবাদ এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রাখার দাবিতে আজ বুধবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকাল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে এ ঘোষণা দেন তারা। এর আগে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে পদযাত্রা করেন শিক্ষার্থীরা। পদযাত্রাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি থেকে মাস্টার দা সূর্যসেন হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, নীলক্ষেত, ঢাকা কলেজ, সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়, এলিফ্যান্ট রোড হয়ে শাহবাগে এসে থামে। সেখানে এক ঘণ্টার মতো অবস্থান করেন তারা। এ সময় শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে একটি মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ‘১৮-এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘১৮ এর পরিপত্র, বহাল করতে হবে’, ‘সংবিধানের মূলকথা, সুযোগের সমতা’সহ নানা স্লোগান দেন। স্লোগানে ‘কোটা না মেধা?’ প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষার্থীরা সমস্বরে ‘মেধা, মেধা’ স্লোগান দেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, এটি একটি বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা। তারা আজকে পদযাত্রা করেছেন। আজ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে একই দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে। দিন দিন এ আন্দোলনে অংশগ্রহণ বাড়ছে বলে দাবি তাদের। আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক নাহিদ হাসান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর মুক্তিযোদ্ধা কোটা এক কথা নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাংলাদেশের সব মানুষের হৃদয়ে। আর মুক্তিযোদ্ধা কোটা বৈষম্যমূলক। এটি বাতিল করে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল করতে হবে। আন্দোলনরত ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, কোটার মাধ্যমে বৈষম্য এবারই প্রথম নয়। ১৯৮৭ সালে বলা হয়েছিল কোটা ধীরে ধীরে উঠে যাবে। কিন্তু ১৯৯৭ সালে আমরা দেখেছি কোটায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের স্থানে নাতি-নাতনীদেরও যুক্ত করা হয়। তিনি বলেন, কোটার মাধ্যমে বিভিন্ন সময় জঘন্য বৈষম্য আমরা দেখেছি। এমনও হয়েছে বিসিএস পরীক্ষায় ২০০তম হয়েও কেউ ক্যাডার পায়নি, অথচ ৫ হাজারতম হয়ে কোটায় অ্যাডমিন ক্যাডার পেয়ে গেছে। কোটাধারী না থাকলে আসনগুলো শূন্য থেকেছে, তবুও সাধারণ শিক্ষার্থীরা পায়নি। এ ধরনের বৈষম্য বাদ দিয়ে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল করতে হবে। হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মুরাদ বলেন, যারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে এদেশ স্বাধীন করলেন, সেই স্বাধীন দেশে তাদের সন্তানদের কাছে বৈষম্যের শিকার আমরা। এ বৈষম্য কোনোভাবেই মেনে নেব না। ২০১৮ সালের পরিপত্রটি পুনর্বহাল করেই এ আন্দোলন থামবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় : অনায্য ও অযৌক্তিক কোটা বাতিলের দাবিতে ২য় দিনের মতো বিক্ষোভ মিছিল ও ছাত্রসমাবেশ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হলে টানা আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা পূর্বের ৪ দফা দাবিই পেশ করেন।

৪ দফা দাবিগুলো হলো : ১. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে।

২. ১৮-এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী শুধু অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।

৩. সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্যপ্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।

৪. দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। ক্যাম্পাসে প্রথমে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে পুরো ক্যাম্পাসে প্রদক্ষিণ করে। পরবর্তীতে মিছিলটি রায়সাহেব বাজার মোড় হয়ে বাহাদুর শাহ পার্ক প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসে ফিরে আসে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত