ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন

যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে  শেখ হাসিনার অভিনন্দন

যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে জয়লাভের জন্য ওই দেশের প্রধানমন্ত্রী ও লেবার পার্টির প্রধান স্যার কিয়ার স্টারমারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লেবার পার্টি ও দলের সাবেক নেতা স্যার হ্যারল্ড উইলসন, থমাস উইলিয়ামস, লর্ড পিটার শোরের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের স্মৃতিচারণ করে গণতন্ত্র, ধর্ম নিরপেক্ষতা, আন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রগতিশীল আকাঙ্ক্ষার মতো মূল্যবোধ বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্কের ভিত্তি বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, জলবায়ু পরিবর্তন ও কৌশলগত অংশীদারত্ব দৃঢ় করার জন্য লেবার সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে বাংলাদেশের সরকার। আরো করেন। বাকিংহাম প্যালেসের এক বিবৃতি অনুসারে, গতকাল শুক্রবার কিয়ার স্টারমার রাজার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় রাজা তাকে নতুন প্রশাসন গঠনের অনুরোধ করেছেন। বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, স্যার কিয়ার স্টারমার রাজার প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রী ও ফার্স্ট লর্ড অব দ্য ট্রেজারি হিসেবে নিয়োগের পর করমর্দন করেন। পরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ডাউনিং স্ট্রিটে ভাষণ দেন স্টারমার। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম ভাষণে তিনি বলেছেন, পরিবর্তনের কাজ এখনই শুরু হচ্ছে। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি স্বীকার করেছেন, ‘একটি সুইচ টিপে’ সবকিছু পরিবর্তন করা সহজ হবে না।

কিয়ার স্টারমারকে বিশ্ব নেতাদের অভিনন্দন : লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার জয়ী হওয়ায় এরই মধ্যে বিশ্ব নেতারা অভিনন্দন জানানো শুরু করেছেন লেবার পার্টির এই নেতাকে। ফলাফলে এগিয়ে থাকার খবর পাওয়ার পর লন্ডনে লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার বলেছেন, ‘পরিবর্তন এখন থেকেই শুরু হলো।’ উচ্ছ্বসিত জনগণের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, ‘আমি আনন্দিত।’

এবারের নির্বাচনে হেরে যুক্তরাজ্যে টানা ১৪ বছর পর ক্ষমতা থেকে সরে গেল কনজারভেটিভ পার্টি। বিদায় নিতে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে। এদিকে, জয়ী হওয়ায় কিয়ার স্টারমারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবেনিজ। এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) তিনি এ অভিনন্দন জানান। এছাড়া কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও অভিনন্দন জানিয়েছেন লেবার পার্টির এই নেতাকে। নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় কিয়ার স্টারমারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ইসারায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগ।

ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব ছাড়ছেন সুনাক : সরকারি বাসভবন ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটে শেষ বিদায়ি ভাষণে সুনাক বলেছেন, ভোটারদের ক্ষোভ, হতাশা এবং পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছেন। দল নতুন নেতা পেয়ে গেলেই পদত্যাগ করবেন বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, আমি টোরি (কনজারভেটিভ) নেতার পদ থেকে পদত্যাগ করব। তবে এখনই নয়। যখন দলের উত্তরসূরি নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হবে তখন। ১৪ বছর সরকারে থাকার পর কনজারভেটিভ পার্টির পুনর্গঠিত হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে তারা যথেষ্ট পেশাদারিত্ব এবং কৃতিত্বের সঙ্গে বিরোধীদলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে সেটিও কম নয়,’ বলেন সুনাক। তিনি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে আমার সবটা দিয়েছি। কিন্তু আপনারা পরিষ্কার বার্তা পাঠিয়েছেন যে, যুক্তরাজ্যের সরকার পরিবর্তন হতে হবে। আর শুধু আপনাদের বিচারই আসল কথা।’ প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে পরিবারের কাছ থেকে যে সমর্থন-সহযোগিতা পেয়েছেন সেজন্য ধন্যবাদ জানান সুনাক। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা সেকথা উল্লেখ করে সুনাক বলেন, মুল্যস্ফীতিকে সরকারের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রায় নিয়ে এসেছেন তিনি। মর্টগেজের হার কমে আসছে এবং প্রবৃদ্ধিও ফিরে এসেছে। ভাষণে নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে চলা লেবার নেতা কিয়ার স্টারমারেরও প্রশংসা করেছেন সুনাক। তিনি বলেন, লেবার পার্টি প্রতিপক্ষ হিসাবে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু দলের নেতা স্টারমার একজন ভদ্র, জনহিতৈষী মানুষ। আমি তাকে সম্মান করি। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের ৬৫০টি আসনের মধ্যে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন অন্তত ৩২৬টি। সেখানে ৬৩৫টি আসনের ঘোষিত ফলাফলে এবার ৪১০টি জিতে নিয়ে নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে মধ্য বামপন্থি দল লেবার পার্টি সরকার গঠন করতে চলেছে। সুনাক বলেন, টোরিকে এখন দল পুনর্গঠন করে বিরোধীদলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে। ভাষণ শেষেই গাড়িতে করে ডাউনিং স্ট্রিট ছাড়েন তিনি। এ সময় যুক্তরাজ্যকে বিশ্বের সবচেয়ে সেরা দেশ বলে সুনাক মন্তব্য করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত