বন্যা আক্রান্ত ১৫ জেলা
ক্ষতিগ্রস্ত ২০ লাখ মানুষ
প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং দেশের মধ্যে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে চলমান বন্যায় দেশের ১৫ জেলা আক্রান্ত এবং প্রায় ২০ লাখ মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। গতকাল শনিবার সচিবালয়ে সাম্প্রতিক উজান থেকে নেমে আসা পানি এবং ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান। সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, রংপুর, জামালপুর, গাইবান্ধা, ফেনী, রাঙামাটি, বগুড়া, কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, লালমনিরহাট ও কক্সবাজার জেলা বন্যা আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
মহিবুবর রহমান আরো জানান, বন্যা আক্রান্ত ১৫ জেলায় এ পর্যন্ত নগদ ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা, ৮ হাজার ৭০০ টন ত্রাণের চাল, ৫৮ হাজার ৫০০ বস্তা শুকনো ব্যাগও অন্যান্য খাবার, শিশু খাদ্য কেনার জন্য ৬০ লাখ টাকা এবং গো-খাদ্য কেনার জন্য ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিনই বন্যা বিস্তৃতি লাভ করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মহিববুর রহমান বলেন, পুরো ১৫ জেলায় মানুষ পানিবন্দি নয়। কোনো কোনো জেলা আংশিকভাবে বন্যাকবলিত। এখন পর্যন্ত আমাদের আশ্রয়কেন্দ্রে ৩৬ হাজার ২২৩ জন আশ্রয় নিয়েছেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এ বন্যায় এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২০ লাখ মানুষ। কেউ মারা যায়নি। এর মধ্যেই পানিবন্দি মানুষ রয়েছেন। প্রতিদিনই মানুষ অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে।
বন্যা আক্রান্ত অঞ্চল নিয়ে সরকার কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, বন্যা ভবিষ্যতে আরো বিস্তৃতি লাভ করলে সেই জায়গাগুলোকেও আমরা এড্রেস করব।
বন্যার কারণে দক্ষিণ দিকেও প্লাবিত হতে পারে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী মাস (আগস্ট) কিংবা তার পরের মাসেও (সেপ্টেম্বর) এ রকম আরেকটা বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী বন্যার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। সবার সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা কাজ করছি। তারপরও বিভিন্ন সময় পত্রিকায় দেখি, কোনো কোনো জায়গায় খাদ্য পায়নি। এজন্য আমরা জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলব।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে সংসদ সদস্য, ডিসি, ইউএনও-যখন যেটা চাচ্ছে, আমরা দিচ্ছি। ?তারপরও গ্যাপ থাকার কোনো কারণ নেই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা মনে করি বন্যাদুর্গত এলাকায় যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা পর্যাপ্ত।
টাঙ্গাইল এবং সিরাজগঞ্জের বন্যা সরেজমিন দেখতে আজ রোববার সেখানে যাবেন বলেও জানান মহিববুর রহমান।
সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত : যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যমুনা নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় ২ বন্ধুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে যমুনার পানি বিপৎসীমার ৬২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে যমুনার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল বন্যাকবলিত হয়েছে এবং আরো নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের বহু পরিবার। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের শাহজাদুপর উপজেলার পোতাজিয়া স্লুইস গেট থেকে ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে ৯ জন বন্ধু যমুনা নদীতে বন্যার দৃশ্য দেখতে যায়। এ সময় জদুর জোলা নামক স্থানে প্রচণ্ড ঝড় বৃষ্টিতে নৌকা ডুবে যায় এবং ৭ জন সাঁতরিয়ে পাড়ে উঠলেও দুই বন্ধুর পানিতে ডুবে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। তারা হলো, শাহজাদপুর পৌর এলাকার দ্বারিয়ারপুর মহল্লার শাহ আলমের ছেলে সজল ও একই মহল্লার তহিদ আলমের ছেলে সন্ময়। শাহজাদপুর থানার ওসি সবুজ রানা এ তথ্য নিশ্চিত করে আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে।
এদিকে পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে যমুনার পানি দ্রুত বাড়ছে এবং নিম্নাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন ঘটেছে। নদীর তীরবর্তী বেলকুচি, শাহজাদপুর, চৌহালী, কাজিপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে ভাঙন শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই ভাঙন এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে এবং বহু পরিবার ভাঙন ও বন্যায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। এছাড়া যমুনার শাখা নদীসহ বিভিন্ন খাল বিলে পানিতে ভরে উঠেছে। অনেক পরিবার বন্যা ও ভাঙনের কারণে অনত্র আশ্রয় নিচ্ছে। বিশেষ করে শাহজাদপুর, কাজিপুর ও চৌহালী উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অবনতির সৃষ্টি হচ্ছে এবং যমুনার তীরবর্তী ওই ৫টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বহু পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে এবং তিল কাউন পাটসহ বিভিন্ন ফসল ডুবে গেছে।
জেলা প্রশাসনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলছেন, নদীর তীরবর্তী ৫টি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের প্রায় আড়াই হাজার পরিবার এখন পানিবন্দি। তবে এখনো ভয়াবহ আকার ধারণ করেনি এবং যমুনায় বেড়াতে গিয়ে নৌকাডুবির ঘটনায় ওই ২ বন্ধুর মৃত্যু হয়েছে।
বর্তমানে যমুনার পানি এখন বিপৎসীমার ৬২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং বিভিন্ন স্থানে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। অবশ্য স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার উপরে : উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার প্রধান নদী দুধকুমারের পানি বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে নদী অববাহিকার চর ও ডুবোচরে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় সহস্রাধিক পরিবার।
রাস্তা ঘাট তলিয়ে যোগাযোগ ব?্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)-এর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি বৃদ্ধির ফলে এসব নদীর তীরবর্তী নিচু অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। চরাঞ্চলে পানি ওঠার ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব চরাঞ্চলের বাসিন্দারা। এছাড়া এসব এলাকার অন্তত ১০টি প্রাথমিক বিদ?্যালয়ে বন?্যার পানি ঢুকে পড়েছে।
দুধকুমার নদীর অববাহিকার তিলাই ইউনিয়নের ২, ৩, ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ তিলাই ও দক্ষিণছাট গোপালপুর গ্রামের তিন শতাধিক বাড়ি ঘরে পানি ঢুকেছে। ৪ নং ওয়ার্ডের রাস্তাটি ভেঙে যোগাযোগ ব?্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
পাইকেরছড়া ইউনিয়নের ছিটপাইকের ছড়া ও পাইক ডাঙ্গা, সোনাহাট ইউনিয়নের চরবলদিয়া, চর শতিপুরি, চর-ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর ও আন্ধারিঝাড় ইউনিয়নের চর বাড়ুইটারী, চরধাউরারখুটিসহ বেশকিছু চরাঞ্চল তলিয়ে গেছে।
দুধকুমার নদী পাড়ের বাসিন্দা আলা উদ্দিন, আজাদ মিয়া, হাসিনা বানু ও কামাল জানান, বাড়িতে পানি ওঠেছে, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি নিয়ে বিপদে আছি।
তিলাই ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান জানান, আমার ইউনিয়নের ৪টি ওয়ার্ডের প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গতকাল শনিবার পর্যন্ত কোনো ত্রাণ বরাদ্দ পাইনি।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম ফেরদৌস জানান, জেলা প্রশাসন থেকে বন?্যার জরুরি ত্রাণ সহায়তা হিসাবে নগদ ১ লাখ টাকা ও ১৩ মে.টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার চারটি ইউনিয়নে ত্রাণ বিতরণ চলছে। ইউপি চেয়ারম্যানকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা দিতে বলা হয়েছে। বন?্যা মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে।
ফুলপুরে বন্যায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত : প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ফুলপুরের নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে উপজেলার ছনধরা, সিংহেশ্বর, ফুলপুর ইউনিয়নের অধিকাংশসহ অন্যান্য ইউনিয়নের আংশিক তলিয়ে অনেক পরিবার গৃহবন্ধি অবস্থায় রয়েছেন। এছাড়া পৌর সদরসহ অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতায় জনদুর্ভোগ চলছে।
হাতীবান্ধায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে, নিম্নাঞ্চলে পানি : ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় তিস্তা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। গতকাল শনিবার দুপুরে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৫ মিটার। যা বিপৎসীমার মাত্র ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।
পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তার চরাঞ্চলগুলোর ঘরবাড়ি পানি উঠতে শুরু করেছে। নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষজন বন্যা ও নদীভাঙন আতঙ্কে পড়েছেন। এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৮-১০টি চর ও পার্শ¦বর্তী কালীগঞ্জ, আদিতমারী উপজেলার ১০-১৫টি চর এলাকায় পানি উঠতে পারে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বলেন, গতকাল শনিবার সকাল থেকে পানি বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।
লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই : লালমনিরহাটের তিস্তার নদীর পানি টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলের কারণে ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। এতে তিস্তা-ধরলা নদী তীরবর্তী এলাকার ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে তিস্তার বাঁধ। এ অবস্থায় নদীপাড়ের মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। পানি নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষ ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। এতে জেলার ৫ উপজেলায় কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। অপরদিকে ধরলার শিমুলবাড়ী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার নিচে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে।
পাউবো বলছে, পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করার কারণে লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে নদীপাড়ের মানুষ। পাশাপাশি গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি নিয়ে বিপদে আছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।
তিস্তায় পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, নিজ গড্ডিমারী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, চর সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, কালমাটি, রাজপুর, গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করায় আবারো বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিস্তা পাড়ের জাফর উদ্দিন বলেন, গত দুইদিন ধরে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে। রাস্তাঘাটে চলাচল করতে কষ্ট হচ্ছে। গরু, ছাগল নিয়ে আমরা বিপদে আছি বলেও জানান এ ভুক্তভোগী। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, উজানের ঢলে আবারো তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে সকাল থেকে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। লালমনিরহাটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, তিস্তার পানি ২৪ ঘণ্টাই বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি।