ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দাবার বোর্ডেই প্রাণ হারালেন গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়া

দাবার বোর্ডেই প্রাণ হারালেন গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়া

জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের ১২তম রাউন্ড চলছিল। গ্র্যন্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীবের বিপক্ষে ভালো পজিশনেই ছিলেন আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান। হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যান তিনি। এরপর দ্রুত তাকে শাহবাগের ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম জিয়ার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের মৃত্যুতে দেশের দাবার অপুরণীয় ক্ষতি হলো। দেশে-বিদেশে তিনি বাংলাদেশের দাবাকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তার কারণে আমরা সম্মানিত হয়েছি।’ সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম জিয়ার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়ে তার পরিবারের প্রতি গভির সমবেদনা প্রকাশ করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, জিয়া হার্ট অ্যাটাক করেছেন।

এর আগে গতকাল শুক্রবার বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটে খেলার সময় মাথা ঘুরে পড়ে যান তিনি। পাঁচ মিনিটের মধ্যে দাবা ফেডারেশনের তৃতীয় তলা থেকে নামিয়ে তাকে গ্র্যান্ডমাস্টার রাজীবের গাড়িতে উঠানো হয়। দশ মিনিটের মধ্যেই ইব্রাহিম কার্ডিয়াকে পৌঁছায় গাড়ি। জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তার পালস পাননি। সাধারণত ৫ মিনিট অপেক্ষা করা হলেও জিয়ার জন্য চিকিৎসকরা ২০ মিনিট চেষ্টা করেছেন। চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে আর নেই বললেও, তার স্ত্রী তাসমিন সুলতানা লাবণ্য অশান্ত হয়ে পড়েন ও অন্য হাসপাতালে নেয়ার উদ্যোগ নেন। ফেডারেশন ও দাবাড়ুরা তাকে কয়েক দফা বোঝান। এক ঘণ্টা পর তিনি ও তার পরিবার আশ্বস্ত হলে ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মারা গেছেন জিয়া। সেই খবরে হাসপাতালে অনেক উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করা স্ত্রী লাবণ্য, সন্তান তাহসিন তাজওয়ারসহ অন্যান্য তারকা দাবাড়ুরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। উল্লেখ্য, ১৯৭৪ সালে জন্ম নেয়া জিয়া ১৯৯৩ সালে ইন্টারন্যাশনাল আর ২০০২ সালে দেশের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টারের খেতাব অর্জন করেন। বাংলাদেশি দাবাড়ুদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৫ শো ৭০ ফিদে রেটিংও তার। ১৯৮৮ সালে প্রথমবার জাতীয় দাবায় চ্যাম্পিয়ন হন জিয়াউর রহমান। টুর্নামেন্টে রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নও তিনি। যেখানে বাকি চার গ্র্যান্ডমাস্টার সম্মিলিতভাবে জিতেছেন ১৬ বার।

জাতীয় দাবায় এবারো সন্তান তাহসীন তাজওয়ারকে নিয়ে অংশ নিয়েছিলেন জিয়া। উৎসাহ যোগাতে বরাবরের মতো এদিনও ফেডারেশনে এসেছিলেন স্ত্রী লাবন্য। প্রিয় দুই মানুষের সামনেই তিনি চলে গেলেন চিরতরে। দেশ হারালো প্রথম কোনো গ্র্যান্ডমাস্টারকে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত