ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কোটাবিরোধী আন্দোলন

কোটাবিরোধী আন্দোলনে ‘বিএনপি ভর করেছে’

বললেন কাদের
কোটাবিরোধী আন্দোলনে ‘বিএনপি ভর করেছে’

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের চলমান আন্দোলেন বিএনপিও ‘অংশ নিচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। জনদুর্ভোগ তৈরি করা কর্মসূচি পরিহার করতেও আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। কাদের বলেন, ‘প্রকাশ্যেই বিএনপি ও তার সমমনারা কোটা আন্দোলনের উপর ভর করেছে। তারা প্রকাশ্যে সাপোর্ট করেছে, এর মানে তারা এর মধ্যে অংশগ্রহণও করছে। কাদের বলেন, কাজেই এখন এটা পোলারাইজড পলিটিক্সের মধ্যেই পড়ে গেছে। এটার পলিটিক্যাল কালার আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। গতকাল সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীদের চলমান আন্দোলেন বিএনপিও ‘অংশ নিচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। জনদুর্ভোগ তৈরি করা কর্মসূচি পরিহার করতেও আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। কাদের বলেন, ‘প্রকাশ্যেই বিএনপি ও তার সমমনারা কোটা আন্দোলনের উপর ভর করেছে। তারা প্রকাশ্যে সাপোর্ট করেছে, এর মানে তারা এর মধ্যে অংশগ্রহণও করছে। কাজেই এখন এটা পোলারাইজড পলিটিক্সের মধ্যেই পড়ে গেছে। এটার পলিটিক্যাল কালার আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।’

এই আন্দোলনে কারা কারা যুক্ত আছেন এবং এটি ষড়যন্ত্রের কোনো অংশ কী না, সেটি আন্দোলনের গতিধারা লক্ষ্য করলেই স্পষ্ট হবে বলে মনে করেন কাদের। সময়ের পরিবর্তনে সবকিছুই স্পষ্ট হয়ে যাবে। কোনো কিছুই লুকানো সম্ভব হবে না, সেটা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। গতকাল দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কাদের কথা বলছিলেন। ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ চার দফা দাবি নিয়ে গত ১ জুলাই থেকে এই আন্দোলন চলছে। ওই দিন থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের একটি দল ঢাকার শাহবাগের মোড়ে আন্দোলন করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং ছাত্র ধর্মঘটও পালন করছেন কোটাবিরোধীরা। চলমান আন্দোলনের মধ্যে রোববার ঢাকার শাহবাগ, সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়, নীলক্ষেত, বাংলামটর, কারওয়ানবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ সাতটি মোড় প্রায় পাঁচঘণ্টা অবরোধ করে পূর্বঘোষিত ‘বাংলা ব্লকেড’ পালন করেন আন্দোলনকারীরা। দীর্ঘ সময় ধরে রাস্তা আটকে রেখে কর্মসূচি পালনের ফলে বিভিন্ন রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কোথাও কোথাও ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। অফিস এবং কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয় নগরবাসীকে। সোমবার বিকালেও একই কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় নামার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে আন্দোলনকারীরা।

যে কোনো আন্দোলনেই যে কোনো রাজনৈতিক দদল সমর্থন জানাতে পারে, তাহলে সমালোচনা কেন? ধানমন্ডিতে সংবাদ সম্মেলনে এই প্রশ্নের উত্তরে কাদের বলেন, ‘আদালতের বিরুদ্ধে আন্দোলনে পৃথিবীর কোন দেশে কোন রাজনৈতিক দল সম্পৃক্ত হয়, সেটা দেখান? এটা বিচারাধীন। কোন রাজনৈতিক দল পারে না এইভাবে। এটা তো আদালতের রায়।’

বিএনপির সমালোচনা করে কাদের বলেন, ‘তারা যে আন্দোলনটা করছে সেই সিদ্ধান্ত ছিল সরকারের। সরকারই সেই আপিল করেছে। যে বিষয়টা আদালতের, সেই বিষয়টা নিয়ে কথা বলা, সমালোচনা করা বা প্রতিবাদ করা এটা তো আইনসিদ্ধ নয়।’ কোটা আন্দোলন নিয়ে করা আরেক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা আপিল করলাম, এখনো আদালত চূড়ান্ত রায় দেয়নি। এখানে আমরা কীভাবে ইন্টারফেয়ার করি? আমরা বলছি জনদুর্ভোগ হয় এমন আন্দোলন পরিহার করা উচিত। আদালতের রায় হোক তারপর দেখা যাবে।”

সর্বজনীন পেনশনে ‘প্রত্যয় স্কিম’ নিয়ে শিক্ষকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘স্কিম মুখ থুবড়ে পড়বে কেন? এখানে ভুল বোঝাবুঝি থাকতে পারে। তাদের সঙ্গে (শিক্ষক নেতা) আমাদের যোগাযোগও আছে। আনুষ্ঠানিক বসাবসি হয়ত হয়নি। সিদ্ধান্ত নিতে হবে বাস্তব পরিস্থিতির আলোকে। ‘এখানে আমরা (সরকার) সুপিরিয়র না শিক্ষক সুপিরিয়র সে বিতর্কে আমরা যাব না। যার যার পদমর্যাদার ভিত্তিতে যেটা বাস্তবসম্মত আমরা সেটাই করতে চাই।’

প্রত্যয় স্কিম বাতিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরুর পর গত বুধবার খবর আসে আন্দোলনরত শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন কাদের। কিন্তু পরে বৈঠকটি স্থগিত হয়। কবে নাগাদ এই বৈঠক হতে পারে, সে ব্যাপারেও সরকারের দিক থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো সময় জানানো হয়নি শিক্ষক নেতাদের।

গত মার্চ মাসে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে আগের চারটি স্কিমের সঙ্গে ‘প্রত্যয় স্কিম’ নামের একটি প্যাকেজ চালু করে অর্থ মন্ত্রণালয়।

তাতে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন সব ধরনের স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীনস্থ অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোতে ২০২৪ সালের ১ জুলাই পরবর্তী সময়ে যোগ দেওয়া কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা।

শিক্ষক সমিতির অভিযোগ, এ স্কিম ‘বৈষম্যমূলক’। এতে ১ জুলাই এবং এর পরে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত