ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সিলেট অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল, পানি বাড়ছে উত্তরে

সিলেট অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল, পানি বাড়ছে উত্তরে

পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার কিছু নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে।

সিলেট অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেও দেশের উত্তর ও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের কিছু এলাকায় পরিস্থিতির অবনতির আভাস দিয়েছে পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, কুশিয়ারা নদী ছাড়া দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল সার্বিকভাবে কমছে, এ অবস্থা আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। তাতে সিলেট অঞ্চলের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ঘাঘট নদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে। এর ফলে তিস্তা ও দুধকুমার নদীর পানি কিছু পয়েন্টে স্বল্পমেয়াদে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং ধরলা ও ঘাঘট নদী সংলগ্ন কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার কিছু নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে। এছাড়া পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যমুনাশ্বরী, করতোয়া, বাঙ্গালী, আপার করতোয়া, পুর্নভবা, টাঙ্গন, ইছামতি-যমুনা, আত্রাই, মহানন্দা এবং ছোট যমুনা নদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে। বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্য বলছে, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। তাতে পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার ব্রহ্মপুত্র, যমুনা নদী সংলগ্ন নিম্নœাঞ্চলের বন্যার পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে এবং টাঙ্গাইল জেলার কিছু পয়েন্টে পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। গতকাল সকাল ৯টায় দেশের ৯টি নদীর পানি ১৯টি পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছিল। এর মধ্যে পাঁচটি পয়েন্টে পানি কমার প্রবণতা দেখা গেলেও বাকি ১৪ পয়েন্টে বাড়ছিল।

এবার জুনের শুরুতে প্রবল বর্ষণ আর উজানের ঢলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। কয়েক দিন পর পরিস্থিতির উন্নতি হলেও গত ১৭ জুন কোরবানির ঈদের আগের দুদিন থেকে টানা বৃষ্টিতে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনাসহ আশপাশের জেলার অনেক এলাকা ডুবে যায়। উজানের ঢলে জুলাইয়ের শুরুতে নতুন করে বন্যা দেখা দেয় ওই তিন জেলায়। বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, ‘উজানে এখন একটু ভারি বৃষ্টিপাত আছে, তবে সিলেট অঞ্চলে পরিস্থিতির অবনতি হবে না আশা করা যাচ্ছে । ৭ জুলাই থেকে দেশের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।’

তিন বিভাগে ভারি বৃষ্টির আভাস : দেশজুড়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে এলেও সিলেট, চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগে মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুর, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা বলেন, বৃষ্টির পরিমাণ কমে এসেছে; এক-দুদিনের মধ্যে আরো কিছুটা কমবে। তবে বৃষ্টি থাকবে। এই বৃষ্টি হল, রোদ উঠল, আবার বৃষ্টি হলো- এমন অবস্থা থাকবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝরেছে কক্সবাজারের টেকনাফে। এছাড়া পঞ্চগড়, কিশোরগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও লক্ষ্মীপুর ছাড়া সারাদেশেই কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে। সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত