ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর তালিকা

ফের পাহাড় ধসে দুই রোহিঙ্গার মৃত্যু
দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর তালিকা

গত সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কক্সবাজারের সর্বত্র মাঝারি ও ভারি বর্ষণ চলছে। অতিবৃষ্টির ফলে পাহাড় চাপায় নিহত হয়েছেন দুই রোহিঙ্গা। এ সময় আহত হয়েছেন আরো বেশ কয়েকজন। এ সময় ডজনাধিক ক্যাম্পে জলাবদ্ধতা ও পানিতে শতাধিক শেল্টার ক্ষতির মুখে পড়েছে। গতকাল বুধবার ভোর রাতে উখিয়ার ক্যাম্প-৪ এক্সটনশনে এ পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে বলে ক্যাম্প সূত্রের বরাতে জানিয়েছেন উখিয়া থানায় ওসি মো. শামীম হোসেন। একইভাবে, একাধিক স্পটে পাহাড় ধসের মাটির সড়কের উপরে আসায় কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভে বেশ কয়েক ঘণ্টা যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। পরে সেনাবাহিনী বুলডোজার দিয়ে মাটি সরিয়ে বেলা ১১টার যান চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের কক্সবাজার রেঞ্জ কর্মকর্তা সমীর রঞ্জন সাহা। উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম জানান, ভারি বর্ষণে পাহাড় ধসে উখিয়ার ক্যাম্প-৪ এ দুইজন নিহত হয়েছে। নিহতরা হলো- উখিয়ার ক্যাম্প-১১ ব্লক ১ এফের দিল মোহাম্মদের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন (২১) ও টেকনাফের লেদার মো. আলমের ছেলে মো. সিফাত (১৩)।

রোহিঙ্গাদের বরাত দিয়ে ওসি আরো জানান, টানা ভারি বৃষ্টির কারণে বুধবার ভোর রাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১১ এফ ১ ব্লক এবং ক্যাম্প-৮ ইস্ট, ব্লক-৪১ বালুখালীতে পাহাড়ের উপরে থাকা শেল্টার ধসে পড়লে মো. আনোয়ার হোসেন মাটিতে চাপা পড়ে মারা যায়। অপরদিকে মো. সিফাত(১৩) তার মামার শেডে বেড়াতে এসে মাটি চাপা পড়ে নিহত হয়। তার বাড়ি টেকনাফের লেদা বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে লাশ দুটি উদ্ধার করে।

অপরদিকে, উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১ ইস্ট ওয়েস্ট-৩, ৪, ৬, ৭, ১১, ১২ এবং ২০ এক্স এ বিভিন্ন ব্লকে ভারি বৃষ্টির পানিতে শতাধিক শেল্টার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শিকার হচ্ছে জলাবদ্ধতার।

আবহাওয়া অধিদপ্তর কক্সবাজার স্টেশনের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানান, লঘুচাপের প্রভাবে গত দেড় সপ্তাহ ধরে কক্সবাজার জেলায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ৬টা হতে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কক্সবাজারে বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ৭৪ মিলিমিটার। দিনের বেলা বৃষ্টির তীব্রতা কম হলেও মঙ্গলবার মাঝরাত হতে অতিশয় ভারি বর্ষণ হয়েছে। গত শনিবার হতে বুধবার সকাল পর্যন্ত গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৬৮ মিলিমিটার। দিনে বৃষ্টিপাত কম হলেও সন্ধ্যার পর থেকে রাতে থেমে থেমে ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস মতে আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বৃষ্টিপাত। সাথে পাহাড় ধসেরও সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত ২২ জুন পাহাড়ের মাটিচাপায় মারা পড়েছেন রোহিঙ্গা ও স্থানীয় মিলে ১২ জন। সেই ধারায় গত মঙ্গলবার দিনগত রাতের পাহাড় ধসের ঘটনায় দুই মরে তালিকা দীর্ঘ হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আরো দীর্ঘ হতে পারে মৃত্যুর মিছিল এমনটি জানিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলা সভাপতি এইচএম এরশাদ।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, টানা বর্ষণে পাহাড় ধ্বসে মৃত্যু এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ বাসে থাকাদের সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। ভারি বর্ষণে প্লাবণের আশঙ্কাও রয়েছে। জেলার নদীগুলো ঢল নামলে-এর ক্ষয়ক্ষতি হতে নিরাপদ থাকার আগাম প্রস্তুতি নিতে ইউএনওদের নির্দেশনা দেয়া রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন ডিসি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত